ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে গ্রেপ্তারে সহায়ক তথ্য দিলে ৫ কোটি ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 8th, August 2025 GMT
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে গ্রেপ্তারে সহায়ক তথ্য দিতে পারলে ৫ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পুরস্কারের পরিমাণ আগে ঘোষিত পুরস্কারের তুলনায় দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, মাদুরো বিশ্বের অন্যতম বড় মাদক পাচারকারী।
জানুয়ারিতে বিতর্কিত এক নির্বাচনের মাধ্যমে মাদুরো আবার ক্ষমতায় ফেরেন। ওই নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ এই নির্বাচনের ফল মেনে নেয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই মাদুরোর সমালোচনা করে আসছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাদুরোসহ ভেনেজুয়েলার আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছিল। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে মাদক সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদক পাচার।গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেছেন, আগে ঘোষণা করা ২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পুরস্কার এখন দ্বিগুণ করা হবে। তাঁর দাবি, মাদুরো সরাসরি মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল নতুন এ পুরস্কার ঘোষণাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বলেন, এটি ‘রাজনৈতিক প্রচারণা’ ছাড়া আর কিছু নয়।
গিলের অভিযোগ, যৌন নিপীড়নকারী জেফ্রি এপস্টেইনের মামলা সামাল দেওয়া নিয়ে বন্ডি যে ধরনের সমালোচনার মধ্যে আছেন, তা থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য তিনি এমনটা করেছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাদুরোসহ ভেনেজুয়েলার আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছিল। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে মাদক সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক পাচার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিওতে পাম বন্ডি অভিযোগ করেন, মাদুরো ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্র ত্রেন দে আরাগুয়া এবং মেক্সিকোভিত্তিক শক্তিশালী অপরাধী চক্র সিনালোয়া কার্টেলের মতো গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। ত্রেন দে আরাগুয়াকে ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দাবি করেছিল, মাদুরো কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্ক-এর সঙ্গে মিলে কাজ করেছিলেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, কোকেনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা এবং বিপুল পরিমাণ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকিয়ে দেওয়া।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিওতে পাম বন্ডি অভিযোগ করেন, মাদুরো ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্র ত্রেন দে আরাগুয়া এবং মেক্সিকোভিত্তিক শক্তিশালী অপরাধী চক্র সিনালোয়া কার্টেলের মতো গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। ত্রেন দে আরাগুয়াকে ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বন্ডি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিইএ মাদুরো ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা ৩০ টন কোকেন জব্দ করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৭ টন কোকেনের সঙ্গে সরাসরি মাদুরোর সম্পৃক্ততা আছে।
এর আগে মাদুরো সরাসরি মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে মাদুরো নতুন করে ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র প রস ক র কর ছ ন আর গ য় অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
৫২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, মামলা হচ্ছে ৬ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে
৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকার নির্ধারিত টাকার পরিবর্তে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ৫২৫ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন। এই অভিযোগে ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস টাওয়ার থ্রিতে আগুন
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর
তিনি বলেন, “সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে ৩১ হাজার ৩৩১ জনের কাছ থেকে পাঁচগুণ বেশি অর্থ আদায় করে তারা বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এসব অভিযোগে গত মঙ্গলবার মামলাগুলো অনুমোদন করেছে দুদক। ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মামলায় আসামি করা হচ্ছে।”
মামলায় যারা আসামি:
মেসার্স আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মাধ্যমে ৭ হাজার ৪৩০ জনের কাছ থেকে ১২৪ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক রুহুল আমিনকে প্রথম মামলায় আসামি করা হচ্ছে।
মেসার্স মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৮৯ জনের কাছ থেকে ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের নামে দ্বিতীয় মামলা হচ্ছে। এ মামলায় কিরণের স্ত্রী ও মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এমডিকেও আসামি করা হচ্ছে।
সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩২১ জনের কাছ থেকে ৫৫ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানকে তৃতীয় মামলার আসামি করা হচ্ছে।
ইমপেরিয়াল রিসোর্স লিমিটেডের মাধ্যমে ৮ হাজার ১০১ জনের কাছ থেকে ১৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসাইন ও এমডি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর রামে মামলা হচ্ছে।
আরআরসি হিউম্যান রিসোর্ট সার্ভিস লিমিটেডের মাধ্যমে ৫ হাজার ২০২ জনের কাছ থেকে ৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, এমডি মো. আলমগীর কবীরকে আসামি করে মামলা হচ্ছে।
থানেক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৮৮ জনের কাছ থেকে ৬৩ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ৩ জনকে আসামি করে মামলা হচ্ছে। তারা হলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এমডি আব্দুল্লাহ শাহেদ, পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন নোমানী ও এমডি শমসের আহমেদ।
এর আগে গত ১১ মার্চ মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩২ জনের নামে ও ১৪ সেপ্টেম্বর এক হাজার ১৫৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তার নামে মামলা করে দুদক।
বিভিন্ন অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ফের বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে দেশটি। তখন শ্রমিক ভিসায় দেশটিতে যেতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করে সরকার। ২০২২ সালে এক অফিস আদেশে এ খরচ নির্ধারণ করেছিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি