নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে মুফতি আমির হামজাকে আইনি নোটিশ
Published: 23rd, September 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া শাখার নেতা মুফতি আমির হামজাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশাসন, শিক্ষার্থী (বর্তমান ও সাবেক), অভিভাবক (বর্তমান ও অতীত) এবং বিশ্ববিদ্যালয়–সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির উদ্দেশে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে এ ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, সিনেট সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আজ মঙ্গলবার মুফতি আমির হামজার কুষ্টিয়ার ঠিকানায় ওই নোটিশ পাঠান। মিথ্যা বক্তব্যসংবলিত ওই ভিডিও ক্লিপটি ইউটিউবসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অবিলম্বে সরাতে ব্যবস্থা নিতে মুফতি আমির হামজাকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে আবেদন করতেও বলা হয়েছে নোটিশেও।
বিভিন্ন পত্রিকা, অনলাইন নিউজ ও ইউটিউব ভিডিওর বরাত দিয়ে নোটিশে বলা হয়, আমির হামজা নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দাবি করেছেন এবং আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটান—এমন মিথ্যা, অবমাননাকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দেন। এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে এ ধরনের বক্তব্যে নোটিশদাতার (শিহাব উদ্দিন খান) অনুভূতিতেও আঘাত লেগেছে বলে আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়। নোটিশের দাবি অনুসারে প্রতিকার না পেলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য দেওয়ানি আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নোটিশদাতা।
আমির হামজার ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তি দিলেও মুফতি আমির হামজা কোনো ধরনের প্রতিবাদ জানাননি, অর্থাৎ তাঁর বক্তব্য ইতিমধ্যে অসত্য ও মানহানিকর প্রতীয়মান হয়েছে।
আরও পড়ুনআমির হামজার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুফতি আমির হামজার বক্তব্যের প্রতিবাদ জাবি প্রশাসনের
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সম্পর্কে আমির হামজার বক্তব্য ‘আবাসিক হলগুলোতে সকালে মদ দিয়ে কুলি করা হত’ বর্ণনাটি অসত্য বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া এরূপ মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা
ভ্রাতৃত্ব ও অসাম্প্রদায়িকতায় জবিতে মহালয়া উৎসব
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ চালু হয় এবং ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে এই বিভাগে প্রথম শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। সুতরাং আমির হামজা জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হওয়ার যে তথ্য প্রকাশ করেছেন, তা সত্য নয়।
পাশাপাশি আবাসিক হলগুলোতে সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করার প্রত্যক্ষ করার বর্ণনাটিও তার মনগড়া, যা অসত্য। প্রমাণসহ এমন নজির প্রশাসনের কাছে নেই। ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটানোর তার বক্তব্যটি সত্যের অপলাপ মাত্র বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষাথীর্দের আন্তঃসম্পর্কের বন্ধন সব সময়ই প্রশংসনীয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। জাবি প্রশাসন আমির হামজাকে এ ধরনের ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রদানে সতর্ক ও বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
এর আগে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে জনাব আমির হামজার একটি বক্তব্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানে তিনি দাবি করেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আবাসিক হলে সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন।
তিনি জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায়।
ঢাকা/আহসান
ঢাকা/আহসান/মেহেদী