অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ব্যাংকে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে বরিশালের সাবেক এমপি সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা ও তাঁর স্বামী মোশারফ হোসাইন সরদারের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম মামলা করেন রুবিনার বিরুদ্ধে এবং সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন মামলা করেন মোশারফের বিরুদ্ধে। দুদক ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলা দুটি করা হয়।

গতকাল এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, সাধারণত দেখা যায়, স্বামীর সহায়তায় স্ত্রী দুর্নীতি করেছেন বা স্বামীর দুর্নীতির টাকায় স্ত্রী সম্পদের মালিক হয়েছেন। কিন্তু এ ঘটনায় দেখা গেছে, স্ত্রী রুবিনার সহায়তায় স্বামী মোশারফ দুর্নীতি করেছেন এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এজাহারে বলা হয়, রুবিনার নামে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। তাঁর নিজ নামের ১০টি ব্যাংক হিসাবে ১৩৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা জমা ও ১৩৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা উত্তোলনসহ মোট ২৭৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ছিলেন। 

মোশারফের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ২৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর নামের তিনটি ব্যাংক হিসাবে ১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জমা এবং ১৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৩৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানে কোনো চাকরি বা ব্যবসার তথ্য পাওয়া যায়নি। এমপি স্ত্রীর সহায়তায় মোশারফ দুর্নীতির মাধ্যমে ওই সম্পদের মালিক হন। স্বামীকে দুর্নীতিতে সহায়তা করার অভিযোগে এই মামলায় স্ত্রী রুবিনাকেও আসামি করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিপিএলের পাঁচ আসরে ১৪০ সন্দেহজনক ঘটনা

শুধু গত পাঁচ আসরেই স্পট ফিক্সিং হয়েছে, এমন সন্দেহ করার মতো ঘটনা ১৪০টির মতো। এবারের মৌসুমে এ রকম ঘটনা ছিল ৩৬টি। সন্দেহভাজন স্থানীয় ও বিদেশি খেলোয়াড়ের সংখ্যা ৬০-এর বেশি, কারও কারও নামে অভিযোগ এসেছে দু-তিনবারও।

ছোট্ট এ পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, স্পট ফিক্সিংয়ের বিষবাষ্প দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল) কতটা ছেয়ে ফেলেছে।

ব্যাপ্তিটা টাকার অঙ্কেই জানা যাক। বাংলাদেশে বেটিং অবৈধ হলেও অনেক দেশেই বৈধ। বেটিং ওয়েবসাইটগুলোতে দেওয়া থাকে বিপিএলের ম্যাচের লিংক; বিপিএলের লোগোসহ আগে থেকেই যেগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচার করে সেসব ওয়েবসাইট। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিদেশে বেটিংয়ের বৈধ বাজারে প্রতিটি বিপিএল ম্যাচকে ঘিরে ৫০-৬০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়। অবৈধ বাজারে অঙ্কটা এর চেয়ে ৯-১০ গুণ বেশি। অর্থাৎ বিপিএলের একটি ম্যাচের বেটিংকে কেন্দ্র করে সব মিলিয়ে ৫-৬ কোটি ডলারের লেনদেন চলে।

* সর্বশেষ আসরেই ৩৬টি অভিযোগ
* সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৪টি ফ্র্যাঞ্চাইজির
* পাঁচ আসরে ৬০ জনের বেশি সন্দেহভাজন খেলোয়াড়
বিপিএল: ‘বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত লিগ’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতি দমন ইউনিট নিয়মিতই চোখ রাখে বিপিএলের ওপর। প্রতিটি আসরেই তারা সন্দেহজনক ঘটনা এবং সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের তালিকা পাঠায় বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের কাছে। ২০১৩ সালের বিপিএল ব্যতিক্রম, নইলে এসব ঘটনা খতিয়ে দেখার কার্যকর উদ্যোগ এরপর আর তেমন দেখা যায়নি। ২০১৩ সালেও মূলত আইসিসির চাপেই তদন্ত করে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে অনীহা বা অপারগতা এবং কখনো কখনো উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে সামনে আসেনি অনেক কিছুই। বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনা ঘটছে, আইসিসি থেকে বিসিবির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সেগুলো জানানো হচ্ছে অথচ তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না—বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সংশ্লিষ্টদের কাছে বিপিএল এরই মধ্যে ‘বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হিসেবে দুর্নাম কুড়িয়ে ফেলেছে।

আরও পড়ুনটনি কোজিয়ার যা বলেছিলেন, সেটিই সত্যি হয়েছে১৩ ঘণ্টা আগেআবারও বিসিবির তদন্ত কমিটি

গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সর্বশেষ একাদশ বিপিএলে ওঠা স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তদন্তে অবশ্য দৃশ্যমান উদ্যোগ নিয়েছে ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি। আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. খালেদ এইচ চৌধুরী এবং সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম। শাকিল কাসেম ২০১৩ সালের বিপিএলের ফিক্সিং নিয়ে গঠিত বিসিবির ট্রাইব্যুনালেরও সদস্য ছিলেন।

সর্বশেষ বিপিএল নিয়েই তদন্ত শুরু করেছিল বিসিবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সা‌বেক এম‌পি রুবিনা ও তার স্বামী মোশারফের বিরুদ্ধে মামলা
  • বিপিএলের পাঁচ আসরে ১৪০ সন্দেহজনক ঘটনা