পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়ায় শতাব্দীপ্রাচীন এক বিতর্কের অবসান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ধারণা ভুল প্রমাণ করে কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গেলমেন্ট বা কোয়ান্টাম জট পাকানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরা। গবেষণায় দেখা যায়, কোয়ান্টাম কণা তাৎক্ষণিকভাবে দূর থেকে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। ক্ল্যাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞানের ধারণা এই প্রভাবকে অস্বীকার করে। নতুন এই গবেষণা ফলাফল কোয়ান্টাম মেকানিকসের বিষয়ে একাধিক ভবিষ্যদ্বাণীকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা দূরে অবস্থিত দুটি কণা একে অপরকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রভাবিত বা যোগাযোগ করতে পারে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন। এমআইটির গবেষণায় দেখা গেছে, কোয়ান্টাম কণা যত দূরেই থাকুক না কেন, তাৎক্ষণিকভাবে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। এই অদ্ভুত সংযোগকে কোয়ান্টাম জট হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা এই জট নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন।

আরও পড়ুনবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জন্য নভেম্বর কেন গুরুত্বপূর্ণ১১ নভেম্বর ২০২৩

কোনো স্পষ্ট সংযোগ বা সংকেত ছাড়া কণা একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে আইনস্টাইনের বেশ অস্বস্তি ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, মহাবিশ্ব স্পষ্ট, যৌক্তিক নীতির ওপর পরিচালিত হওয়া উচিত। ১৯৩৫ সালে তিনি বরিস পোডলস্কি ও নাথান রোজেনের সঙ্গে মিলে একটি বিখ্যাত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। সেই গবেষণাপত্রে কোয়ান্টাম তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সে সময় আইনস্টাইনসহ বরিস পোডলস্কি ও নাথান রোজেন যুক্তি দিয়েছিলেন, কোয়ান্টাম মেকানিকস অবশ্যই অসম্পূর্ণ হতে হবে। কারণ, সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই ভয়ংকর মিথস্ক্রিয়া ঘটতে পারে।

আরও পড়ুনআইনস্টাইনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসরণ করে গ্রহ আবিষ্কার০১ জুলাই ২০২৫

আইনস্টাইন মনে করতেন, কোনো কণা তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কণাকে প্রভাবিত করতে পারে না। এ জন্য কোনো লুকানো চলক থাকতে হবে, যা সবকিছুকে আরও সহজভাবে ব্যাখ্যা করে। আর তাই আইনস্টাইনের ধারণার প্রমাণ খুঁজে দেখার পাশাপাশি কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার প্রকৃত রূপ জানতে বহু বছর ধরেই গবেষণা করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন পরীক্ষা কোয়ান্টাম ফিজিকসকে সমর্থন করলেও সেগুলোতে বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। তবে এমআইটির গবেষণায় পুরোনো ত্রুটিগুলোর সমাধান করা হয়েছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আইনস্টাইনসহ অবিকল মানুষের মতো দেখতে রোবট বিক্রি হচ্ছে চীনের দোকানে

আপনি কি চান কোনো রোবটকে সঙ্গী করে দাবা খেলতে? অথবা একটি রোবোটিক পোষা কুকুরের সঙ্গ পেতে? কিংবা প্রয়াত পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের মতো দেখতে এমন কোনো রোবট চান কি, যা আপনাকে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব শেখাতে পারে? এ ধরনের সব রোবটই এখন এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে।

চীনের বেইজিংয়ে আজ শুক্রবার এমনই একটি নতুন দোকান চালু হয়েছে। সেখান থেকে সাধারণ মানুষ কিনতে পারবেন মানুষের মতো দেখতে রোবট। উবটেক রোবোটিকস, ইউনিট্রি রোবোটিকস–সহ চীনের ৪০টির বেশি ব্র্যান্ডের শতাধিক রোবট এখানে পাওয়া যাবে। দোকানটির নাম দেওয়া হয়েছে রোবট মল।

এই দোকান চীনের প্রথম কয়েকটি দোকানের একটি, যেখানে মানুষের মতো দেখতে এবং সাধারণ মানুষের কাজে ব্যবহারের উপযোগী রোবট বিক্রি হবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও রোবোটিকসে নেতৃত্ব দিতে চীনের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে, তারই প্রতিফলন ঘটেছে দোকানটিতে।

চীন এখন রোবট তৈরিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়া এবং অর্থনীতির ধীরগতিসংক্রান্ত সমস্যাগুলো মোকাবিলায় রোবট তৈরির ওপর জোর দিচ্ছে তারা। গত বছর দেশটি এ কাজে দুই হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে।

রোবট মলের পরিচালক ওয়াং ইয়িফান গত বুধবার বলেন, হাজার হাজার পরিবারের কাছে রোবটকে পৌঁছে দিতে চাইলে শুধু রোবট নির্মাতা কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভর করলেই হবে না। তিনি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।

বারকর্মী হিসেবে কাজ করার উপযোগী করে তৈরি একটি রোবট বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইনস্টাইনসহ অবিকল মানুষের মতো দেখতে রোবট বিক্রি হচ্ছে চীনের দোকানে