হাঁটুতে আবারও চোট, কারভাহাল এ বছর খেলতে পারবেন তো?
Published: 28th, October 2025 GMT
গত বছর অক্টোবর থেকেই চোটের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে দানি কারভাহালকে। চোট কাটিয়ে গত রোববার এল ক্লাসিকোয় বার্সেলোনার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের ম্যাচে বদলি হিসেবে ১৯ মিনিট মাঠে ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের এই অধিনায়ক। কিন্তু গতকাল কারভাহালকে নিয়ে দুঃসংবাদ জানিয়েছে রিয়াল।
নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে ক্লাবটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘রিয়াল মাদ্রিদের চিকিৎসা বিভাগের পরীক্ষার পর জানা গেছে, আমাদের অধিনায়ক দানি কারভাহালের ডান হাঁটুর জয়েন্টে একটি ঢিলে অংশ রয়েছে। কারভাহালকে এখন আর্থ্রোস্কোপি (হাঁটুর ক্ষুদ্র অস্ত্রোপচার) করাতে হবে।’
অর্থাৎ আবারও অস্ত্রোপচার করাতে হবে কারভাহালকে। তবে অস্ত্রোপচার এবং তারপর সুস্থ হয়ে উঠতে কারভাহালের ঠিক কত দিন লাগতে পারে, তা জানায়নি রিয়াল।
ক্লাবটির সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রায় ১০ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে ৩৩ বছর বয়সী এ ডিফেন্ডারকে। বার্তা সংস্থা এএফপিও জানিয়েছে, দুই মাসের বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকতে হবে কারভাহালকে।
কারভাহালের ডান হাঁটু আগে থেকেই সমস্যায় জর্জরিত। নতুন এই চোটের অর্থ হলো, ২০২৫ সালে কারভাহালকে রিয়ালের জার্সিতে মাঠে না দেখার সম্ভাবনাই বেশি। চ্যাম্পিয়নস লিগে আগামী ৫ নভেম্বর লিভারপুলের মুখোমুখি হবে রিয়াল। একই প্রতিযোগিতায় আগামী ১০ ডিসেম্বর রিয়ালের মুখোমুখি হতে মাদ্রিদে যাবে ম্যানচেস্টার সিটি। এমন গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচে কারভাহালকে না পাওয়াটা রিয়ালের জন্য বড় দুঃসংবাদই হবে।
আরও পড়ুন১৫৬ কোটি টাকায় পিকে–শাকিরার প্রাসাদসম বাড়ি কিনছেন ইয়ামাল১ ঘণ্টা আগেশুধু রিয়াল নয়, স্পেনের জন্যও কারভাহালের মাঠের বাইরে ছিটকে পড়া দুশ্চিন্তার বিষয়। নভেম্বরে ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে জর্জিয়া ও তুরস্কের মুখোমুখি হবে ‘ই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা স্পেন। এ দুটি ম্যাচে কারভাহালকে পাবে না স্পেন।
গত বছর অক্টোবরের শুরুতে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে কারভাহালের ডান হাঁটুর দুটি লিগামেন্ট ও টেন্ডন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর অস্ত্রোপচার করাতে হয় তাঁকে। সে কারণে গত মৌসুমের বড় একটা অংশে তাঁকে মাঠে পায়নি রিয়াল।
ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে পাওয়া সেই চোট থেকে সুস্থ হয়ে গত জুলাইয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল দিয়ে মাঠে ফেরেন কারভাহাল। কিন্তু তার পর থেকেই মাংসপেশির ছোটখাটো চোটের কারণে নিয়মিত মাঠে নামতে পারেননি।
আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপে খেলতে চান মেসি৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হিজাব নিযে মন্তব্য: রাবি অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে ও বিচার চেয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
রাবি প্রশাসন ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) প্রতিনিধিরা।
আরো পড়ুন:
সুইমিংপুলে মৃত্যু: কুষ্টিয়ায় রাবি শিক্ষার্থী সায়মার অশ্রুসিক্ত বিদায়
যবিপ্রবি প্রক্টরের বিরুদ্ধে ওঠা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে তারা লিখেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) হিসেবে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন তার ফেসবুক আইডিতে দেওয়া একাধিক পোস্টে রাকসু নির্বাচনে হল সংসদে বিজয়ী নারী প্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত পোশাক, নারীর ধর্মীয় পরিচয় এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সম্পর্কে অবমাননাকর ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
পাশাপাশি তিনি পূর্বের পোস্টগুলোতে বোরকা, কাঠমোল্লা, মদ, সেক্সুয়াল রেভল্যুশন ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়া এক পোস্টে টু-কোয়াটার ও মদের বোতল হাতে নিয়ে ক্লাসে আসা এবং একটি ছাত্র সংগঠন ও সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা স্পষ্টতই উস্কানিমূলক এবং শিক্ষাঙ্গনের নৈতিক মান ও পেশাগত দায়িত্ববোধের গুরুতর লঙ্ঘন।
এ পরিস্থিতিতে রাকসুর পক্ষ থেকে চারটি মন্তব্য করা হয়েছে। এসব মন্তব্যের মধ্যে রয়েছে- একজন শিক্ষক হিসেবে ড. আ. আল মামুনের এ মন্তব্য শুধুই ব্যক্তিগত মতামত নয়, এটি শিক্ষাঙ্গনের মর্যাদা, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাস এবং শিক্ষকের দায়িত্ববোধকে চ্যালেঞ্জ করছে; তিনি নারীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ধর্মীয় অনুশাসন ও পোশাককে ব্যঙ্গ করে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন, তা হিজাব-ফোবিয়া এবং নারীবিদ্বেষী মনোভাবে উৎসাহ যোগায়, যা কোনো শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনুরূপ নয়।
বাকি দুইটি মন্তব্য হলো- রাকসুর দৃঢ় অবস্থান হলো নারীর পোশাকের স্বাধীনতা, হিজাব ও নিকাব কোনো অপরাধ নয় এবং তা পশ্চাৎপদতার চিহ্নও নয়, বরং এটি একজন নারীর নিজস্ব পরিচয়, বিশ্বাস, আত্মমর্যাদা ও শালীনতার প্রতিফলন; একজন শিক্ষক বা নাগরিকের নৈতিক অধিকার নয় কোনো ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস বা পোশাককে ব্যঙ্গ করা, এ ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেওয়া এবং শিক্ষকের শপথ ভঙ্গের সমতুল্য।
স্মারকলিপিতে তারা কয়েকটি দাবিও জানিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ড. আ. আল মামুনকে জনসম্মুখে তার এই অবমাননাকর ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে; ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষকতার শপথ, কর্মসংস্কৃতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা লঙ্ঘনের অপরাধে যথাযোগ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
অন্য দাবিগুলো হলো- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মানসিকতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে, তার সার্বিক নীতি ও নির্দেশনা অবিলম্বে ঘোষণা করা হোক; ভবিষ্যতে যেন কোনো শিক্ষক বা কর্মরত ব্যক্তি শিক্ষার্থীর ধর্মীয় পরিচয়, পোশাক বা ব্যক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে না পারেন, এই উদ্দেশ্যে সতর্কতামূলক ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সহিষ্ণুতা, সাম্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জোরদার করার লক্ষ্যে যথোপযুক্ত সেমিনার/ওরিয়েন্টেশন/বড়দিন কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী