ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত গাজা সিটি দখলে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।

তাৎক্ষণিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব অনুমোদন করার বিষয় প্রকাশ্যে নিশ্চিত করেনি। তবে ইসরায়েলের এ উদ্যোগ হবে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধির পদক্ষেপ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস প্রথম এ খবর জানায় আজ শুক্রবার।

অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদনে সাংবাদিক বারাক রাভিদ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক–নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা হামাসকে পরাজিত করার প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা সিটি দখলের প্রস্তুতি নেবে এবং একই সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থাকা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রাভিদ আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো, আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে গাজা সিটির সব ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষকে কেন্দ্রীয় শরণার্থী শিবির ও অন্যান্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়া।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে খবর আসে যে, নেতানিয়াহু খুব শিগগিরই গাজা উপত্যকার পুরোটা দখলের পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন। সোমবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গাজা দখলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে।’

সাংবাদিক রাভিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘গাজা সিটিতে থেকে যাওয়া হামাস যোদ্ধাদের ওপর অবরোধ চাপানো হবে এবং একই সময় সেখানে স্থল অভিযান চালানো হবে।’

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা শিহাব রাত্তানসি বলেছেন, গাজা দখলের ইসরায়েলের পদক্ষেপের ইঙ্গিত কয়েক দিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল।

‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সবুজ সংকেতই দিয়ে দিয়েছেন, নেতানিয়াহু যা করতে চান। তিনি (ট্রাম্প) বলেছেন, বিষয়টি ইসরায়েলিদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে,’ বলেন রাত্তানসি।

আরও পড়ুনইসরায়েল গাজা পুরোপুরি দখল করবে কি না, সেটি তার ব্যাপার: ট্রাম্প০৬ আগস্ট ২০২৫

গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ‘পুরো গাজা নিয়ন্ত্রণে নেবে’। তিনি একই সাক্ষাৎকারে বলেন, ইসরায়েল গাজার ‘শাসনভার গ্রহণ করতে’ চায় না এবং এটি একটি অনির্দিষ্ট তৃতীয় পক্ষের হাতে তুলে দেবে।

ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো, আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে গাজা সিটির সব ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষকে কেন্দ্রীয় শরণার্থী শিবির ও অন্যান্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়া।বারাক রাভিদ, সাংবাদিক

‘আমরা গাজা রাখতে চাই না। আমরা শুধু একটি নিরাপত্তা বলয় চাই। আমরা এখানে শাসন করতে চাই না,’ বলেন নেতানিয়াহু।এর আগে, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে খবর আসে যে, নেতানিয়াহু খুব শিগগিরই গাজা উপত্যকার পুরোটা দখলের পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন।

গত সোমবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গাজা দখলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে।’ তারা নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের নাম প্রকাশ না করা এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়।

আরও পড়ুনগাজায় কেউ না খেয়ে নেই—দাবি নেতানিয়াহুর, দ্বিমত ট্রাম্পের২৯ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলার মুখে গাজায় অবশিষ্ট আছে মাত্র দেড় শতাংশ ফসলি জমি১১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র দখল র প প রস ত

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লার সেই বিএনপিকর্মী ইব্রাহিম মারা গেছেন

ফতুল্লার বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম (৫২) মারা গেছেন। সে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীনবস্থায় মারা যান।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে হাজিগঞ্জ জামে মসজিদে নিহতের নামাজের জানাজা শেষে পাঠানটুলি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত ইব্রাহিম ফতুল্লা থানার ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড হাজীগঞ্জের আব্দুল জলিলের পুত্র। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।

জানা যায়,২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে বিএনপির ডাকা মহা সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের ব্যানারে সে অংশগ্রহণ করে।

সমাবেশের শেষের দিকে মুল মঞ্চের পেছনের দিকে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা,কর্মীও সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ বিএনপি নেতা- কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের কে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

ইব্রাহিম পুলিশের হামলায় মারাত্নক আহত হয়ে রাস্তায় পরে থাকে। সে সময় সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ঘটনার চারদিন পর তার সহোযোগিরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে খুঁজে পায়। দীর্ঘদিন সহোযোগিরা নিজেদের অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর আল বারাকা নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়। 

পরবর্তীতে ইব্রাহিমকে নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন হলে বিএনপি নেতা ও শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ  বাবুল তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই রোববার রাতে তিনি মারা যান।

ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ মিয়া জানান,নিহত ইব্রাহিম ২০২৩ সালে ২৮ অক্টোবর  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ঘোষিত পল্টন পার্টি অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি ও  ইউনিয়ন যুবদলের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন । 

সমাবেশ চলাকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন টিপু  ও নিহত ইব্রাহিম এবং তিনি সহ আরো নেতা-কর্মীরা পল্টন পার্টি অফিস সংলগ্ন  চায়না টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।  হঠাৎ পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে করে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে  পরে।

অতর্কিত হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার  পর  প্রায় চার দিন পর  পত্রিকার নিউজে দেখতে পায় ইব্রাহিম নামে একজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সেই সংবাদের পর  তার পরিবারের লোকজন  এবং ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আলী ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নেওয়ার পরে তারা নিশ্চিত হন যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে থাকা চিকিৎসারতি হচ্ছে তাদের নিখোঁজ  ইব্রাহিম।

ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা শেষ করে তাকে বাসায় আনা হয়। বাসায় আনার পরে উনি আবার অসুস্থ হয়ে পরে। ফলে ৮ নং ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পুনরায় তাকে মদনপুর আল বারাকা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা  শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পরেন। 

এমতাবস্থায় নাসিক ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রিপন তাকে দেখতে আসলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদের পর বিএনপি নেতা শিল্পপতি  প্রাইম বাবুল ভাই তার চিকিৎসার দ্ধায়িত্ব নেন। 

বাবুল ভাই নিজে এসে তার দাত্ব নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমান ১১ টা ৪০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ