এখন থেকে ৩০ বছর আগে নির্মাণ করা হয় কুমিল্লার দৌলতপুরের মুকুন্দি গ্রামে একটি সেতু। ২০১৫ সালে সেতুর দুটি অংশ ধসে পড়ে। এরপর রেলিং ভেঙে যায়, পিলারে ফাটল ধরে, আর পাটাতনের বড় অংশ খসে পড়ে। সেতুর এমন জরাজীর্ণ ও ভগ্নদশার কারণে ‘জীবন’ হাতে নিয়ে ছয় গ্রামের মানুষ নিত্য যাতায়াত করছে। 

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ এক দশকেও জনপ্রতিনিধি কিংবা স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ কেউই কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংস্কারের। ফলে সেতুটি এখন কার্যত চলাচলের অযোগ্য। তবে বিকল্প পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। 

এই সেতু দিয়েই প্রতিদিন দৌলতপুর ইউনিয়নের মুকুন্দি, কাউয়াদি, ভবানীপুর, তুলাতলী, সাধারদিয়া ও নতুনবাজার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। আশপাশে রয়েছে একাধিক স্কুল ও মাদ্রাসা। প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই সেতু পার হয়ে স্কুলে যায়। অভিভাবকরা শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন—কখন যেন একটি দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবন ও জীবিকা এই সেতুর ওপর নির্ভরশীল। কৃষকেরা ফসল নিয়ে বাজারে যেতে বাধ্য হন এই ভাঙা সেতু পার হয়ে। সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল একরকম বন্ধই হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় এলাকা থেকে বাজার কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়াও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, পাঁচ বছর পর পর নির্বাচনের সময় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ব্রিজটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ তা বাস্তবায়ন করেননি। এর মধ্যে একবার গ্রামের মানুষ নিজেরাই মসজিদের দানের টাকায় অস্থায়ীভাবে কিছুটা সংস্কার করেছিলেন, কিন্তু সেটা কোনো স্থায়ী সমাধান ছিল না।

শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অনেক দিন ধরে এই সেতু ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত এই সেতু সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সেতুর এমন করুণ চিত্র নিয়ে দৌলতপুর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের ভাষায়, এটি শুধু একটি সেতু নয়, এই অঞ্চলের জীবনযাত্রার একমাত্র মাধ্যম। প্রতিদিন স্কুলপড়ুয়া শিশু, বৃদ্ধ মানুষ, রোগী, কৃষক ও গৃহবধূরা ভাঙা কাঠামোর ওপর পা রেখে জীবন বাজি রেখে চলাচল করছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলার প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ব্রিজটি সম্পর্কে সম্প্রতি তিনি অবগত হয়েছেন। 

সেতুটি চলাচলের জন্য অনুপযোগী স্বীকার করে তিনি জানান, দ্রুতই পুনর্নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রুবেল মজুমদার/ইভা

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই স ত

এছাড়াও পড়ুন:

জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।

এর আগে গত ১০ আগস্ট রাতে খসড়া ভোটার তালিকা ও খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে যেসব শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় আসেনি তাঁদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়। যাচাই–বাছাই শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ করেছে কমিশন।

কোন হলে কত ভোটার

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী ২১টি আবাসিক হলে মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ৫ হাজার ৮৬০, আর ছাত্রী ভোটার ৬ হাজার ০৫৯।

ছাত্র হল

আলবেরুনী হলে ২১১, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৪১, শহীদ সালাম–বরকত হলে ২৯৯, মওলানা ভাসানী হলে ৫২১, ১০ নম্বর হলে ৫৪০, শহীদ রফিক–জব্বার হলে ৬৫৬, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫৭, ২১ নম্বর হলে ৭৫২, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯৪, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ৯৫৪, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৭৭ জন।

ছাত্রী হল

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৮২, জাহানারা ইমাম হলে ৪০০, প্রীতিলতা হলে ৪০২, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪১৭, সুফিয়া কামাল হলে ৪৬০, ১৩ নম্বর হলে ৫৩২, ১৫ নম্বর হলে ৫৭৬, রোকেয়া হলে ৯৫৭, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৮০৮, বীর প্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন।

আজ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং আগামীকাল মঙ্গলবার একই সময়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। তবে প্রার্থীকে নিজে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হবে।

মনোনয়নপত্রের নির্দেশনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সাত দফা নির্দেশনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে রয়েছে—

১. একজন প্রার্থী একাধিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

২. প্রতিটি মনোনয়নপত্রে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থকের স্বাক্ষর, শিক্ষাবর্ষ ও বিভাগ উল্লেখ করতে হবে।

৩. একই ব্যক্তি একাধিক প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থক হতে পারবেন না (কার্যকরী সদস্য পদ ছাড়া)। কার্যকরী সদস্য পদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয়জনের (তিন নারী, তিন পুরুষ) প্রস্তাবক বা সমর্থক হওয়া যাবে।

৪. মনোনয়ন জমার সময় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র বা ছবিযুক্ত লাইব্রেরি কার্ড/ইনডেক্স কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।

৫. প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে সব পাওনা পরিশোধের প্রমাণ দিতে হবে।

৬. মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে (দুই মাসের বেশি পুরোনো ছবি গ্রহণযোগ্য নয়)।

৭. প্রতিটি হলে মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের জন্য পৃথক রেজিস্ট্রার খাতা সংরক্ষণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ