সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিশেষ সুবিধা বাবদ চাকরিরত কর্মচারী-কর্মকর্তারা মাসে এক হাজার টাকার বদলে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীরা ৫০০ টাকার বদলে কমপক্ষে ৭৫০ টাকা পাবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ৩ জুন এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। আজ সোমবার তা সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপনটি জারি হয়েছে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর। সরকারি বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী ও পেনশনভোগী কর্মচারীদের জন্য এ প্রজ্ঞাপন প্রযোজ্য।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, যেসব পেনশনভোগী মাসে ১৭ হাজার ৩৮৯ টাকা ও তার বেশি পেয়ে থাকেন, তাঁরা ১০ শতাংশ হারে এবং যাঁরা ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকা ও তার নিচে পেয়ে থাকেন, তাঁরা ১৫ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন।

উপদেষ্টা পরিষদে গতকাল রোববার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনের পর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে সংশোধনী আনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তের এক দিনের মাথায় প্রজ্ঞাপন জারি হলো।

এ প্রজ্ঞাপনের পাশাপাশি অর্থ বিভাগ আজ চার সচিবের কাছে আলাদা তিনটি চিঠিও পাঠিয়েছে। অর্থ বিভাগ একটি চিঠি প্রতিরক্ষাসচিবকে এবং আরেকটি চিঠি আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে দিয়েছে। অন্যটি পাঠানো হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে।

প্রতিরক্ষা সচিবের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলির (জেএসআই) আওতায় বেতন-ভাতা গ্রহণকারী ও পেনশনভোগীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ওয়ারেন্ট অফিসার বা সমতুল্য পদবি থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের সব সদস্য ও ধর্মীয় পরামর্শদানকারী কর্মকর্তারা মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন। সার্জেন্ট ও সমতুল্য পদবির এবং তাঁদের নিচের পর্যায়ের কর্মচারীরা পাবেন মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা। জেএসআইয়ের আওতায় পেনশনভোগীরা বিশেষ সুবিধা পাবেন সরকারি বেসামরিক কর্মচারীদের মতোই।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতা) আদেশ, ২০১৬ অনুযায়ী। এ চিঠিতে ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশের কথা আলাদা করে বলা নেই। চিঠিতে মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

আইন ও বিচার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতা) আদেশ অনুযায়ী যাঁরা বেতন-ভাতা পান, তাঁরা চাকরি শুরুই করেন উচ্চতর গ্রেডে। তাঁরা এখন ১০ শতাংশ হারে বিশেষ ভাতা পাবেন। এর বাইরে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী, যাঁরা ১৫ শতাংশ বিশেষ ভাতাই পাবেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে অর্থ বিভাগ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি মাদ্রাসা ও বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয় বেতনকাঠামোর সঙ্গে তুলনীয় গ্রেড ৯ থেকে তার ওপরের গ্রেডের শিক্ষক-কর্মচারীরা পাবেন ১০ শতাংশ হারে। আর গ্রেড ১০ থেকে তার নিচের গ্রেডের শিক্ষক-কর্মচারীরা পাবেন ১৫ শতাংশ হারে। তবে কেউই ১ হাজার ৫০০ টাকার নিচে পাবেন না।

বিচার বিভাগ, যৌথ বাহিনী এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই জারি করা অর্থ বিভাগের আদেশগুলো আজ বাতিল করা হয়েছে বলে তিন চিঠিতে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অর থ ব ভ গ প নশনভ গ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ

প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের আলোর সমান শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার বা কৃষ্ণগহ্বর আলোকচ্ছটার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সবচেয়ে বড় আলোকচ্ছটা। নতুন পর্যবেক্ষণ করা ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারকে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বৃহৎ ও সবচেয়ে দূরবর্তী বলা হচ্ছে। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আলোকচ্ছটার শক্তি প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের সমান।

একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল বৃহৎ কোনো নক্ষত্রকে গিলে ফেলছে বলে এই আলোকচ্ছটা তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাথিউ গ্রাহাম বলেন, ‘এই ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে দূরবর্তী। আমাদের সূর্যের ভরের চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের একটি বিশাল নক্ষত্র অতিভারী ব্ল্যাকহোলের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলে এমন ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে বলে বিশাল পরিমাণ শক্তি নির্গত হচ্ছে।’ বিজ্ঞানী গ্রাহামের মতে, সেখানে বিশাল বিস্ফোরণের তীব্রতা ও স্থায়িত্বের কারণে এত বিশাল ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নিয়মিতভাবে নিকটবর্তী পদার্থকে গ্রাস করে থাকলেও এমন বিশাল মাত্রার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এমন বিশাল ফ্লেয়ার আগে যা দেখা গেছে, তার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। ফ্লেয়ারটি সর্বোচ্চ শিখরে থাকার সময় এখন পর্যন্ত দেখা যেকোনো ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। দুটি মহাজাগতিক বস্তুর বিশাল আকারের কারণে এমনটা হচ্ছে। সূর্য থেকে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রকে অতিভারী ব্ল্যাকহোল গ্রাস করেছে। ব্ল্যাকহোলের ভর সূর্যের ভরের ৫০০ মিলিয়ন গুণ বেশি বলা যায়। সাত বছরের বেশি আগে শুরু হওয়া এই বিস্ফোরণ সম্ভবত এখনো চলমান।

প্রাথমিকভাবে ২০১৮ সালে তিনটি স্থলভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জরিপের সময় ফ্লেয়ারের খোঁজ মেলে। তখন এটিকে ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল বস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২৩ সালে হাওয়াইয়ের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরি পর্যবেক্ষণ শুরু করে। বিজ্ঞানী গ্রাহাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার ব্ল্যাকহোলের আচরণ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে। প্রচলিত ধারণা অনুসারে মহাবিশ্বের বেশির ভাগ গ্যালাক্সির মাঝখানে একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এখন আমরা আরও গতিশীল পরিবেশ দেখছি। সুপারম্যাসিভ ধরনের ব্ল্যাকহোলকে অ্যাকটিভ গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস বলা হচ্ছে। এটিকে জে২২৪৫+৩৭৪৩ নামে নামকরণ করা হয়েছে।’

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ