যশোরের কেশবপুরে ১৭ মামলার আসামি যুবলীগের এক কর্মীর বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মধ্যকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে এক নারী আহত হয়েছেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

যুবলীগের ওই কর্মীর নাম জামাল উদ্দিন শেখ (৩৪)। তিনি ওই গ্রামের গনি শেখের ছেলে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামাল উদ্দিন আত্মগোপনে আছেন। বাড়িতে তাঁর মা–বাবা থাকেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে জামাল উদ্দিনের বাড়িতে ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছিল। সেখানে কাজ করছিলেন শাহানারা বেগম (৫০) নামের এক নারী শ্রমিক। সকাল ৯টার দিকে তিনি ধানের গোলার ভেতর লাল টেপে মোড়ানো একটি বস্তু দেখতে পান। তিনি সেটি তুলে নিয়ে বাড়ির বাইরে ফেলে দিলে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে শাহানারা বেগম আহত হন। পরে তাঁকে কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ওই খবর শুনে কেশবপুর থানা–পুলিশের সদস্যরা মধ্যকুল গ্রামের ওই বাড়িতে যান। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিস্ফোরিত দ্রব্যের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনোয়ার হোসেন জানান, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে। বর্তমানে তিনি পলাতক। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শবপ র

এছাড়াও পড়ুন:

সেপটিক ট্যাংকে ভাসছিল দুই শিশুর লাশ

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় পৌরসভায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পৌরসভার পশ্চিম ছাগলনাইয়ার সাতমন্দির রোড এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। 

ছাগলনাইয়া থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেছেন। মৃত দুই শিশুর বাবাই প্রবাসে থাকেন।

মৃতরা হল– ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পূর্ব শিলুয়া গ্রামের কাতার প্রবাসী ইকবাল হোসেনের ছেলে ফয়সাল ফারাবী (৯) ও ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী সামছুল হকের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (৮)। তাদের পরিবার ছাগলনাইয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাত মন্দির রোড এলাকার শেখ ভবনে ভাড়া বাসায় থাকে। এদের মধ্যে ফারাবী স্থানীয় ইম্পেরিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এবং লিহান ছাগলনাইয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত দুই শিশু খেলার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন ভবনে যায়। সেখানে খেলার সময় অসাবধানতাবশত তারা হয়তো সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিকেলে দুই শিশু খেলার জন্য বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যার পর তারা বাসায় না ফিরলে স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাতে স্থানীয় এক যুবক নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকের মুখে এক জোড়া জুতা দেখতে পায়। পরে পানিতে ভর্তি ট্যাংকের ভেতরে আলো দিয়ে দুই শিশুকে পড়ে থাকতে দেখে। দ্রুত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে রাত ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগিতায় দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দুই শিশুর এমন মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার দুটির আহাজারিতে ভরে উঠেছে বাতাস। মর্মান্তিক এ ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। স্থানীয় লোকজন এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলছেন না। তাদের অভিযোগ, নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের অবহেলার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেফটি ট্যাংকটির ঢাকনা খোলা ছিল। এটি বন্ধ রাখলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো যেতো।

ছাগলনাইয়া থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুই শিশু খেলার ছলে অসাবধানতাবশত সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেপটিক ট্যাংকে ভাসছিল দুই শিশুর লাশ