দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় বাড়ির পাশে টংদোকানে চা, পান-সুপারি বিক্রি করতেন রেজাউল করিম (৫১)। ট্রাক্টরচালক সাদ্দাম হোসেন প্রায় প্রতিদিনই তাঁর দোকানে আসতেন। এভাবে কৃষকের জমি চাষ করে বেড়ানো সাদ্দামের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে রেজাউলের। পরস্পরের আর্থিক অনটনে একদিন সাদ্দামের পরামর্শে টংদোকান বন্ধ করে জমি চাষের কাজে যুক্ত হন রেজাউল। কয়েক দিনের মধ্যে ট্রাক্টর চালানো শিখে নিজেই ভাড়ায় নিয়ে চালানো শুরু করেন। সেটা ২০১০ সালের কথা। এরপর আয় বাড়তে থাকে রেজাউলের। খরচের পর সামান্য কিছু অর্থ সঞ্চয় করেন। সঞ্চয়ের সেই টাকায় নিজের জন্য একটি ট্রাক্টর কেনেন রেজাউল।

আজ সোমবার সকালে দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় মাঠে এসিআই মটরস থেকে দ্বিতীয়বারের মতো ‘সোনালীকা ট্রাক্টর’ কিনেছেন রেজাউল। এদিন ‘সোনালীকার বিশ্বজয়’ শিরোনামে একসঙ্গে ৩৫০টি ট্রাক্টর বিক্রি করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানোর উদ্যোগ নেয় এসিআই মটরস। সে অনুযায়ী গত রাতেই একসঙ্গে ৩৫০টি ট্রাক্টর হস্তান্তরকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

রেজাউলের মতো দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে ৩৫০ কৃষক ও উদ্যোক্তা ট্রাক্টর কিনতে এসে সেই ইতিহাসের অংশ হয়েছেন। অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম বলেন, ‘নিজের আয়ে বছর তিনেক আগে একটি ট্রাক্টর কিনেছিলাম। সেটি বড় ছেলে চালাচ্ছে। এবার ছোট ছেলের জন্য আরেকটি ট্রাক্টর কিনলাম। খুবই ভালো লাগছে এত বড় একটি আয়োজন। কোম্পানি একসঙ্গে এতগুলো মানুষকে ট্রাক্টর কেনার সুযোগ করে দিয়েছে।’

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানোর এ আয়োজনকে ঘিরে আজ সকাল থেকে দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ মাঠে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আয়োজকদের প্রতিনিধি, ট্রাক্টরের ক্রেতার পাশাপাশি ছিলেন উৎসুক সহস্রাধিক মানুষ। মাঠে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল নীল রঙের সাড়ে তিন শ ট্রাক্টর। দুপুর সাড়ে ১২টায় শতাধিক মোটরসাইকেলের বিশাল গাড়িবহর নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন এসিআই মটরসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাক্টরসের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী গৌরব সাক্সেনা। এরপর ক্রেতারা এসিআই মটরসের পতাকা হাতে ট্রাক্টরের চালকের আসনে বসেন। তার পরপরই আনন্দ–উল্লাসে ধ্বনিত হয় ‘শাবাশ বাংলাদেশ’। উৎসবের আবহ দিতে ওড়ানো হয় রঙিন কাগজ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, এসিআই মটরসের প্রধান ব্যবসায়িক কর্মকর্তা আসিফ উদ্দীন, জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক শামীম হোসেনসহ এসিআইয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত অতিথি ও সংগীতশিল্পীরা। বেলা দেড়টায় অনুষ্ঠানের মঞ্চে দ্বিতীয় পর্বে ছিল আলোচনা সভা।

আয়োজকেরা জানান, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস লিমিটেডের বিচারক কার্ল স্যাভিলে বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ট্রাক্টর সরবরাহ করে একটি রেকর্ডের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

সমাপনী বক্তব্যে এসিআই মটরসের সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, ‘আমরা কৃষির যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের পজিটিভ ব্র্যান্ডিং করতে চেয়েছি। যাঁরা এ আয়োজন থেকে ট্রাক্টর নিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বের বড় একটি আয়োজনের অংশ হয়েছেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র জ উল অন ষ ঠ ন একসঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে নার্সকে ধর্ষণের অভিযোগে চিকিৎসক কারাগারে

রাজশাহীতে এক নার্সকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

ওই চিকিৎসকের নাম আহসান হাবিব (২৯)। তার বাড়ি নওগাঁ। তবে, রাজশাহীতেই থাকেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত আল-আরাফাহ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জিডি করলেন টুকু

গোবিন্দগঞ্জে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

আহসান হাবিব ওই প্রতিষ্ঠানের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভুক্তভোগী (২৫) অন্য একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নার্স হিসেবে কর্মরত। বিয়ের প্রলোভনে আহসান হাবিব তাকে আল-আরাফাহ ক্লিনিকে নিজের চেম্বারে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।

মামলার এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রায় দুই বছর আগে ভুক্তভোগী ঢাকায় কর্মরত ছিলেন। সে সময় ফেসবুকের মাধ্যমে আহসান হাবিবের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর বিয়ের প্রলোভনে ঢাকার চাকরি ছাড়িয়ে ভুক্তভোগীকে রাজশাহী আনেন অভিযুক্ত। রাজশাহী আসার পর দুজন ভাড়া বাসায় একসঙ্গে থাকলেও ভুক্তভোগীকে বিয়ে করনেনি অভিযুক্ত। সর্বশেষ ক্লিনিকে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন আহসান হাবিব। 

এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর নগরীর রাজপাড়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে আল-আরাফাহ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

রাজপাড়া থানার পরিদর্শক আব্দুল আলিম বলেন, ‘‘ঘটনার পর ভুক্তভোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা শেষে তিনি মামলা করেন। রবিবার আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’’

এ বিষয়ে আল-আরাফাহ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। মামলায় ঘটনাস্থল হিসেবে আমাদের ক্লিনিকের নাম আছে বলে জেনেছি। এরপরই ডা. আহসান হাবিবকে ক্লিনিক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’’

ঢাকা/কেয়া/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে নার্সকে ধর্ষণের অভিযোগে চিকিৎসক কারাগারে
  • একই জমিতে একসঙ্গে ৬ ফসল
  • ভেঙে যাচ্ছে তারকা দম্পতির ১৪ বছরের সংসার?
  • আদানপ্রদানের জন্য ভারত-বাংলাদেশের এক হওয়ার প্রয়োজন নেই: ফারিণ
  • ভাঙার চিন্তা করে কেউ সংসার বাঁধে না: ফারিয়া
  • কলকাতায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ
  • খালিশপুরের মিঠাপানির শুশুক
  • ঘুম কেন এতো জরুরি?
  • শিল্পকলায় নোবেল জয়ী নাট্যকারের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’