টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকবাহী হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি
Published: 23rd, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতি রোধকল্পে পর্যটকবাহী হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
রবিবার (২২ জুন) রাতে জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্বরত) মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এ আদেশ জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকার প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতি রোধকল্পে টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার ও আপপাশের এলাকায় পর্যটকবাহী হাউস বোটসমূহের গমনাগমন পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান না করা পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হলো। একই সাথে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর যাবতীয় কার্যকলাপ থেকে সকলকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট ভ্রমণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন হতে বিভিন্ন সময়ে জারিকৃত নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগের দিন (শনিবার ২১ জুন) হাওরের জীববৈচিত্র রক্ষায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে ১৩টি করণীয় ও বর্জনীয় নির্দেশনা সংবলিত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়।
যেখানে পর্যটকদের বর্জনীয় নির্দেশনাগুলো হলো- উচ্চ শব্দে গান-বাজনা করা/শোনা যাবে না, হাওরের পানিতে অজৈব বা প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য/বর্জ্য ফেলা যাবে না, মাছ ধরা, শিকার বা পাখির ডিম সংগ্রহ করা যাবে না, পাখিদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে কোন ধরণের বিঘ্ন ঘটানো যাবে না, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু বা রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না, গাছ কাটা, গাছের ডাল ভাঙ্গা বা বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা যাবে না, কোর জোন বা সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না, মনুষ্য সৃষ্ট জৈব বর্জ্য হাওরে ফেলা যাবে না।
এছাড়াও পর্যটকদের আবশ্যক পালনীয় নির্দেশনাগুলো হলো- জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত নৌপথ ব্যবহার করুন, লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন, প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার হতে বিরত থাকুন, দূর থেকে পাখি ও প্রাণী পর্যবেক্ষণ করুন- ফ্ল্যাশ ছাড়া ছবি তুলুন, স্থানীয় গাইড ও পরিষেবা গ্রহণ করুন, ক্যাম্পফায়ার বা আগুন জ্বালানো থেকে বিরত থাকুন।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলাধীন ১০টি মৌজা জুড়ে ছোট-বড় ১০৯টি বিলের সমন্বয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান। মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকার আয়তন প্রায় ১২৬৫৫.
ঢাকা/মনোয়ার/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ঙ গ য় র হ ওর স ন মগঞ জ র জন য র এল ক পর ব শ হ ওর র
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘমুক্ত আকাশে উঁকি দিল কাঞ্চনজঙ্ঘা
টানা কয়েকদিন ধরে মেঘলা ছিল আকাশ। আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। ভোর থেকেই স্বচ্ছ নীল আকাশ। এর মধ্যেই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দিগন্ত জোড়া সাদা রূপালি চূড়া যেন নতুন দিনের সৌন্দর্যে যোগ করেছে অন্য রকম আবেশ। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল থেকেই মানুষ ভিড় করছেন তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এলাকাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করছেন, ক্যামেরা বন্দি করেছেন মুহূর্তটিকে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা ঘিরে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রতি বছর পর্যটকের আগমন ঘটে। বিনা পাসপোর্টে ভারত-নেপালে না গিয়েই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ায় পর্যটন অঞ্চল হিসেবে সমৃদ্ধ হয়েছে তেঁতুলিয়া। এই এলাকার পর্যটন স্পট ডাকবাংলোর পিকনিক কর্ণার ও মহানন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয়ের পূর্বাংশে নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার (২৮ হাজার ১৬৯ ফুট), যা এভারেস্ট ও কে-টু’র পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়টি পর্যটকদের কাছে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। ইতোমধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা বুকিং দিচ্ছেন হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে।
স্থানীয় সাংবাদিক মোবারক হোসেন বলেন, “কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতটি বাংলাদেশের একমাত্র পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এলে পরিষ্কার দেখা যায়। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্বতটি পরিষ্কার দেখা যায়। ছবির মতো ভেসে ওঠা শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য। ছাড়াও দেখা মেলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চল।”
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে আকাশে মেঘ ছিল। আজ সকালে উত্তরাঞ্চলে ঠান্ডা হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে, বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। এই অবস্থায় তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা সম্ভব হয়েছে।”
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, “তেঁতুলিয়া একটি পর্যটন এলাকা। এখানে খুব কাছ থেকে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। পর্যটকদের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন- এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক সচেষ্ট আছি।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ