জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিলেট জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আবুল আহসান জাবুর। তিনি গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ সাংবাদিক এ টি এম তুরাবের বড় ভাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের পদত্যাগের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন আবুল আহসান জাবুর। তিনি বলেন, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে তিনি সংগঠনকে যথাযথভাবে সময় দিতে পারছিলেন না। এ কারণে তিনি জেলার প্রধান সমন্বয়কারী বরাবর পদত্যাগ জমা দিয়েছেন।

পদত্যাগপত্রে জাবুর লিখেছেন, ‘আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির সিলেট জেলার একজন সদস্য ও জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী। আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় দলের কার্যক্রমে সময় দিতে পারছি না। তাই স্বপদে বহাল থাকা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে পড়ে না। উক্ত কারণে আমি স্বেচ্ছায় দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। অদ্য সাংগঠনিকভাবে পদত্যাগ করলাম।’

জাবুরের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দীন শাহান গতকাল রাত ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি মৌখিকভাবে আমাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। এখনো এ-সংক্রান্ত তাঁর লিখিত কিছু পাইনি। তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন, এটা এখনো বলা যাবে না। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে তাঁকে নিয়ে আমরা শিগগিরই বসব।’

এর আগে গত ১৮ জুন রাতে এনসিপির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট সিলেট জেলা ও ২১ সদস্যবিশিষ্ট মহানগর শাখার সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের স্বাক্ষরিত এ কমিটি এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। তাঁদের ঘোষিত জেলা কমিটিতে আবুল আহসান জাবুর যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সমন বয়ক র সদস য এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে দুই পক্ষের মিছিল-উত্তেজনা, আটক ৩

সাতক্ষীরা-৩ (কালীগঞ্জ-আশাশুনি) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কালীগঞ্জ উপজেলার ফুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নাশকতার আশঙ্কায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুরের শুভংকর ঘোষ (৪০), কাশিবাটির আবদুল মান্নান সরদার (২৩) ও বাটরার আল মামুন (২৩)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাজী আলাউদ্দীনের নেতৃত্বে ফুলতলায় মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই সময় মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী শহিদুল আলমের সমর্থকেরা কালো পতাকা মিছিলের আয়োজন করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হলে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়।

গতকাল রাতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়, একদল নাশকতাকারী বিপুল পরিমাণ লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল, গুলতি, লোহার বল, ধারালো অস্ত্রসহ সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের বিশেষ টহল দল দ্রুত ফুলতলা এলাকায় অভিযান চালায়।

অভিযানের সময় সেনাসদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন অস্ত্র ও লোহার টুকরা পাশের নদীতে ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে সেনাসদস্যরা চারজনকে আটক করেন ও চারটি গাড়ি (একটি মিনি ট্রাক ও তিনটি পিকআপ ভ্যান) জব্দ করে পুলিশে হস্তান্তর করেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় লাঠি, ইটপাটকেল, গুলতি, লোহার পাইপ ও ধারালো লোহার টুকরা। পরে পুলিশ এক তরুণকে তাঁর বাবার জিম্মায় ছেড়ে দেয়।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী আলাউদ্দীনের ছেলে কাজী সাজিদ রহমানের দাবি, ‘মনোনয়ন না পাওয়া শহিদুল আলমের কর্মী-সমর্থকেরা আমাদের ওপর হামলা করার উদ্দেশ্যে এসব লাঠিসোঁটা নিয়ে এসেছিলেন।’

এ বিষয়ে শহিদুল আলম বলেন, ‘আমি শুনেছি কিছু মানুষ কাজী আলাউদ্দিনকে বয়কট করার জন্য কালো পতাকা নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। আমার কর্মী-সমর্থকেরা কেউ লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনী গতকাল রাত ১০টার দিকে চারজনকে থানায় সোপর্দ করে। আটক চারজনই পিকআপচালক। তাঁদের একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তাঁকে তাঁর বাবার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য তিনজনকে আজ শুক্রবার সকালে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট মামলা দেওয়া হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ