স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কোনো কাজে প্রথমেই ভবন বানানো হয়
Published: 17th, May 2025 GMT
লুটেরা এবং মাফিয়া শ্রেণি স্বাস্থ্য খাতের অন্যতম সমস্যা বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, এরা (লুটেরা এবং মাফিয়া শ্রেণি) স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কোনো কাজ করতে বসলে প্রথমেই বিল্ডিং (ভবন) বানায়। গ্রামে গেলে দেখা যাবে এসব বিল্ডিং খালি। সেখানে ডাক্তার নেই, নার্স নেই, ওষুধ নেই।
আজ শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বাস্থ্য কমিশন রিপোর্ট: বাস্তবায়নের পথনির্দেশনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার মূল আলোচক ছিলেন ফরহাদ মজহার। এই সভার আয়োজক ‘সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ নামের একটি নাগরিক সংগঠন।
চীন কেন বাংলাদেশকে হাসপাতাল বানিয়ে দেবে—তা নিয়ে সভায় প্রশ্ন তোলেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, বিনিয়োগের বিপক্ষে তাঁরা নন। তবে বিনিয়োগের নাম করে অবাধ বাজারব্যবস্থা অনুসরণ করে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারকে প্রমাণ করতে হবে বিনিয়োগ যেটা দেশে আনা হচ্ছে, তার ফলে জনগণ উপকৃত হচ্ছে।
সামাজিক যেসব কারণে অসুস্থতা হয়, তার উল্লেখ স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে নেই বলেও উল্লেখ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বলতে, ওষুধ বলতে কী বোঝায়, সেই প্রশ্ন নতুন করে তুলতে হবে। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। মেডিকেলাইজেশনকে (শুধু চিকিৎসার কথা ভাবা) স্বাস্থ্য বলে না, হাসপাতাল স্থাপন করলেই স্বাস্থ্য বলে না।
কোনো সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের ‘স্পিরিট’ (চেতনা) ধারণ করেনি উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট যেসব কমিশনগুলোতে নেই, সেগুলো বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট নারী ও শ্রম কমিশনের প্রতিবেদন কিছুটা রয়েছে। বাকিদের প্রতিবেদন বিদেশি সংস্থার কারিগরি প্রতিবেদনের মতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের একটি মন্তব্যের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘সেখানে তিনি বলছেন যে না, আমাদের কাছে ম্যান্ডেট.
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘এই যে কথাগুলো, এটা মারাত্মক রকম ভয়ংকর। এটা শেলের মতো আমাদের বুকে এসে বিঁধেছে। আমরা কি বাংলাদেশকে বিদেশে বিক্রি করার জন্য গণ-অভ্যুত্থান করেছি।’
‘স্বাস্থ্য বলতে শুধু চিকিৎসাকে বুঝেছেন’
ঢাকার হাসপাতালে মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ চিকিৎসার জন্য ১০ দিন থাকলে তার পরিবার দরিদ্র হয়ে যায় বলে আলোচনা সভায় মন্তব্য করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, যত দিন কৃষি সংস্কার করা না হবে, তত দিন সঠিক স্বাস্থ্যনীতি করা সম্ভব হবে না।
‘স্বাস্থ্য কমিশন রিপোর্ট: বাস্তবায়নের পথনির্দেশনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ নামের একটি নাগরিক সংগঠনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র স ব স থ য বল
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ