যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউসে দলবল নিয়ে হানা ও হাঙ্গামার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির সদস্য গোলাম হাসান সনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ দপ্তর সম্পাদক ওসমান গনির সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিদুর রহমান সাগর।

এর আগে নারীসহ ওই রেস্ট হাউসে অবস্থানের অভিযোগে এদিন সকালে ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সনিকে বহিষ্কার সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যশোর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম হাসান সনিকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। দলের নেতাকর্মীদের তার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ না করার নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি সনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের যে কেউ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করলে দলে জায়গা নাই।

উল্লেখ্য, ৩০ জুন স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউসে ওঠেন ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম। খবর পেয়ে যশোর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি দলবল নিয়ে সেখানে হানা দেন এবং হাঙ্গামা করেন। রেস্ট হাউসের এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় মুখরোচক আলোচনার খোরাক হয়।

সিসিটিভি ফুটেজ ও রেস্টহাউস কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরাতন রেস্ট হাউসের কপোতাক্ষ কক্ষে ওঠেন পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। এর ঘণ্টা দুয়েক পরে পাঁচ-ছয়জন সহযোগী নিয়ে রেস্ট হাউসে হাজির হন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি। দরজায় ধাক্কা দিতেই বাইরে বেরিয়ে আসেন ওসি সাইফুল। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেন তিনি। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে ধস্তাধস্তি করে ওসিকে সঙ্গে নিয়েই কক্ষে প্রবেশ করেন তারা।

বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতা সনি ও সহযোগীরা ভাঙচুর চালান ও তাদের ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় আনসার সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারীকে মারধরও করেন তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে হাজির হলে ওসি ও ওই নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন ছাত্রদল নেতা সনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র ছ ত রদল ঝ ন ইদহ র ছ ত রদল র সদস য ক দল র

এছাড়াও পড়ুন:

ভাবিকে হত্যার সাজা খেটে বাড়ি ফিরেছিলেন, এবার ভাতিজিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার

বরগুনার তালতলী উপজেলায় ছয় বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তার চাচাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিশুর নাম নাহিল আক্তার। সে ওই গ্রামের বাসিন্দা দুলাল খানের মেয়ে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম হাবিব খান (২৭)। তিনি দুলালের ছোট ভাই ও নাহিলের চাচা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দোকানে বিস্কুট আনতে যাচ্ছিল নাহিল। এ সময় শিশুটিকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন তার চাচা হাবিব খান। এতে শিশুটির মাথা ও হাত গুরুতর জখম হয়। এ অবস্থায় স্বজনেরা তাকে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বরিশালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় নাহিলের মৃত্যু হয়। পুলিশ রাতেই মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ওই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা হাবিবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এর আগে ২০১৫ সালে বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে হত্যার অভিযোগ ওঠে হাবিবের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় শিশু আইনে তাঁর কারাদণ্ড হয়। গত বছরের প্রথম দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান হাবিব। এবার তাঁর বিরুদ্ধে দুলালের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের মেয়ে নাহিলকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

এ সম্পর্কে দুলাল খান বলেন, ‘হাবিব আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে হত্যা করে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। হাজত খেটে সে বাড়ি ফিরে এসেছে। এর দেড় বছরের মাথায় আমার মেয়েকেও পিটিয়ে হত্যা করল। আমি হাবিবের ফাঁসি চাই।’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, শিশুটিকে হত্যার ঘটনায় হাবিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা দুলাল খান বাদী হয়ে হাবিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ