গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জমেছে বৃষ্টির পানি, যানজটে দুর্ভোগ
Published: 22nd, May 2025 GMT
গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় যানজট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকান ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ড্রেনেজ–ব্যবস্থা সচল না থাকায় পানি নিষ্কাশনও বাধা পাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিআরটিএ প্রকল্পের উন্নয়নকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসংলগ্ন এসব এলাকায় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। তার ওপর মহাসড়কে জল জমে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। কোথাও কোথাও থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগড়া এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে বেশ কয়েকটি যানবাহন বিকল হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। জলমগ্ন পথে হাঁটাচলা যেমন কঠিন হয়ে পড়েছে, তেমন যানবাহন গর্তে আটকে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। জলাবদ্ধতার প্রভাবে আশপাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোগরখাল এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে এখনই জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। এর জন্য অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধ করার পাশাপাশি ড্রেনেজ–ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি।
চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় কথা হয় বাসচালক হায়দার আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাওয়ায় মহাসড়কটির দুটি লেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
ভোগড়া এলাকার বাসিন্দা ও কারখানার শ্রমিক হাবিবুর রহমান জানান, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি, উঠানে পানি উইঠ্যা গেছে। রান্নাঘরেও পানি জমে আছে, এ জন্য সকালে রান্নাবান্না হয়নি। এখন হোটেলে খেয়ে কাজে যাচ্ছি।’ নাসরিন আক্তার নামের আরেক কারখানাশ্রমিক জানান, তিনি সাধারণত পায়ে হেঁটে কারখানায় যান। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সড়কগুলোয় পানি জমে আছে। তাই ভিজে ভিজেই কাজে যেতে হচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল লতিফ জানান, মোগরখাল দখল হওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি সরে যেতে সময় লাগছে। এতে করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। দখল হওয়া মোগরখাল উদ্ধার করতে কাজ করা হচ্ছে।
একই কথা জানান গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কের চান্দনা ও ভোগড়া এলাকার পানি মোগরখাল দিয়ে সরে যেত। সেই খাল বর্তমানে দখল করে সংকুচিত করে ফেলেছেন স্থানীয় লোকজন। ড্রেন পরিষ্কার করা হলেও খালটি বড় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই পানি সরে যেতে সময় লাগছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম গরখ ল এল ক য় য নজট ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ছাগল বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ, পরে সেপটিক ট্যাংকে মিলল মরদেহ
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নারী ছাগল বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রযুক্তির সহায়তায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে নিখোঁজ নারীর মুঠোফোন।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারীর নাম সুফিয়া খাতুন (৩৪)। তিনি ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের পাতিলগাঁও গ্রামের কেরামত আলীর মেয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের দাদরা গ্রামের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, দাদরা গ্রামের ফরিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে দুর্গন্ধ পেয়ে তাঁরা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ওই নারীর ছোট ভাই মো. ইলিয়াছ ২ জুলাই ফুলপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তারাকান্দায় মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তিনি থানায় গিয়ে পরনের কাপড় দেখে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে তারাকান্দা থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে আজ শুক্রবার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওই নারীর স্বজনেরা জানান, গত রোববার বিকেলে সুফিয়া খাতুন ছাগল বিক্রি করতে ফুলপুর উপজেলার আমুয়াকান্দা বাজারে যান। চার হাজার টাকায় ছাগল বিক্রির পর মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপর তিনি দ্বিতীয় স্বামী রইছ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর স্বামী ফুলপুর উপজেলার পাগলা এলাকার বাসিন্দা এবং আমুয়াকান্দার একটি মাদ্রাসায় বাবুর্চির কাজ করেন। রইছ উদ্দিন তাঁকে রাতের খাবার খাইয়ে রাত আটটার দিকে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে তুলে দেন। এরপর সুফিয়া খাতুন এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরবেন বলে জানান। এর পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
নিহত সুফিয়া খাতুনের আগের স্বামীর সংসারে ১২ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান আছে।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, ওই নারীর মুঠোফোনটি পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই মুঠোফোনের সূত্র ধরে রোহন মিয়া (৩৫) নামের একজনকে আটক করা হয়। তিনি দাদরা গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে। যেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়, তার পাশেই রোহনের বাড়ি।
ওসি আরও বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে হলেও স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থাকায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন ওই নারী।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে ফেলা হয় বলে আমাদের ধারণা। আটক হওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে নারীর মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। ভিন্ন সিম লাগিয়ে ফোনটি ব্যবহার করছিলেন তিনি। কারা, কীভাবে, কী কারণে ওই নারীকে হত্যা করেছে, তা জানতে আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’