পাল্টা পদক্ষেপ নয়, কূটনৈতিক সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে
Published: 18th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ থেকে ভারতের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারত সরকার যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা দুই দেশের বাণিজ্যের জন্য ভালো খবর নয়। দুই দেশের মানুষের জন্যও এটা ভালো পদক্ষেপ নয়। এতে আঞ্চলিক বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে। ভারতের এই বিধিনিষেধের ফলে এখন আমাদের বাণিজ্য ব্যয় বেড়ে যাবে। কারণ, এখন অনেক পথ ঘুরে ভারতে পণ্য রপ্তানি করতে হবে। আগে সহজে বিভিন্ন স্থলবন্দর ব্যবহার করে দেশটিতে পণ্য পাঠানো যেত। কয়েক বছর ধরে ভারতে আমাদের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা সাফটার আওতায় দেশটিতে আমাদের রপ্তানি বাড়ছিল। এখন সেখানে ভাটা পড়তে পারে।
আমার মনে হচ্ছে, আমরা পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মাধ্যমে এগোচ্ছি। প্রথমে তারা ট্রান্সশিপমেন্ট–সুবিধা বাতিল করল। পরে আমরা স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলাম। যদিও সুতা আমদানি নিয়ে বস্ত্রকল ও পোশাকশিল্পের মালিকদের মধ্যে দুই রকম বক্তব্য রয়েছে। স্থানীয় শিল্প হয়তো এতে লাভবান হবে। তারপরও যেকোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সব দিক ভালোভাবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
নতুন করে ভারত যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার বিপরীতে আমাদের পাল্টা পদেক্ষপ নেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, আমাদের সেই বাজার সক্ষমতা (মার্কেট পাওয়ার) নেই। নিজেদের ক্ষতি করে অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা করা যাবে না। তাই এখন পাল্টা পদক্ষেপ না নিয়ে কূটনৈতিকভাবে এই বাধা দূর করার চেষ্টা করা উচিত। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে, তবে এটা দুর্বলতা নয়। কারণ, ভারত থেকে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়।
চীনের সঙ্গেও আমাদের অনেক বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে। কিন্তু এটা কোনো সমস্যা নয়। রপ্তানির জন্য প্রয়োজনের তাগিদে আমাদের আমদানি করতে হয়। তাই বাণিজ্যঘাটতি কোনো খারাপ বিষয় নয়। ভারতের সঙ্গেও আমাদের ‘উইন–উইন’ বাণিজ্য পরিস্থিতি ছিল। এখন সেটা ‘ক্ষতি–ক্ষতি’ অবস্থায় চলে যাচ্ছে। এটা হওয়া উচিত হবে না। কোনো দেশের জন্যই লাভের কিছু হবে না। তাই কূটনৈতিকভাবেই দ্রুত সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
জায়েদি সাত্তার, চেয়ারম্যান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদক ষ প ন আম দ র র জন য আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া
আফগানিস্তানের তালেবানশাসিত সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া এ সরকাকে স্বীকৃতি দিলো। এর আগে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও পাকিস্তান কাবুলে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করলেও তালেবান সরকারের চার বছরের শাসনামলে রাশিয়াই একমাত্র দেশ যারা তাদের সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিলো। রাশিয়ার এ সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। খবর-বিবিসি
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান’কে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দ্বিপাক্ষিক কার্যকর সহযোগিতার পথে গতি আনবে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা জ্বালানি, পরিবহন, কৃষি ও অবকাঠামো খাতে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা দেখছে। সন্ত্রাস ও মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে কাবুলকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে রাশিয়া।
এর আগে কাবুলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি জিরনোভের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন মুত্তাকি। সেখানে দিমিত্রি আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ সরকারের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানকে জানিয়ে দেন। এই স্বীকৃতিকে মুত্তাকি ‘ইতিবাচক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়, পারস্পরিক সম্মান এবং গঠনমূলক অংশীদারিত্ব’ এর সূচনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি অন্য দেশগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’