সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে হিমাগার পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম বেঁধে দিয়েছিল ২২ টাকা। সে অনুযায়ী রাজশাহীর হিমাগারগুলোর সামনে ব্যানারও টানানো রয়েছে। অথচ সেখানেই এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১১ টাকা।

আবার সরকারের একজন উপদেষ্টা ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার ঘোষণা দিলেও সে অনুযায়ী কাজ হয়নি। যদিও রাজশাহীর ৩৭টি হিমাগারে এখনো ২ লাখ ৫ হাজার ১৮৬ মেট্রিক টন আলুর মজুত রয়েছে।

কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত আগস্টে সরকার হিমাগার গেটে ন্যূনতম ২২ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন আলু কেনার ঘোষণা দিয়েছিল। সরকারি প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

সরকার কেন আলু কিনছে না, তা জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান গত রোববার প্রথম আলোকে জানান, সরকার হিমাগার পর্যায়ে ২২ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হবে, এটা বলেছে। কিন্তু হিমাগারগুলো থেকে ওই দামে আলু কেনার কোনো ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সরকার আলু কেনার ব্যাপারে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। যে বৈঠকগুলো হয়েছে, সেখানেও এ রকম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। শুধু সাংবাদিকদের সামনে একজন উপদেষ্টা মৌখিকভাবে বলেছিলেন। সেটা বাস্তবায়ন করার কোনো নির্দেশনা জারি হয়নি।

এক কেজি আলুর উৎপাদন খরচ, হিমাগার ও পরিবহন ভাড়া এবং বস্তা ক্রয় মিলিয়ে ৩৫ টাকা পড়েছে। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১০-১১ টাকায়। প্রতি কেজিতে ২২-২৫ টাকা লোকসান। দাম কম হওয়ায় খরচ উঠছে না। সে জন্য অনেকেই হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না।—আহাদ আলী, সভাপতি, রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি।

আলুর দরপতনের ব্যাপারে শাহানা আখতার জাহান বলেন, বাজারে আলুর দরপতনের একটাই কারণ, তা হলো চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হয়েছে। যেমন রাজশাহী জেলায় গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলুর আবাদ হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে, যা পরের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর; অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ বেশি হয়েছে। আগের বছর দাম বেশি পাওয়ায় পরেরবার কৃষকেরা বেশি জমিতে আলু চাষ করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলু উৎপাদিত হয়েছিল ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৪ মেট্রিক টন, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫১৭ মেট্রিক টন হয়েছে। এর মানে, গত বছরে আলুর উৎপাদন ৯১ হাজার ৬৯৩ মেট্রিক টন বেড়েছে। একই সময় দেশের অন্য জেলাগুলোতেও চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন বেশি হয়েছে। এটিই আলুর দাম কমার মূল কারণ।

হিমাগারের গেটে টাঙানো ব্যানারে লেখা আলুর কেজি ২২ টাকা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ট র ক টন ২২ ট ক আল র দ সরক র উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক

বাঙালি মুসলমান নারীজাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের ফেসবুক পোস্টের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের এমন মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন।

আজ বৃহস্পতিবার আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজসংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দিয়েছেন। এ ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলা ও বাঙালি নারীজাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি; তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। আমাদের মনে রাখতে হবে, বেগম রোকেয়ার শিক্ষা ও সামাজিক আন্দোলন ধর্ম, বর্ণ, জাতিনির্বিশেষে বাঙালি নারীদের পরাধীনতা ও কুসংস্কারের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা ও প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মনে করে, এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়, যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দৃঢ়ভাবে বলতে চায়, বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে আমাদের সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।

আরও পড়ুনবেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ বললেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • ডিসেম্বরে ১০ দিনে প্রবাসী আয় ১২৯ কোটি ডলার
  • মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের টিকে থাকা নিয়ে নিরীক্ষকের শঙ্কা
  • চট্টগ্রাম নগরের জনসংখ্যা আসলে কত লাখ, ৩২ নাকি ৬০
  • গ্যাস চুরির অভিযোগে মুন্নু সিরামিক কারখানায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন