৪ দফা দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 6th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বরাদ্দ করা বাজেটে ধারাবাহিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৬ মে) শতাধিক শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ রফিক ভবনের নিচে এসে সমাবেশ করেন।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘প্রহসনের বাজেট, মানি না মানব না’, ‘বৈষম্যের গদিতে, আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জবি শিক্ষার্থীরা এক ধরনের অবহেলার শিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাঠামো, আবাসন, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সুবিধা—সব ক্ষেত্রেই রয়েছে চরম ঘাটতি। অথচ দেশের অন্যান্য বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাচ্ছে শত শত কোটি টাকার বাজেট, যা প্রকৃত অর্থেই বৈষম্যের প্রতীক।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে অনশন, অবস্থান কর্মসূচি এবং জাতীয় পর্যায়ের মানববন্ধনেরও ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদে সামনে থেকেছে। গুলির মুখেও আমরা পিছু হটিনি। অথচ আজও আমাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ, নেই আবাসনের সুযোগ। আমরা কি মানুষ না? ঢাবির শিক্ষার্থীরা এসি রুমে বসে পড়াশোনা করবে, আর জবির শিক্ষার্থীরা না খেয়ে মেসে থাকবে? এটা কি ন্যায্যতা?”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এসি রুম বা চাকরি চাইনি। আমরা আমাদের শ্রম, মেধা ও যোগ্যতায় জীবন গড়তে চাই। কিন্তু আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে, আমরা আর চুপ করে থাকব না। পাগলদের ক্ষেপাবেন না, কারণ ক্ষেপা পাগল সামলানো আপনাদের সাধ্যের বাইরে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, “গত ২০ বছর ধরে জবি কেবল একটি নামধারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে টিকে আছে। মূলত এটি অবহেলার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূর্ববর্তী সরকার হোক কিংবা ইউজিসি, কেউ আমাদের নিয়ে ভাবে না। ঢাবির জন্য ৩০০–৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, অথচ আমাদের জন্য বরাদ্দ নামমাত্র! এমন বৈষম্য আর মেনে নেওয়া যায় না। প্রয়োজনে ইউজিসি এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করব। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকব।”
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ইউজিসির বাজেটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা; দ্রুত আবাসন সংকট নিরসন ও নতুন হল নির্মাণ; সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমান সুযোগ ও সুবিধা নিশ্চিতকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র বর দ দ ইউজ স
এছাড়াও পড়ুন:
পীরগঞ্জে এনসিপির ৩ সদস্যের পদত্যাগ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পীরগঞ্জ উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে ৩ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। বুধবার বিকেলে পীরগঞ্জ প্রেস ক্লাব হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জিসান, বিশাল, লেলিন, মেহেদি, শাওন, শুভ, মাহিদ ও আপন উপস্থিত ছিলেন।
পদত্যাগকারীরা হলেন– তৌফিক হোসেন, মোক্তাদির কেমি ও জাহাঙ্গীর আলম জাকির।
লিখিত বক্তব্যে তৌফিক হাসান বলেন, ‘কমিটিতে এমন ব্যক্তিদের রাখা হয়েছে যাদের অতীত কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। দলের জন্য কাজ করা, ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের উপেক্ষা করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে সাহসিকতার সঙ্গে অংশ নেওয়া নারী সংগঠকদের স্থান দেওয়া হয়নি। কমিটি করার আগে কেন্দ্রীয় কমিটি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। কিছু নেতার একক সিদ্ধান্তে কমিটি হয়েছে; যারা দলের শৃঙ্খলা ও আদর্শ রক্ষা করেননি তাদেরই সমন্বয়ক পদ দেওয়া হয়েছে। দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, এ কমিটির গঠন প্রক্রিয়া আমাদের মূল্যবোধ, নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গত ৫ জুন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আকতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম স্বাক্ষরিত ২৫ সদস্যের উপজেলা কমিটি করা হয়। এতে এ এস মজনুকে আহ্বায়ক এবং রাকিব মিয়া, রাকিবুল ইসলাম রিজু ও মোদাব্বেরুল ইসলামকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়। কমিটি প্রকাশের ২০ দিনের মাথায় তিনজন সদস্য পদত্যাগ করলেন।