কৃষি কর্মকর্তাকে বাঁশ দিয়ে পেটালেন সাবেক বিএনপি নেতা ও তার ছেলে
Published: 23rd, June 2025 GMT
বরিশালের হিজলা উপজেলায় কৃষি অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাত ৯টার দিকে উপজেলার টেকেরবাজার বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী রাতেই হিজলা থানায় মামলা করেন।
হামলার শিকার ফখরুল ইসলাম উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা। তার ওপর হামলায় নেতৃত্ব দেন হিজলা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক গিয়াস দেওয়ান (৫০) ও তার ছেলে হিজলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জিসান।
ফখরুল ইসলাম জানান, হিজলা উপজেলায় প্রণোদনায় নারিকেল চারা বিতরণ করা হয়। বিএনপি নেতা গিয়াস দেওয়ান একটি নামের তালিকা দেন এবং তালিকা অনুযায়ী চারা বিতরণ করতে বলেন। কিন্তু শ্রেণিবিন্যাসে তারা প্রণোদনার চারা পাওয়ার উপযুক্ত নন। এ কারণে তাদের চারা দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হন গিয়াস।
তিনি আরও জানান, রোববার রাত ৯টার দিকে টেকেরবাজার থেকে অফিসের কাগজপত্র ফটোকপি করে ফিরছিলেন। এ সময় গিয়াস ও তার ছেলে জিসানসহ ৪-৫ জন আমার পথরোধ করেন। পরে একটি চায়ের দোকানে নিয়ে বাঁশ দিয়ে পিটানো হয়। তারা আমাকে মেরে রক্তাক্ত করেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়। তার নির্দেশে রাতেই হিজলা থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে হিজলা থানার ওসি শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, ফখরুল ইসলামের লিখিত অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত গিয়াস দেওয়ান ও তার ছেলে জিসান আত্মগোপনে ও ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে গিয়াস আরেকটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ হামলার সঙ্গে তারা জড়িত নন। কে বা কারা কৃষি কর্মকর্তার ওপর হামলা করে তাদের ওপর দোষ চাপিয়েছে।’
হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল গাফফার তালুকদার বলেন, গিয়াস দেওয়ান ও তার ছেলে কৃষি কর্মকর্তা ফখরুলের ওপর হামলা করেছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের জানানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল ব এনপ ছ ত রদল কর মকর ত ল ইসল ম ফখর ল ব এনপ র ওপর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পেঁয়াজের কেজি ৮০–৮৫ টাকা, সবজিও চড়া
বাজারে পেঁয়াজ ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম হঠাৎ বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে ১৫–২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ। প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দামও আগের তুলনায় চড়া।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আর ডিমের চাহিদা বেড়েছে, সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি। এ কারণে পণ্য দুটির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক হলে দাম কমে আসবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তাতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চার–পাঁচ দিন আগেও মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যেত ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে হঠাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা বেড়েছে। তাতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর কৃষকের ঘরে মজুত থাকা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এতে বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কমেছে। আবার বৃষ্টির কারণেও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। মূলত এই দুই কারণে পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি।
করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০–৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।গত দুই–তিন সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। যেমন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগে মরিচের দাম ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০–৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।
সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম বেড়েছে মুরগির ডিমের। রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরেই বাজারে আগের চেয়ে বাড়তি দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগে এ দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা কম ছিল।
ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা।চার মাস পর আবার মূল্যস্ফীতি বাড়লমূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। টানা চার মাস কমার পর মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জুলাই মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বর্ষা ও বন্যার মৌসুমের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
গত জুন মাসে দেশের যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল, তা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দুই খাতেই আগের মাসের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধির কারণ হলো, জুলাইয়ে বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। শাকসবজির দামও ছিল চড়া।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বাজারের মৌলিক বিষয়গুলো কাজ করছে না। বিশেষ করে সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। গত মাসে চালের দাম বেড়েছে। এখন চলছে বর্ষা ও বন্যার মৌসুম। এই সময়ে নিত্যপণ্যের ঘাটতি থাকে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে। তাই সরকারের উচিত, এখনই প্রস্তুতি নিয়ে পণ্যের চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্য আনা। তিনি মনে করেন, শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।