বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বরাদ্দ করা বাজেটে ধারাবাহিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৬ মে) শতাধিক শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ রফিক ভবনের নিচে এসে সমাবেশ করেন।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘প্রহসনের বাজেট, মানি না মানব না’, ‘বৈষম্যের গদিতে, আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জবি শিক্ষার্থীরা এক ধরনের অবহেলার শিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাঠামো, আবাসন, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সুবিধা—সব ক্ষেত্রেই রয়েছে চরম ঘাটতি। অথচ দেশের অন্যান্য বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাচ্ছে শত শত কোটি টাকার বাজেট, যা প্রকৃত অর্থেই বৈষম্যের প্রতীক।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে অনশন, অবস্থান কর্মসূচি এবং জাতীয় পর্যায়ের মানববন্ধনেরও ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদে সামনে থেকেছে। গুলির মুখেও আমরা পিছু হটিনি। অথচ আজও আমাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ, নেই আবাসনের সুযোগ। আমরা কি মানুষ না? ঢাবির শিক্ষার্থীরা এসি রুমে বসে পড়াশোনা করবে, আর জবির শিক্ষার্থীরা না খেয়ে মেসে থাকবে? এটা কি ন্যায্যতা?”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এসি রুম বা চাকরি চাইনি। আমরা আমাদের শ্রম, মেধা ও যোগ্যতায় জীবন গড়তে চাই। কিন্তু আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে, আমরা আর চুপ করে থাকব না। পাগলদের ক্ষেপাবেন না, কারণ ক্ষেপা পাগল সামলানো আপনাদের সাধ্যের বাইরে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, “গত ২০ বছর ধরে জবি কেবল একটি নামধারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে টিকে আছে। মূলত এটি অবহেলার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূর্ববর্তী সরকার হোক কিংবা ইউজিসি, কেউ আমাদের নিয়ে ভাবে না। ঢাবির জন্য ৩০০–৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, অথচ আমাদের জন্য বরাদ্দ নামমাত্র! এমন বৈষম্য আর মেনে নেওয়া যায় না। প্রয়োজনে ইউজিসি এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করব। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকব।”

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ইউজিসির বাজেটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা; দ্রুত আবাসন সংকট নিরসন ও নতুন হল নির্মাণ; সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমান সুযোগ ও সুবিধা নিশ্চিতকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র বর দ দ ইউজ স

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আকাশি বিলে টর্নেডো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার আকাশি বিলে টর্নেডোর উৎপত্তি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের জেঠাগ্রামের আকাশি মাঠে প্রায় তিন মিনিট ধরে টর্নেডো চললেও কোনো ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, বেলা দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে আকাশি মাঠে টর্নেডোর মতো একটি কুণ্ডলী দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্কও সৃষ্টি হয়। মানুষ ছোটাছুটি শুরু করেছিলেন। দুই থেকে তিন মিনিট স্থায়ী ছিল এটি। অনেকে খলার মধ্যে ধান শুকাচ্ছিলেন। ধানের খড় আকাশে উড়ছিল। কুণ্ডলীর ওপর কালো হয়ে গিয়েছিল। দুই থেকে তিন মিনিট পর কুণ্ডলীটি আকাশের অনেক ওপরে উঠে মিশে যায়। তবে এটি গ্রামের ভেতরে ঢোকেনি। তাই কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন জানান, অনেকে মুঠোফোনে টর্নেডোর ভিডিও করেন। টর্নেডোর কাছাকাছি এলাকায় কোনো মানুষ ছিলেন না। উৎপত্তিস্থলে খড় উড়ছিল। টর্নেডোর ওপরের অংশ কালো হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ থাকার পর একসময় এটি আকাশে মিশে যায়। বিকেলের পর টর্নেডোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, কৃষকের ধান শুকানোর খলার পাশে আকাশি মাঠে ঘূর্ণমান কুণ্ডলীর উৎপত্তি হয়। মাটি ও খড় চারদিক দিয়ে ঘুরছিল। ধীরে ধীরে একটি কুণ্ডলী আকাশের দিকে উঠে গেছে। অনেকটা ফানেলের আকার ধারণ করে। আকাশে তখন চারপাশ অন্ধকারের মতো হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, গোর্কণের জেঠাগ্রামের আকাশি মাঠে এটির উৎপত্তি হয়। তবে সেই মাঠে কোনো পানি ছিল না। টর্নেডো হলেও ফসল, কৃষিজমি ও কৃষকের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাছরিন জানান, কয়েক মিনিট টর্নেডো স্থায়ী হলেও আকাশের দিকে চলে যায়। আকাশি মাঠে টর্নেডোর উৎপত্তি হয়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ