আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হয়েছে। এটি ছিল দেশের সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত ও সমালোচিত আইনগুলোর একটি। আমরা অত্যন্ত পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর একটি সংশোধনী প্রস্তুত করেছি। সেটি চূড়ান্তের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে কমনওয়েলথ চার্টার-বিষয়ক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। 

আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত সরকারের আমলে এ আইনের মাধ্যমে মানুষ সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। আইন সংশোধনের পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের লোকেরাও যখন স্বীকার করেন, আইনটি খুব খারাপ আইন নয়, তখন তা আমার জন্য বড় বিস্ময় ছিল। যখন আপনি এমন লোকদের কাছ থেকে শোনেন, এটি খুব খারাপ আইন নয়, তার মানে এটি একটি ভালো আইন। আপনি যদি আমাদের সম্পাদিত সাইবার সুরক্ষা আইনটির অতীত সংস্করণগুলোর সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে জনগণকে অপব্যবহারের শিকার হওয়া থেকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘কমনওয়েলথ সনদ শুধু একটি ঘোষণাপত্র নয়, এটি একটি নৈতিক দিকনির্দেশক; যা আমাদের সীমানা ছাড়িয়ে বেঁধে রাখে। আমি আশ্বস্ত করছি, এই মূল্যবোধগুলো আমাদের বর্তমান সংস্কার প্রচেষ্টার গভীরে প্রবাহিত। কমনওয়েলথ সনদের সঙ্গে সংগতি রেখে বর্তমান সরকার সাহসী সংস্কারের পথে অগ্রসর হয়েছে।’

গত বছরের জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে নৈতিক আন্দোলন হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এ অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা শুধু আগামী দিনের নেতা নন, তারাই হবেন আগামী দিনের পরিবর্তন সৃষ্টিকারী। কমনওয়েলথ চার্টার কর্মশালাটি বাংলাদেশের তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেশি। নারী ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় তরুণদের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব উল আলম। ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের উপদেষ্টা মাইকেল স্কোবি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

কমনওয়েলথ সনদ বাস্তবায়নে যুব সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: আসিফ মাহম

কমনওয়েলথ সনদে অন্তর্নিহিত মূল্যবোধ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর লেক সোর হাইটস হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ‘কমনওয়েলথ চার্টার’ বা সনদবিষয়ক একটি দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

কমনওয়েলথ ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে এ কর্মশালায় ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার শতাধিক যুব প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের সদস্য ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অংশ নেন।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় সরকার বিভাগের দুই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত 

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “কমনওয়েলথ সনদ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন ও আইনের শাসনের প্রতি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর যৌথ প্রতিশ্রুতি। এটি বিশ্বের ৫৬টি দেশের ২.৫ বিলিয়নের বেশি মানুষের জন্য একটি নৈতিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “গত ১৬ বছরে দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের সীমাহীন লুটপাট হয়েছে। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জিম্মি করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞসহ অংশীজনদের সাথে ব্যাপক পরামর্শের ভিত্তিতে ১২১টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রক্রিয়া নির্ধারণে কাজ করছে এবং ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।”

আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে গণতন্ত্র কখনো সংকুচিত হবে না, নাগরিক অধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদা চিরস্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকবে। কমনওয়েলথ সনদের মূল্যবোধ সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আমাদের তরুণ প্রজন্ম একটি কার্যকর ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম, কমনওয়েলথের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর লুইস ফ্রান্সিস এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা ও অংশীজন।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, কমনওয়েলথ সনদের আদর্শ তরুণদের মূল্যবোধপূর্ণ নেতৃত্ব গঠনের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমি বিস্মিত হই, যখন অ্যামনেস্টির লোকেরা বলে সাইবার নিরাপত্তা আইন খুব খারাপ নয়: আসিফ নজরুল
  • কমনওয়েলথ সনদ বাস্তবায়নে যুব সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: আসিফ মাহম
  • পুরো একটি প্রজন্ম সুষ্ঠু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই বেড়ে উঠেছে: আসিফ মাহমুদ