পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্তানের মারামারির ঘটনায় লিটন প্রামানিক নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে সোহেল প্রামানিক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। এছাড়া বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের ৬ নাম্বার ওয়ার্ড নারিচা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী লিটন প্রামানিক।

অভিযুক্ত সোহেল প্রামানিক নারিচা এলাকার নুরুল প্রামানিকের ছেলে। ভুক্তভোগী লিটন একই এলাকার মোসলেম প্রামানিকের ছেলে। তিনি সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী। 

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় প্রবাসীর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

ডাকাতির কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৯

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, লিটনের ছেলে রাহী (১৪) ঈশ্বরদী ভোকেশনাল স্কুলের নবম শ্রেণির ও সোহেলের ছেলে অপু (১৬) এসএম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। গত ২৫ জুলাই ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে আড্ডা দেওয়ার সময় অপুর সঙ্গে তার এক বন্ধুর ঝগড়া থেকে মারামারি হয়। রাহী তাদের মারামারি ঠেকানোর চেষ্টা করেন এবং আহত অপুকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার পরদিন ২৬ জুলাই অপুর বাবা সোহেল বাদী হয়ে অপুর বন্ধুদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২ নাম্বার আসামি করা হয় রাহীকে। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাহীকে পাবনার বাইরে পাঠিয়ে দেয় তার পরিবার।

রবিবার (৩ আগস্ট) অপুর বাবা সোহেল তার মামলার আসামিদের মধ্যে নির্জন নামে একজনকে মারধর করেন। পরে গতকাল মঙ্গলবার নির্জন তার লোকজন নিয়ে আবার সোহেলকে ধরে মারধর করে। এ ঘটনার সঙ্গে রাহী ও তার পরিবারকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লিটনের ভাই জুয়েল প্রামানিকের নেতৃত্বে রানা, নাজমুল, সাদ্দাম, সাগরসহ অন্তত ২০ জন রাহীদের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় বাড়িতে পুরুষ মানুষ কেউ ছিল না।

হামলাকারীরা লিটন প্রামানিকের মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং বাড়ির মহিলাদের মারধর করে। পরে ঘরে প্রবেশ করে হামলাকারীরা মোটরসাইকেল, সাইকেল, টেলিভিশন, ফ্রিজসহ ঘরের সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়া আলমারীতে থাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মেয়েকে তুলে নেওয়াসহ সবাইকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যান অভিযুক্তরা।

লিটন প্রামানিকের স্ত্রী লতা খাতুন বলেন, “তখন বাড়ির মধ্যে সাংসারিক কাজ করছিলাম। সন্ধ্যার পর জুয়েল, নাজমুলসহ অনেকগুলো লোক এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গেট ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে। আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিলে আমাদেরও মারধর করে। তারপর ঘরে ঢুকে সব ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে চলে যায়।”

লিটন প্রামানিক বলেন, “ছেলের বন্ধুরা এক জায়গায় আড্ডা দেওয়ার সময় সোহেলের ছেলে অপুর সঙ্গে তার অন্য এক বন্ধুর মারামারি হয়। আমার ছেলের সঙ্গে তো কোনো ঝামেলা হয়নি। বরং আমার ছেলে তাদের ঠেকাতে গেছে। আবার আহত হলে তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেছে। অথচ আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করল। আবার আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর লুটপাট করল। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল প্রামাণিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে অন্য একজন ফোন ধরে বলেন তিনি অসুস্থ বাসায় নেই, হাসপাতালে আছে। 

ঈশ্বরদী থানার ধারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নথিভুক্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ল টন প র ম ন ক র ও ল টপ ট এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

চুয়াডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় খাইরুল ইসলাম (২৪) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

শিক্ষকের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ধুনটে প্রবাসী নারীকে ধর্ষণ, প্রেমিক কারাগারে

দণ্ডপ্রাপ্ত খাইরুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বুজরুকগড়গড়ি মাদ্রাসাপাড়ার মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি মহিলা কলেজ মোড় হয়ে বাড়ি ফিরছিল সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী। এ সময় কৌশলে স্কুলছাত্রীকে একটি অটোরিকশায় তুলে নেন খাইরুল। পরে পৌর এলাকার সুমিরদিয়ায় একটি বাঁশবাগানে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু ও নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এম এম শাহজাহান মুকুল বলেন, ‘‘দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনার পর আদালত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় খাইরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।’’

ঢাকা/মামুন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ