দৃশ্যমান বিচার ও মৌলিক সংস্কার শেষে নির্বাচন চায় এনসিপি
Published: 20th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি দৃশ্যমান বিচার ও মৌলিক সংস্কার শেষ করে নির্বাচন চায়। তবে তা অবশ্যই হতে হবে গণপরিষদ নির্বাচন। গণপরিষদ ছাড়া নতুন সংবিধান ও সংবিধানের মৌলিক সংস্কার হয় না। সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার ইফতারের আগে বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে দলটির নেতাকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেকে নূন্যতম সংস্কার করে নির্বাচন দাবি করছেন। নূন্যতম সংস্কার করে কিছু হয় না। আমাদের মৌলিক ও গুণগত সংস্কার করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রজনতা রক্ত দিয়ে এই সরকার এনেছে রাষ্ট্রের পরিবর্তনের জন্য এবং গণহত্যার বিচারের জন্য।
তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই ঐক্য আমরা ধরে রাখবো। তবে গণআন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে আপোস করে আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যে যাব না। গণআন্দোলনে পুরনো বন্দোবস্ত পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন বন্দোবস্তের যাত্রা শুরু হয়েছে। পুরনো বন্দোবস্তের অনেক উপাদান বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের মধ্যে রয়েছে। পরিবর্তনের সঙ্গে যারা তাল মেলাতে পারবে না তারা হারিয়ে যাবেন। পরিবর্তন, সংস্কার ও বিচারের মধ্যে দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যারা বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ আছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন সেই সব দলের নেতারা জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিল রয়েছে- এমন বক্তব্য দেবেন বলে প্রত্যাশা করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, সারাদেশে ছাত্র সমন্বয়কদের চরিত্রহননের চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আসছে আর মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছে। তাই সকলকে সচেতন থাকতে হবে। তবে দলের কেউ অন্যায়ের সাথে আপোস করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। দখল কিংবা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকলে বরদাশত করা হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম এনস প জ ত য় ন গর ক প র ট র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর নারান্দিয়ার বাসিন্দা শেফালী বেগম। সাভারের বাইপাইল এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে প্রায় চার ঘণ্টা কালিহাতীর এলেঙ্গায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন এই নারী। বাসে উঠতে না পেরে কর্মস্থলে যেতে তাকে উঠতে হয় পিকআপ ভ্যানে। ২০০ টাকার জায়গায় ৩৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে রওনা হন গন্তব্যে।
যাত্রা শুরুর আগে শেফালী বলেন, “গরম ও সড়কের ধুলাবালিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সড়কে চার ঘণ্টা দাঁড়িয় থেকে উপায় না পেয়ে পিকআপে করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।”
শুধু শেফালী নয়, তার মতো লাখ লাখ মানুষ আজ দিনভর ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিয়ে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ ২ ঘণ্টা, কেউ ৩ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন গণপরিবহনের জন্য।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে মহাসড়কে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ
সিরাজগঞ্জে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষ
জুলেখা বেগম বলেন, “আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। উত্তরবঙ্গ থেকে শত শত বাস আসছে, কিন্তু কোনো বাসেই পা ফেলানোর মতো জায়গা নাই। গরমও সহ্য হচ্ছে না।”
কর্মস্থলে ফিরতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের একাংশ
ইকবাল আলী বলেন, “মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়া কিছুই দেখছি না। পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।”
হারুন মিয়া নামে এক ট্রাক চালক বলেন, “সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। স্বাভাবিক সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।”
এর আগে, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হওয়ায় যমুনা সেতুর টোলপ্লাজা থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তা কমে ১৪ কিলোমিটারে আসে। এছাড়া, মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট থাকায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। সব মিলিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন যমুনা সেতা পারাপার করেছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ