বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগতের আন্তনাক্ষত্রিক একটি বস্তুর খোঁজ পেয়েছেন। ধূমকেতুর মতো বস্তুটির নাম ৩আই/অ্যাটলাস। প্রতি সেকেন্ডে ৬০ কিলোমিটারের বেশি বেগে সূর্যের দিকে ধাবমান বস্তুটি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর দিকে দ্রুতগতিতে তৃতীয় কোনো আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর খোজঁ পেয়েছেন। নাসা জানিয়েছে, বস্তুটি প্রায় চার মাসের মধ্যে সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছাবে। এরপর আবার আমাদের সৌরজগৎ ছেড়ে বাইরের দিকে চলে যাবে।

আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়নের মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার জানিয়েছেন, বস্তুটি ধূমকেতুর মতো। প্রতি সেকেন্ডে ৬০ কিলোমিটারের বেশি বেগে সূর্যের দিকে ধাবমান। আন্তনাক্ষত্রিক কোনো স্থান থেকে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি সৌরজগতের বাইরে অন্য কোনো নক্ষত্রমণ্ডল থেকে এসেছে। বস্তুটি সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাধ্যমে আবদ্ধ কোনো বস্তু নয়।

প্রাথমিকভাবে ২৫ থেকে ২৯ জুনের মধ্যে বিজ্ঞানীরা আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটির খোঁজ পান। দক্ষিণ আফ্রিকা ও হাওয়াইয়ের টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এই বস্তুর খোঁজ মিলেছে। সম্ভাব্যভাবে ১২ মাইল পরিসরের বস্তুটি কোনো একটি বৃহৎ গ্রহাণু হতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার মাইল গতিতে প্রতি ঘণ্টায় সৌরজগতের মধ্যে ভ্রমণ করছে। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ তথ্য বিশ্লেষণ করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে বস্তুটিকে আন্তনাক্ষত্রিক হিসেবে মনোনীত করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বস্তুটি সূর্যের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের বাইরের কোথাও থেকে এসেছে। জ্যোতির্বিদ পিটার ভেরেস বলেন, বস্তুটি এখনো কিছুটা অস্পষ্ট দেখাচ্ছে। বস্তুটি এখন সৌরজগতের গভীরে চলে যাচ্ছে। মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথের ঠিক ভেতর দিয়ে যাবে। কাছাকাছি কোনো গ্রহের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার গ্রহ প্রতিরক্ষার প্রধান রিচার্ড মইসল বলেন, বস্তুটি পৃথিবীর জন্য হুমকি নয়। বস্তুটি ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার প্রশস্ত বলে মনে করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত বৃহত্তম আন্তনাক্ষত্রিক অনুপ্রবেশকারী হিসেবে এই বস্তুর ওপরে বেশ নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা। যদি বস্তুটি বরফ দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে বেশি আলো প্রতিফলিত করবে। তৃতীয়বারের মতো সৌরজগতে ভিন্ন কোনো নক্ষত্র থেকে আসা এমন কিছু আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রথম ২০১৭ সালে ওমুয়ামুয়া নামের একটি আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু দেখা যায়। দ্বিতীয় বস্তুটি ছিল ধূমকেতু ২আই/বোরিসভ ২০১৯ সালে দেখা যায়।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স রজগত র বস ত ট বস ত র

এছাড়াও পড়ুন:

চিনাবাদাম আকৃতির গ্রহাণুর প্রথম ছবি

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা মেইন–বেল্ট গ্রহাণু হিসেবে ডোনাল্ডজোহানসন নামের একটি গ্রহাণুর প্রথম উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি প্রকাশ করেছেন। ছবিতে অনন্য এক চিনাবাদাম আকৃতির গ্রহাণুর খোঁজ মিলেছে। এ বছরের ২০ এপ্রিল সৌরজগতের প্রধান গ্রহাণু বেল্টে নাসার লুসি খেয়াযানের সঙ্গে গ্রহাণুর সাক্ষাৎ হয়।

মহাকাশযানটি চিনাবাদাম আকৃতির মহাকাশ শিলার সবচেয়ে কাছে পৌঁছানোর কয়েক মিনিট আগে এই ছবি তোলে। ছবি তোলার জন্য ল’লরি ইমেজার ব্যবহার করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, গ্রহাণু ডোনাল্ডজোহানসনের আকৃতি কিছুটা দীর্ঘ। ছবিতে রুক্ষ ও খাদযুক্ত পৃষ্ঠ দেখা যায়। ছবি থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহাণুটি আগের ধারণার চেয়ে বেশ বড়। প্রায় ৮ কিলোমিটার লম্বা ও ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার প্রশস্ত এই গ্রহাণু। গ্রহাণুটি খুব ধীরে ধীরে ঘুরছে। একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে ২৫১ ঘণ্টা সময় লাগে। লুসি মিশনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির গঠন ও গড়ন আরও ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করছেন।

ছবিটি শেয়ার করে নাসা জানিয়েছে, লুসি মহাকাশযানটি ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল গ্রহাণুর নিকটতম স্থানে পৌঁছানোর প্রায় ৩ দশমিক ২ মিনিট আগে ছবি তোলে। ছবি তোলার সময় যানটির অবস্থান ছিল প্রায় ১ হাজার ৭০০ মাইল দূরে। সূর্য লুসির প্রায় পেছনে বলে কিছুটা অন্ধকার রয়েছে ছবিতে। গ্রহাণুটির নামকরণ করা হয়েছে নৃবিজ্ঞানী ডোনাল্ড জোহানসনের নামে। তিনি আদি মানব পূর্বপুরুষের জীবাশ্ম কঙ্কাল লুসি আবিষ্কার করেছিলেন।

লুসি খেয়াযানের জন্য এই ছবি তোলা একধরনের পরীক্ষা। এই মহাকাশযানের মূল লক্ষ্য জুপিটার ট্রোজান গ্রহাণু অন্বেষণ। সৌরজগতের মেইন গ্রহাণু বেল্টের মধ্য দিয়ে ৩০ হাজার মাইল প্রতি ঘণ্টার বেশি গতিতে ভ্রমণ করছে। লুসি যখন ট্রোজান গ্রহাণুতে পৌঁছাবে, তখন চারটি গ্রহাণুর মুখোমুখি হবে সে। ১৫ মাসের কম সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ছয়টি গ্রহাণু পর্যবেক্ষণ করবে লুসি। ২০২৭ সালের আগস্টে গ্রহাণু ইউরিবেটসের সঙ্গে প্রথম দেখা হবে লুসির।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিনাবাদাম আকৃতির গ্রহাণুর প্রথম ছবি