ছোটবেলায় সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হন লি চুয়াঙ্গি। এতে তাঁর দৃষ্টিশক্তি, কথা বলা ও শেখা এবং পেশি নড়াচড়ার সমস্যাসহ নানা অসুবিধা দেখা যায়। কঠিন এই রোগের সঙ্গে ১৬ বছর পর্যন্ত লড়াই চলে তাঁর। এরপর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ২৫ বছর বয়সে ভর্তি হন মেডিকেল কলেজে। শারীরিক অক্ষমতা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। কঠিন অধ্যবসায় দিয়ে স্বপ্নকে জয় করেন। দীর্ঘ লড়াই–সংগ্রাম শেষে চিকিৎসক হন। তাঁর বয়স এখন ৩৭ বছর।

চীনের ইউনান প্রদেশে নিজেই একটি ছোট ক্লিনিক চালু করেছেন।

এক বছর বয়সে লি সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হন। মা–বাবা তাঁর চিকিৎসার পেছনে পরিবারের সব সঞ্চয় ব্যয় করেন। ৯ বছর বয়সে একটি অস্ত্রোপচার ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, পরিবারের বোঝা হয়ে থাকতে চান না। তিনি চাকরি খোঁজার চেষ্টা করেন। এক ব্যক্তি তাঁকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর উদ্দেশ্য ছিল খারাপ। তিনি প্রতিবন্ধী শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়াতে বাধ্য করেন। এরপর উপার্জিত অর্থ নিজে নিয়ে নেন।

৯ থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত ওই ব্যক্তি লি–কে সড়কে ভিক্ষা করতে বাধ্য করেন। বিনিময়ে প্রতি মাসে মাত্র ১০০ ইউয়ান কপালে জোটে তাঁর। তবে ১৬ বছর বয়সে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কারণ, ওই ব্যক্তি মনে করেছিলেন, লি বড় হয়ে যাওয়ায় তিনি মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে পারবেন না।

একদিন লি বুঝতে পারেন, তিনি সম্পূর্ণ নিরক্ষর। পত্রিকাও পড়তে পারেন না। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, লেখাপড়া করে জীবনে পরিবর্তন আনবেন। এরপর লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৩ সালে ২৫ বছর বয়সে একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। একনিষ্ঠতার সঙ্গে পড়াশোনা করে ২০১৬ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।

চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রতি নিবেদিত লি নিজেকে সেরিব্রাল পালসির একটি কেস স্টাডি হিসেবে সহপাঠীদের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করেন। ২০১৯ সালে ৩১ বছর বয়সে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর লি একটি মেডিকেল কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। তবে কয়েক মাস পর তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও লি হেনান প্রদেশের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পান। পাশাপাশি মেডিকেলে নিবন্ধন পেতে পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকেন।

লি বলেন, তিনি বড় কোনো হাসপাতালে কাজ করার আশা করেন না। তবে একটি ছোট ক্লিনিকে প্রতিবেশীদের সেবা দিতে পেরে তিনি খুশি। এরপর তিনি ইউনান প্রদেশে চলে যান এবং সেখানে নিজের একটি ক্লিনিক চালু করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর বয়স র বয়স

এছাড়াও পড়ুন:

এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের

শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো একাত্মতা জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ। 

বুধবার সাধারণ সভা করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে জড়ো হন। এরপর আধা ঘণ্টা তারা উপাচার্যের কক্ষে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শিক্ষকরা দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের বারান্দায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। 

এ কর্মসূচি শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, নতুন উপাচার্য যোগদানের পর শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য আমরা ৭ কার্যদিবস সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে পারেননি। শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি কার্যকর হয়নি। 

তিনি বলেন, আমরা ২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাইনি। তিনি দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছেন। আমরা উপাচার্যের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না। এর দায়ভার উপাচার্যকেই নিতে হবে। তিনি কবে ক্যাম্পাসে ফিরবেন শিক্ষকরা কেউ তা জানেন না। 

ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছি বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে হবে। তা না হলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। এটা যদি এমন হয় যে উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ক্লাসে ফিরতে পারব না, তাহলে আমাদের ১ দফা দাবি জানাতে হবে। উপাচার্য দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা এই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর দুপুর ১টায় সাধারণ সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, উপাচার্য বুধবার দুপুর ১টার মধ্যে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন না করলে তার অপসারণের এক দফা দাবিতে ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামবেন।

এদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ সেখানে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, নতুন করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। আগের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তারা একমত। তবে নিরাপরাধ কেউ যেন সাজা না পায়। তারা দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে চান।

তবে গত ৩ মাস ধরে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা গত ২ দিন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। তারা আপাতত চুপচাপ রয়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এ অবস্থায় সেশনজট বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। শুরু হয়নি নতুন ব্যাচের ক্লাসও। ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১৬ দিনেও ক্লাসে ফেরেনি শিক্ষকরা। এছাড়া ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকেও বিরত রয়েছেন শিক্ষকরা।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে স্টারলিংকের পার্টনার কারা, গ্রাহক হবেন কীভাবে
  • পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ কবে, কখন
  • নুসরাতের সঙ্গে সংসার ভাঙার গুঞ্জন, নীরবতা ভাঙলেন যশ
  • ইশরাককে শপথ না পড়ানোর রিট আবেদনের আদেশ আবারো পেছাল
  • রাজনীতিতে ব্যয় কমাবেন ইলন মাস্ক, থাকবেন টেসলার দায়িত্বে
  • সারাদিন সুস্থ থাকতে সকালে যে সাতটি কাজ করতে পারেন
  • চাকসু নীতিমালা প্রকাশ হবে বৃহস্পতিবার
  • অবৈধ আর্থিক লেনদেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাময়িক বরখাস্ত
  • এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের