ঈশ্বরদীতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
Published: 6th, August 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্তানের মারামারির ঘটনায় লিটন প্রামানিক নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে সোহেল প্রামানিক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। এছাড়া বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের ৬ নাম্বার ওয়ার্ড নারিচা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী লিটন প্রামানিক।
অভিযুক্ত সোহেল প্রামানিক নারিচা এলাকার নুরুল প্রামানিকের ছেলে। ভুক্তভোগী লিটন একই এলাকার মোসলেম প্রামানিকের ছেলে। তিনি সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় প্রবাসীর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
ডাকাতির কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৯
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, লিটনের ছেলে রাহী (১৪) ঈশ্বরদী ভোকেশনাল স্কুলের নবম শ্রেণির ও সোহেলের ছেলে অপু (১৬) এসএম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। গত ২৫ জুলাই ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে আড্ডা দেওয়ার সময় অপুর সঙ্গে তার এক বন্ধুর ঝগড়া থেকে মারামারি হয়। রাহী তাদের মারামারি ঠেকানোর চেষ্টা করেন এবং আহত অপুকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরদিন ২৬ জুলাই অপুর বাবা সোহেল বাদী হয়ে অপুর বন্ধুদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২ নাম্বার আসামি করা হয় রাহীকে। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাহীকে পাবনার বাইরে পাঠিয়ে দেয় তার পরিবার।
রবিবার (৩ আগস্ট) অপুর বাবা সোহেল তার মামলার আসামিদের মধ্যে নির্জন নামে একজনকে মারধর করেন। পরে গতকাল মঙ্গলবার নির্জন তার লোকজন নিয়ে আবার সোহেলকে ধরে মারধর করে। এ ঘটনার সঙ্গে রাহী ও তার পরিবারকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লিটনের ভাই জুয়েল প্রামানিকের নেতৃত্বে রানা, নাজমুল, সাদ্দাম, সাগরসহ অন্তত ২০ জন রাহীদের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় বাড়িতে পুরুষ মানুষ কেউ ছিল না।
হামলাকারীরা লিটন প্রামানিকের মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং বাড়ির মহিলাদের মারধর করে। পরে ঘরে প্রবেশ করে হামলাকারীরা মোটরসাইকেল, সাইকেল, টেলিভিশন, ফ্রিজসহ ঘরের সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়া আলমারীতে থাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মেয়েকে তুলে নেওয়াসহ সবাইকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যান অভিযুক্তরা।
লিটন প্রামানিকের স্ত্রী লতা খাতুন বলেন, “তখন বাড়ির মধ্যে সাংসারিক কাজ করছিলাম। সন্ধ্যার পর জুয়েল, নাজমুলসহ অনেকগুলো লোক এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গেট ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে। আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিলে আমাদেরও মারধর করে। তারপর ঘরে ঢুকে সব ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে চলে যায়।”
লিটন প্রামানিক বলেন, “ছেলের বন্ধুরা এক জায়গায় আড্ডা দেওয়ার সময় সোহেলের ছেলে অপুর সঙ্গে তার অন্য এক বন্ধুর মারামারি হয়। আমার ছেলের সঙ্গে তো কোনো ঝামেলা হয়নি। বরং আমার ছেলে তাদের ঠেকাতে গেছে। আবার আহত হলে তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেছে। অথচ আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করল। আবার আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর লুটপাট করল। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল প্রামাণিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে অন্য একজন ফোন ধরে বলেন তিনি অসুস্থ বাসায় নেই, হাসপাতালে আছে।
ঈশ্বরদী থানার ধারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নথিভুক্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ল টন প র ম ন ক র ও ল টপ ট এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ সেলিমের ৩৫ ব্যাংক হিসাব ও ২৩ বিও হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর ২৩টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশও দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন বুধবার রাতে এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে বলা হয়, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে–বিদেশে বিপুল পরিমাণ স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। একই সঙ্গে দুদক শেখ সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব ও ২৩টি বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২৮ আগস্ট শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাদের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়। ব্যাংক হিসাব জব্দের এ তালিকায় থাকা বাকিরা হলেন শেখ সেলিমের স্ত্রী ফাতেমা সেলিম, তাঁর ছেলে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইম এবং মেয়ে শেখ আমিনা সুলতানা সনিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠায়।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাঁদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাঁদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ২০ আগস্ট শেখ সেলিম, তাঁর ছেলে ফজলে ফাহিমসহ পরিবারের সবার ব্যাংক হিসাব তলব করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ছাত্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর অনেক মন্ত্রী-এমপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়।