জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তরা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে যতই ভিন্নমত থাকুক, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সব দল ঐক্যবদ্ধ। মানবতাবিরোধী অপরাধে দল হিসেবে আইসিটি আইনে আওয়ামী লীগের বিচার করা যাবে। ফ্যাসিস্টের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরও আইনের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে।  

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বিএফডিসি মিলনায়তনে জুলাই আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে ছায়া সংসদ ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অ্যাটর্নি জেনারেল। ছায়া সংসদে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। 

অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন তাদের অবশ্যই জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, উপসচিব রোকেয়া পারবীন জুই, উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড.

এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক হাসান জাবেন ও আহমেদ সারওয়ার ভুইয়া। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়। 

সারা দেশে মব সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, মব সন্ত্রাস যেটা হচ্ছে এটা এক ধরনের ক্রোধ। এটা বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা নয়। বরং গত ১৭ বছরের জমে থাকা ক্রোধ। তবে এই ক্রোধ সমীচীন নয়। স্বজন হারানোর ক্রোধ, গুম করার ক্রোধ, মিথ্যা গায়েবি মামলার ক্রোধ। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা ক্রোধ করছে তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া দরকার। 

নতুন সংবিধান লেখা সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, নতুন করে সংবিধান লেখা যেতেই পারে। লিখতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধে রক্তের বিনিময়ে লেখা ৭২-এর সংবিধান। আমি বিশ্বাস করি, এটি এখনও বিশ্বের ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট কনস্টিটিয়েশন। গত ১৫ বছরে সংবিধান অনেক কাটছাঁট করা হয়েছে। বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাদ দিয়ে এটি আরও যুগোপযোগী করা সম্ভব। 

নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠবে কিনা, সেটা সরকারের পলিসির বিষয় উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান বলেন, এই নিষিদ্ধ সত্ত্বাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা সহযোগিতা করছেন, তারাও অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবেন। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আবু সাঈদ কোনো রাজনৈতিক দলের না। জুলাইয়ের শহীদরা কোনো রাজনীতির কেউ না। তারা স্বৈরাচার আমলের ভুক্তভোগী হয়ে রাস্তায় নেমেছিল। তারা সবাই নাগরিক প্রতিনিধি। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা সুশাসন। দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই এর প্রধান লক্ষ্য। ফ্যাসিস্টরা যেন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। জুলাই চেতনা বাস্তবায়নে সরকার ও জনগণকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। এ আন্দোলনের প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ড  শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে দেশের মালিক জনগণ। জনগণকে বঞ্চিত করে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন র জন ত অপর ধ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে এখন রাজনৈতিক দলের অভাব নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “দেশে এখন রাজনৈতিক দলের অভাব নেই। নতুন করে অনেক রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব হয়েছে। তারা কেউ কেউ নির্বাচন চায়, আবার কেউ বলে হাসিনার বিচার হওয়ার আগ পযন্ত নির্বাচন হতে দেবে না। এমনও কথা মাঝে মাঝে শুনি।” 

শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে চুনকুটিয়া গালস স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে সংস্কার ও দ্রুত সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “নির্বাচন নিয়ে জনগণের সঙ্গে কোনো প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। রাজনীতি করেন, রাজীনীতি করার অধিকার সবার আছে। কারণ দেশটা সবাই মিলে স্বাধীন করেছে। এই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব সবার। সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” 

আরো পড়ুন:

খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে তৈরি হচ্ছে রাজকীয় চেয়ার

দুই বছর ধরে নেতৃত্বহীন বরগুনা জেলা বিএনপি

 

তিনি বলেন, “দুই একটি রাজনৈতিক দল সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। দেশের মানুষ ১৬ বছর ভোট দিতে পারেনি। দ্রুত সব সংস্কার শেষ করে ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।” 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “দেশের মানুষ স্বৈরাচার হাসিনা থেকে মুক্তি পেয়েছে। তবে, তাদের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার ফিরে পায়নি। জনগণ চায় তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে।”

তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর হামলা, মামলা দিয়ে বিএনপির লোকজনকে হয়রানি করে বাসায় ঘুমাতে দেওয়া হয়নি। শত হামলা, মামলা মাথায় নিয়ে রাজপথে ছিলাম জনগণের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য। এখন সময় এসেছে, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার।” 

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সামা ওবায়েদ, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক, আজিজুল বারি হেলাল, বিএনপির প্রবীণ নেতা নাজিম উদ্দিন, ঢাকা জেলা বিএনপি সাবেক সহ-সভাপতি সুলতান নাসের।

ঢাকা/শিপন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এরদোয়ানের কপাল খুলে দিতে পারে
  • সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাইছে চরের দল: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • দেশে এখন রাজনৈতিক দলের অভাব নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • এ দেশের মানুষ আর কত জীবন দেবে, কত লড়াই করবে: নজরুল ইসলাম
  • ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না: অ্যাটর্নি জেনারেল  
  • আইনে অস্পষ্টতার সুযোগে জনগণের ওপর নিপীড়ন চলে: নজরুল ইসলাম খান
  • জনগণের দাবি, একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন : গিয়াসউদ্দিন
  • ‘নির্বাচন হলেই তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন’
  • জুলাই ঘোষণা, জুলাই সনদ এবং গণমাধ্যম