আশুলিয়ায় পরিত্যক্ত ব্যাগ থেকে দেশীয় অস্ত্র, ককটেল উদ্ধার
Published: 8th, May 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় একটি পরিত্যক্ত ব্যাগ থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ পাঁচটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে আশুলিয়ার রুপায়ন মাঠ এলাকার নূরানী মার্কাজ মাদ্রাসার পাশে একটি বাউন্ডারি ভেতরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাব আল হোসাইন বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাউন্ডারি ভেতরে একটি ব্যাগ দেখতে পাই। পরে ব্যাগে তল্লাশি করে দুটি রামদা, পাঁচটি ককটেল, দুটি কার্তুজ ও একটি পিস্তল সাদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশে অভিযান চালানো হচ্ছে।’’
আরো পড়ুন:
মির্জাপুরে ট্রাকের পেছনে পিকআপের ধাক্কা, নিহত ৩
লোহাগড়ায় চাচাতো ভাইয়ের হাতে কৃষক খুন
ঢাকা/সাব্বির/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ধুলার ওপরই চলছে কার্পেটিং
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতসংলগ্ন সড়কের কাজ চলছে দায়সারা। সড়কের কাজে প্রাইম কোট দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এখানে তা মানা হয়নি। ধুলাবালুর ওপর নামমাত্র কার্পেটিং করেই কাজ চলছে বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ। তাদের ভাষ্য, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কয়েকবার তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। অদৃশ্য শক্তিবলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনরাত এই নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্বদিকে হোসেনপাড়া বাজার ধোলাই মার্কেট পর্যন্ত এই সড়কটির দৈর্ঘ্য পাঁচ কিলোমিটার। এলাকাবাসীর কাছে এটি পরিচিত মেরিন ড্রাইভ সড়ক হিসেবে। সম্প্রতি ‘বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে’র আওতায় ৯ কোটি ৬১ লাখ টাকায় এই সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন। কবে দরপত্র ও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, এসব বিষয়ে তথ্য জানতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
১৬ ফুট চওড়া সড়কটিতে ৪০ মিলিমিটার কার্পেটিং করার কথা রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ জায়গায়ই তা মানা হয়নি। কোথাও কোথাও দেওয়া হয়নি প্রাইম কোট পর্যন্ত। পাঞ্জুপাড়া গ্রামের দর্জি মোহাম্মদ নাঈমের ভাষ্য, ঠিকাদারের লোকজন যে প্রাইম কোট দিয়েছে, তা নামেমাত্র। তার ওপর যে কার্পেটিং করা হয়েছে, এর ফিনিশিংও ভালো হয়নি। তিনি মনে করেন, এই রাস্তা নির্মাণের নামে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। তাদের কোনোই উপকারে আসবে না সড়কটি। বছর পার হতে না হতেই সড়কটি নষ্ট হয়ে যাবে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা এই সড়কটি কয়েক দশক ধরে উপকূলবাসীকে সিডর-আইলার মতো বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। কুয়াকাটা ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে এটি মেরিন ড্র্রাইভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ব্যস্ততম এই সড়কটি সংস্কারের শুরু থেকেই অনিয়ম চলছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কয়েক দফায় তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের দাবি, অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যেন ভালোভাবে সংস্কার করা হয়।
যেভাবে সংস্কার চলছে, এতে সড়কটি এক বছরও চলাচলযোগ্য থাকবে না। এমন মন্তব্য করেন হোসেনপাড়ার বাসিন্দা মো. মনির হোসেন। পেশায় ভ্যানচালক এই ব্যক্তির ভাষ্য, ঠিকাদারের লোকজন শুরু থেকেই দিনে-রাতে মিলিয়ে রাস্তার কাজ করছে, সাধারণ মানুষ যাতে (অনিয়ম) দেখতে না পারে। খোয়ার ওপর অনেক বালু আছে। সেই বালুর ওপরে প্রাইম কোট দিয়েছে। অপরিচ্ছন্ন সড়কের ওপর প্রাইম কোট দেওয়ায় তা টিকবে না। তিনি বলেন, যে পরিমাণ প্রাইম কোট দেওয়ার কথা, তার অর্ধেকও দেওয়া হচ্ছে না। এত বছর পরে এমন রাস্তা চায় না এলাকাবাসী।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, কুয়াকাটার সর্বব্যস্ত সড়কটি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কোনো মেরিন ড্রাইভ না থাকায় এই সড়কটিই মেরিন ড্রাইভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সংস্কারকাজের শুরু থেকেই অনিয়ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে তারা (ঠিকাদার) দিন-রাতে অনিয়ম করে যাচ্ছেন, কেউ দেখছে না। কুয়াকাটাবাসীর স্বার্থে রাস্তাটির কাজ সুন্দরভাবে শেষ করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী বা তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাদের সহঠিকাদার (সাব-কন্ট্রাক্টর) ফোরকান হোসেনের দাবি, এলজিইডি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুসারে সড়ক পাকাকরণের কাজ হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার এসব বিষয়ে কথা হয় এলজিইডি কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর দাবি, ওই সড়কের পাকাকরণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তখন কিছু সময়ের জন্য কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। কিছু জায়গার কার্পেটিং তিনি ৪০ মিলিমিটারের কম পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, সেগুলো ঠিক করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের শিডিউল অনুযায়ী কাজ শেষ করতেও বলেছেন।