যশোরে ১৭ মামলার আসামি যুবলীগের কর্মীর বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 7th, May 2025 GMT
যশোরের কেশবপুরে ১৭ মামলার আসামি যুবলীগের এক কর্মীর বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মধ্যকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে এক নারী আহত হয়েছেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যুবলীগের ওই কর্মীর নাম জামাল উদ্দিন শেখ (৩৪)। তিনি ওই গ্রামের গনি শেখের ছেলে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামাল উদ্দিন আত্মগোপনে আছেন। বাড়িতে তাঁর মা–বাবা থাকেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে জামাল উদ্দিনের বাড়িতে ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছিল। সেখানে কাজ করছিলেন শাহানারা বেগম (৫০) নামের এক নারী শ্রমিক। সকাল ৯টার দিকে তিনি ধানের গোলার ভেতর লাল টেপে মোড়ানো একটি বস্তু দেখতে পান। তিনি সেটি তুলে নিয়ে বাড়ির বাইরে ফেলে দিলে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে শাহানারা বেগম আহত হন। পরে তাঁকে কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই খবর শুনে কেশবপুর থানা–পুলিশের সদস্যরা মধ্যকুল গ্রামের ওই বাড়িতে যান। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিস্ফোরিত দ্রব্যের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ার হোসেন জানান, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা আছে। বর্তমানে তিনি পলাতক। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক শবপ র
এছাড়াও পড়ুন:
নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
কুষ্টিয়ায় নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় একজোট হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলার চিকিৎসকরা। আজ মঙ্গলবার জরুরি সভা শেষে তারা এ সিদ্ধান্ত জানান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক নাসিমুল বারী বাপ্পী। মারধরের শিকার নারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানা সোমবার রাতেই বাড়ি ফিরেছেন। রাত সাড়ে ১১টার পর তাঁর স্বামীর জিম্মায় তাঁকে থানা থেকে হস্তান্তর করে পুলিশ। রাতেই তাঁকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, নারী চিকিৎসক হেনস্তার প্রতিবাদে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার কক্ষে জরুরি সভা হয়েছে। এতে দুই হাসপাতালসহ জেলায় কর্মরত অন্তত ৮০ জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার দুপুরে লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে একদল নারী-পুরুষ পূর্বপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধভাবে চিকিৎসক শারমিন সুলতানা এবং তাঁর স্বামী মোহাম্মদ মাসুদ রানাকে মারধর করে। এ সময় তাদের শ্লীলতাহানি, লাঞ্ছিত ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তারা।
এতে শারমিন সুলতানা আহত হন। তাঁর কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে। গুম ও খুনের উদ্দেশ্যে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিরোধে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় জেলার সর্বস্তরের চিকিৎসক ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত এবং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান চিকিৎসকরা। অন্যথায় বৃহত্তর ও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, নারী চিকিৎসককে যারা মারধর করেছে, তারা নিশ্চিত করতে পারেনি যে, তিনি তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কোনো প্রমাণও দেখাতে পারেননি। চিকিৎসক দম্পতি মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুয়া ঘটনায় মারধরের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসকের স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মাসুদ রানা। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করব।’
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহরের অর্জুনদাস আগরওয়ালা সড়কে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ একাধিক ক্লিনিকে রোগী দেখেন চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। সোমবার দুপুরে লাইফ ডায়াগনস্টিকের চেম্বারে যাওয়ার পর সেখানে অবস্থান করা একদল নারী তাঁর ওপর হামলা করে। ১৫ থেকে ২০ জন তাঁকে টেনেহিঁচড়ে সড়কের ওপর নিয়ে যায়।
সেখানে চুলের মুঠি ধরে চিকিৎসকের ওপর হামলা করে। কয়েকজন তাঁর পোশাক ছিঁড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। প্রতারণার নানা অভিযোগ তুলে কয়েকজন মারধরও করে। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে এসে স্বামীও মারধরের শিকার হন। পুলিশ গিয়ে এ দম্পতিকে উদ্ধার করে। তাদের সঙ্গে মারধর করা নারীরাও থানায় যান।