বাংলাদেশ থেকে ভারতের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারত সরকার যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা দুই দেশের বাণিজ্যের জন্য ভালো খবর নয়। দুই দেশের মানুষের জন্যও এটা ভালো পদক্ষেপ নয়। এতে আঞ্চলিক বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে। ভারতের এই বিধিনিষেধের ফলে এখন আমাদের বাণিজ্য ব্যয় বেড়ে যাবে। কারণ, এখন অনেক পথ ঘুরে ভারতে পণ্য রপ্তানি করতে হবে। আগে সহজে বিভিন্ন স্থলবন্দর ব্যবহার করে দেশটিতে পণ্য পাঠানো যেত। কয়েক বছর ধরে ভারতে আমাদের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা সাফটার আওতায় দেশটিতে আমাদের রপ্তানি বাড়ছিল। এখন সেখানে ভাটা পড়তে পারে।

আমার মনে হচ্ছে, আমরা পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মাধ্যমে এগোচ্ছি। প্রথমে তারা ট্রান্সশিপমেন্ট–সুবিধা বাতিল করল। পরে আমরা স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলাম। যদিও সুতা আমদানি নিয়ে বস্ত্রকল ও পোশাকশিল্পের মালিকদের মধ্যে দুই রকম বক্তব্য রয়েছে। স্থানীয় শিল্প হয়তো এতে লাভবান হবে। তারপরও যেকোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সব দিক ভালোভাবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

নতুন করে ভারত যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার বিপরীতে আমাদের পাল্টা পদেক্ষপ নেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, আমাদের সেই বাজার সক্ষমতা (মার্কেট পাওয়ার) নেই। নিজেদের ক্ষতি করে অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা করা যাবে না। তাই এখন পাল্টা পদক্ষেপ না নিয়ে কূটনৈতিকভাবে এই বাধা দূর করার চেষ্টা করা উচিত। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে, তবে এটা দুর্বলতা নয়। কারণ, ভারত থেকে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়।

চীনের সঙ্গেও আমাদের অনেক বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে। কিন্তু এটা কোনো সমস্যা নয়। রপ্তানির জন্য প্রয়োজনের তাগিদে আমাদের আমদানি করতে হয়। তাই বাণিজ্যঘাটতি কোনো খারাপ বিষয় নয়। ভারতের সঙ্গেও আমাদের ‘উইন–উইন’ বাণিজ্য পরিস্থিতি ছিল। এখন সেটা ‘ক্ষতি–ক্ষতি’ অবস্থায় চলে যাচ্ছে। এটা হওয়া উচিত হবে না। কোনো দেশের জন্যই লাভের কিছু হবে না। তাই কূটনৈতিকভাবেই দ্রুত সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

জায়েদি সাত্তার, চেয়ারম্যান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পদক ষ প ন আম দ র র জন য আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।

এর আগে গত ১০ আগস্ট রাতে খসড়া ভোটার তালিকা ও খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে যেসব শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় আসেনি তাঁদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়। যাচাই–বাছাই শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ করেছে কমিশন।

কোন হলে কত ভোটার

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী ২১টি আবাসিক হলে মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ৫ হাজার ৮৬০, আর ছাত্রী ভোটার ৬ হাজার ০৫৯।

ছাত্র হল

আলবেরুনী হলে ২১১, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৪১, শহীদ সালাম–বরকত হলে ২৯৯, মওলানা ভাসানী হলে ৫২১, ১০ নম্বর হলে ৫৪০, শহীদ রফিক–জব্বার হলে ৬৫৬, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫৭, ২১ নম্বর হলে ৭৫২, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯৪, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ৯৫৪, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৭৭ জন।

ছাত্রী হল

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৮২, জাহানারা ইমাম হলে ৪০০, প্রীতিলতা হলে ৪০২, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪১৭, সুফিয়া কামাল হলে ৪৬০, ১৩ নম্বর হলে ৫৩২, ১৫ নম্বর হলে ৫৭৬, রোকেয়া হলে ৯৫৭, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৮০৮, বীর প্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন।

আজ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং আগামীকাল মঙ্গলবার একই সময়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। তবে প্রার্থীকে নিজে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হবে।

মনোনয়নপত্রের নির্দেশনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সাত দফা নির্দেশনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে রয়েছে—

১. একজন প্রার্থী একাধিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

২. প্রতিটি মনোনয়নপত্রে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থকের স্বাক্ষর, শিক্ষাবর্ষ ও বিভাগ উল্লেখ করতে হবে।

৩. একই ব্যক্তি একাধিক প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থক হতে পারবেন না (কার্যকরী সদস্য পদ ছাড়া)। কার্যকরী সদস্য পদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয়জনের (তিন নারী, তিন পুরুষ) প্রস্তাবক বা সমর্থক হওয়া যাবে।

৪. মনোনয়ন জমার সময় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র বা ছবিযুক্ত লাইব্রেরি কার্ড/ইনডেক্স কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।

৫. প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে সব পাওনা পরিশোধের প্রমাণ দিতে হবে।

৬. মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে (দুই মাসের বেশি পুরোনো ছবি গ্রহণযোগ্য নয়)।

৭. প্রতিটি হলে মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের জন্য পৃথক রেজিস্ট্রার খাতা সংরক্ষণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ