৪০ হাজার বৃদ্ধ বাবা–মায়ের জীবন বদলে দিয়েছেন নজরুল ইসলাম
Published: 11th, May 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের নজরুল ইসলাম (৬৫) মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি মায়ের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন। অসুস্থ মায়ের গোসল করানো থেকে শুরু করে প্রস্রাব–পায়খানা পরিষ্কার, খাওয়ানো— সবকিছুই করেছেন নিজ হাতে। ২০১৭ সালে মা মারা যাওয়ার পর নিজের জীবন উৎসর্গ করেন অসুস্থ, অসহায় ও বৃদ্ধ বাবা–মায়েদের সেবায়।
মায়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকে জন্ম নেয় ‘মা–বাবার সেবাকেন্দ্র’। এ কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়ান প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে সঙ্গে নিয়ে। সেবাদান কার্যক্রমে তিনি নিজের উপার্জন এবং বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ ব্যয় করছেন।
বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে রবিবার (১১ মে) নান্দিয়া সাঙ্গুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত ফ্রি চিকিৎসাসেবাকেন্দ্রে ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিভিন্ন বয়সী রোগীদের সেবা দিয়েছেন। চিকিৎসা পেয়েছেন অন্তত ৩ হাজার মানুষ। বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে ওষুধও।
নজরুল ইসলাম জানান, এ বছর ময়মনসিংহ, খুলনা, রাজশাহী, নাটোর, নেত্রকোনা, গফরগাঁও, নরসিংদী, শেরপুর, মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১০ হাজার বৃদ্ধ বাবা–মাকে সেবা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ ঘরছাড়া ছিলেন, কেউ অতি মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন। চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, “মায়ের মৃত্যুর পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম— এই দেশের আর কোনো বৃদ্ধ বাবা–মা অবহেলার শিকার হবেন না, যতটুকু পারি পাশে থাকব। এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০ হাজার বৃদ্ধ মা–বাবার সেবা করতে পেরেছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, “নজরুল ভাইয়ের কাজ দেখে আমিও মায়ের সেবায় মনোনিবেশ করেছি। তিনি শুধু আমাদের গ্রামের নয়, সারা দেশের অনুপ্রেরণা।”
মাওনার আলহেরা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো.
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, “নজরুল ইসলাম যে কাজ করছেন, তা সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার কাজকে অব্যাহত রাখতে সরকারি সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।”
ঢাকা/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নজর ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল ভাই-বোনের
পাবনার ফরিদপুরে বড়াল নদীতে গোসল করতে নেমে তিন্নি খাতুন (১১) ও জোবায়ের আহমেদ (৭) নামে দুই ভাইবোনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সম্পর্কে চাচাত ভাইবোন। নিহত তিন্নি ফরিদপুর উপজেলার উত্তর থানাপাড়া এলাকার আবু সামা কাউন্সিলরের মেয়ে এবং জোবায়ের একই এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে।
আজ শুক্রবার দুপুরে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মুরাদ হোসেন জানান, পরিবারের অজান্তে বেলা দেড়টার দিকে বাড়ির পাশে বড়াল নদীতে গোসল করতে নামে দুই ভাইবোন। সাঁতার না জানার কারণে তারা পানিতে তলিয়ে যায়। তাদের দেখা না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে স্বজন ও এলাকাবাসী। কিছুক্ষণ পর নদীতে তল্লাশি চালিয়ে তাদের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের দ্রুত গোপালনগর সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় উভয় পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত জামান জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।