মোবাইলে থাকা ব্যালেন্স দিয়ে রোমিং প্যাকেজ কেনার সুবিধা চালু করেছে গ্রামীণফোন; অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা দিয়েই এ প্যাকেজ কেনা যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় গ্রামীণফোন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন এ সুবিধায় প্যাকেজগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন গ্রাহকরা দেশের বাইরে ভ্রমণের সময় সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন। গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মোবাইল ব্যালেন্স ব্যবহার করে বৈদেশিক মুদ্রার বদলে টাকায় আন্তর্জাতিক রোমিং প্যাকেজ কেনার অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ট্রিপে রোমিং ব্যয় ছয় হাজার টাকা এবং বছরে মোট রোমিং ব্যয় (সব মোবাইল নম্বর ও অপারেটর মিলিয়ে) ৩০ হাজার টাকার বেশি হবে না।

গ্রামীণফোন বলেছে, মাইজিপি অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল ব্যালেন্স ব্যবহার করে রোমিং প্যাক চালু করা যাবে। প্যাকের মধ্যে রয়েছে দৈনিক ডেটা প্যাক, সাপ্তাহিক ডেটা ও কম্বো প্যাক। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর ভ্রমণের ক্ষেত্রে রয়েছে ১০ দিনের বিশেষ ট্রাভেল প্যাক। রোমিং সেবার আওতায় ইনকামিং এসএমএস সম্পূর্ণ ফ্রি।

এই রোমিং সেবা গ্রহণ করতে একটি প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। যেখানে গ্রাহকের বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিটের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে।

দেশি মুদ্রায় রোমিং প্যাক চালুর অনুমোদন দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে গ্রামীণফোনের চিফ প্রোডাক্ট অফিসার (সিপিও) সোলায়মান আলম বলেন, টেলিকম খাতের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এখন থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে ও বিশ্বমানের সংযোগ ব্যবহার করে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েই প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন ভ্রমণকারীরা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলও কি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে

১৫ বছর ধরে অনেক ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল আর সংগঠন মিলে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।

এর ফলে হাসিনা সরকারের পতন হয় ও তিনি এবং তাঁর দলের কর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ পরিবর্তন শুধু একটা সরকারের পরিবর্তন নয়, বরং দীর্ঘ সময়ের ভয় ও দমনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাহস, আশা ও গণতান্ত্রিক চেতনার একটি বড় জয় ছিল।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, কিছু গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনের সফলতাকে শুধু নিজের নামে দাবি করতে শুরু করে। কেউ কেউ বলতে থাকে, তাদের কারণেই সরকার পতন ঘটেছে। তাই তারাই ভবিষ্যতে ক্ষমতার একমাত্র ভাগীদার।

আবার কিছু ধর্মীয় বা আদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যারা আগে প্রকাশ্যে তেমন সক্রিয় ছিল না। এ ছাড়া কিছু নতুন দল, যারা আগে রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত ছিল না, তারাও হঠাৎ করে সামনে চলে এসেছে। তারা নিজেদের ‘নতুন শক্তি’, ‘ভিন্নধারার দল’ হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু তাদের আচরণে কখনো কখনো পুরোনো রাজনীতির কৌশলই দেখা যায়।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনা স্বৈরশাসকদের টিকে থাকার দুটি মূলমন্ত্রেই ব্যর্থ২২ আগস্ট ২০২৪

এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী একসঙ্গে থাকলেও আন্দোলনের পর তারা নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ করছে। এতে আন্দোলনের মূল চেতনা—জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন ধীরে ধীরে পেছনের দিকে চলে গেছে।

এ বাস্তবতায় প্রশ্ন ওঠে, যাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরাই কি আবার ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গিয়ে নতুন একধরনের স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেবেন?

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ৫ আগস্ট, ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ