ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি (ইউসিবিপিএলসি) থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহা.

শোয়াইব ইবনে আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আরামিট গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আত্মীয় সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ক্রিসেন্ট ট্রেডার্স নামীয় একটি নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মালিক সাজানো হয়। পরে ভুয়া তথ্য ও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলা হয়।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকের তৎকালীন কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান এবং মাকসুদ আহম্মেদ কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিয়মবহির্ভূতভাবে হিসাবটি খোলেন এবং এর পেছনে আরামিট সিমেন্টের অ্যাকাউন্টস ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোছাইন চৌধুরীর ভূমিকা ছিল।

দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, ক্রিসেন্ট ট্রেডার্সের নামে ঋণের জন্য ভুয়া আবেদন দাখিল করা হয়। তৎকালীন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখার কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, কান্তা দাশ গুপ্তা, মাকসুদ আহম্মেদ ও শাখাপ্রধান মোহাম্মদ আবদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত ক্রেডিট কমিটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে মিথ্যা পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করে ঋণের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবটি ইউসিবির প্রধান কার্যালয়ের করপোরেট ব্যাংকিং ও ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের মাধ্যমে ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণসহ পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করা হয়। এরপরও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪৪৭তম সভায় ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, স্ত্রী–বোনসহ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা৫২ মিনিট আগে

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঋণের ২৫ কোটি টাকার মধ্যে ২৪ কোটি টাকা ইউসিবির জেনারেল লেজার হিসাবে এবং ১ কোটি টাকা চলতি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এরপর বিভিন্ন ব্যাংকে খোলা অ্যাকাউন্টে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ওই অর্থ স্থানান্তর করা হয় এবং একপর্যায়ে তা রিভারসাইড এন্টারপ্রাইজের ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ১ কোটি টাকা নগদে উত্তোলন করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কর্মচারী মো. ইয়াছিনুর রহমান।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ও জাল দলিলের মাধ্যমে একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ ঋণ আদায় করে অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করেছেন। এ ঘটনায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

এই মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান এবং আত্মীয় সৈয়দ নুরুল ইসলামকে। একই সঙ্গে মামলায় যুক্ত করা হয়েছে ব্যাংকের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান, মাকসুদ আহম্মেদ, সাইফুল ইসলাম, কান্তা দাশ গুপ্তা, মোহাম্মদ আবদুল করিমসহ একাধিক কর্মকর্তাকে। এ ছাড়া আরামিট গ্রুপ সংশ্লিষ্ট সৈয়দ কামরুজ্জামান, ব্যবসায়ী আবদুল খালেক, রিভারসাইড এন্টারপ্রাইজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মোহাম্মদ হোছাইন চৌধুরী, নগদ উত্তোলনে জড়িত ইয়াছিনুর রহমান এবং ইউসিবিপিএলসির সাবেক পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তি জব্দ১১ জুন ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ক ভ ম মন ত র কর মকর ত ম হ ম মদ ল ইসল ম র রহম ন ২৫ ক ট ইউস ব

এছাড়াও পড়ুন:

খেলার আগে–পরে এত কথা, মাঠে আগের মতোই ভারতের একতরফা জয়

অনেকটা একই চিত্রনাট্য। ম্যাচের আগে উত্তাপ ছড়াল নানা ঘটনাপ্রবাহ। মাঠের ভেতরে সামান্য তর্কেও জড়ালেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। কিন্তু ক্রিকেটীয় লড়াই? তা থেকে গেল একপেশেই। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নীল সমুদ্রের পালে হাওয়া লাগল ঠিকই। কিন্তু ভারত–পাকিস্তান ঐতিহ্যের ক্রিকেট রোমাঞ্চ পানসে হওয়ার বেদনাও হয়তো থেকে গেল কোথাও।

দুবাইয়ে রোববার এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে ভারতের ৬ উইকেটের জয়ে একটা নতুন ইতিহাসও লেখা হলো। শেষ ছয়টি ম্যাচেই এই লড়াইয়ে জয়ী দলের নাম ভারত। এর আগে ভারত–পাকিস্তান লড়াইয়ের ৭৪ বছরের ইতিহাসে কখনো টানা পাঁচটির বেশি ম্যাচ জিততে পারেনি কোনো দল; এবার হলো সেটাই। ৩ বছর আগে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে এই দুবাইয়েই ভারতের বিপক্ষে শেষ জয়টা পেয়েছিল পাকিস্তান। এর পর থেকে সব ম্যাচেরই জয়ী দলের নাম ভারত। আজ তো পাকিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশ রান তাড়া করেই জিতল তারা।

ম্যাচের মাঝবিরতিতে অবশ্য মনে হচ্ছিল এবার হয়তো লড়াইটা অন্তত গ্রুপ পর্বে দুই দলের আগের ম্যাচের চেয়ে বেশি হবে। ভারতীয় ফিল্ডারদের ক্যাচ ছেড়ে দেওয়ার দায় তো আছেই, তবে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরাও এক সপ্তাহ আগের ম্যাচের চেয়ে ভালো করেছিলেন।  

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেছেন ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান

সম্পর্কিত নিবন্ধ