লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামির জন্য যেন দুঃস্বপ্নের রাত ছিল রোববার। ঘরের মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে তারা। যা চলতি মৌসুমে তাদের অন্যতম বাজে পারফরম্যান্স।
এই হার শুধু হারই নয়, বরং সম্প্রতি টানা বাজে ফর্মের ধারাবাহিকতাও। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ সাত ম্যাচে মাত্র একটি জয় পেয়েছে মায়ামি। পূর্বাঞ্চলীয় কনফারেন্সে তারা নেমে গেছে ষষ্ঠ স্থানে। আর অরল্যান্ডো তাদের পেছনে ফেলে এখন এগিয়ে।
ম্যাচে মেসির পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। গোলমুখে মাত্র দুইটি শট নিতে পেরেছেন। একটি ফ্রি কিক নষ্ট করেছেন। নিজের পারফরম্যান্স ও দলের ছন্দহীনতার হতাশা ঝরেছে মেসির কণ্ঠেও।
আরো পড়ুন:
মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ: অতীতের সোনালি অধ্যায়ের মূল্যায়নে মুখ খুললেন মেসি
গোল বন্যার ম্যাচে নিষ্প্রভ মেসি, জয়বঞ্চিত মায়ামি
তিনি বলেন, ‘‘এখনই বোঝা যাবে, আমরা সত্যিকারের দল কিনা। কারণ, ভালো সময় হলে সবাই এক থাকে। কঠিন সময়ে বোঝা যায় আসলে কে কার সঙ্গে। এখন আমাদের আগের চেয়ে অনেক বেশি একতাবদ্ধ হতে হবে।’’
ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বাস্তবতা বলছে, হারের জন্য দায়ী মায়ামির দুর্বল রক্ষণ। এলোমেলো মাঝমাঠ এবং নিরুত্তাপ আক্রমণভাগ। লুইস সুয়ারেজের ফর্মেও ধারহীনতা স্পষ্ট।
অরল্যান্ডোর প্রথম গোল আসে ৪৩ মিনিটে, একদম সহজ কৌশলে। গোলরক্ষক গায়েসে লং পাসে বল বাড়ান। আর লুইস মুরিয়েল সহজেই গোলরক্ষক উস্তারিকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান।
মায়ামির রক্ষণভাগ যেন কোনো পরিকল্পনাহীনভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আর্জেন্টাইন মার্টিন ওজেদা একবার গোলের সামনে বল পেয়ে সুযোগ নষ্ট করেন। তবে এরপর গোলরক্ষক উস্তারির ব্যর্থতায় গোল হজম করে মায়ামি।
দ্বিতীয় গোলটি আসে মার্কো পাশালিচের পায়ের নিচু শটে। যেটি গোলরক্ষক উস্তারির হাত আর পায়ের ফাঁক গলে জালে ঢোকে।
মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাচেরানো শেষদিকে একের পর এক আক্রমণভাগের খেলোয়াড় নামিয়েও কোনো ফল পাননি। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে দানকান ম্যাকগুয়েরের লো ক্রস থেকে ড্যাগুর থরহালসন গোল করে ম্যাচের ফলাফল ৩-০ তে নিয়ে যান।
মায়ামি তাদের শেষ সাত ম্যাচে ২০টি গোল খেয়েছে। জয় পেয়েছে মাত্র একটি। সেটিও ৩ মে নিউ ইয়র্ক রেড বুলসের বিপক্ষে।
কোচ মাচেরানোর ভাষ্য, “ম্যাচের প্রথম ২৫-৩০ মিনিট পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। প্রতিপক্ষের অর্ধে খেলছিলাম। কিন্তু একটা ভুলেই ম্যাচ বদলে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপ থেকে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের কাছে বিদায়ের পর থেকেই দল মানসিকভাবে ধাক্কা খেয়েছে। আত্মবিশ্বাসের বড় অভাব দেখা দিয়েছে। আমরা অনেকভাবে চেষ্টা করছি। নতুন কৌশল, নতুন খেলোয়াড়— কিন্তু এখনও নিজেদের সেরাটা ফিরিয়ে আনতে পারছি না।”
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএলে মোস্তাফিজের সেরা ৫ পারফরম্যান্স
২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেকেই চমক। পরের বছরই আইপিএল থেকে ডাক। মোস্তাফিজুর রহমানের আইপিএল অভিষেকও হয়েছিল স্বপ্নের মতো। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে প্রথম মৌসুমেই ১৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট, ইকোনমি মাত্র ৬.৯০! সেবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে টুর্নামেন্ট জেতাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মোস্তাফিজ।
এরপর দল বদলেছেন কয়েকবার। সাকিব আল হাসানের মতো মোস্তাফিজও হয়ে ওঠেন আইপিএলে বাংলাদেশের মুখ। তবে এবার মনে হচ্ছিল আর বুঝি আইপিএল খেলা হবে না মোস্তাফিজের। কিন্তু শেষদিকে এসে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত পরিস্থিতি, অনেক বিদেশি ক্রিকেটারের ভারত ছেড়ে যাওয়া, সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই সুযোগ চলে আসে মোস্তাফিজের সামনে। ডাক পান দিল্লি ক্যাপিটালসে।
এরই মধ্যে মোস্তাফিজকে ছাড়পত্রও দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), ১৮ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আইপিএল খেলবেন তিনি। বিসিবি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব-আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুধু প্রথমটিতেই মোস্তাফিজকে পাওয়া যাবে।
আইপিএলে দিল্লির ম্যাচ বাকি এখনো তিনটি। ১১ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ৫ নম্বরে থাকা দিল্লির প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা বেশ ভালোভাবেই আছে। এই তিন ম্যাচে মোস্তাফিজ খেলেন কি না, খেললে কেমন করেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। সেই অপেক্ষায় থাকতে থাকতে ফিরে দেখা যাক, আইপিএলে মোস্তাফিজের স্মরণীয় পাঁচটি ম্যাচ:
৪/২৯: চেন্নাই সুপার কিংস-রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, ২০২৪১৭তম আইপিএল মৌসুমের প্রথম ম্যাচ, মঞ্চ চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়াম। একদিকে চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই, অন্যদিকে ফাফ ডু প্লেসির বেঙ্গালুরু। মোস্তাফিজ বল হাতে পেলেন পঞ্চম ওভারে। প্রথম বলেই কাভারের ওপর দিয়ে মেরে দেন ফাফ, কিন্তু পরের বলেই কাটারে ধরা খেলেন। ধীরে আসা বল বুঝতে না পেরে শট মিস করে ফেলেন—ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ।
পরের উইকেট রজত পাতিদারের—ব্যাটের কানায় বল লেগে যায় ধোনির গ্লাভসে। এরপর ১২তম ওভারে বিরাট কোহলিকে ফেরানোর পরের বলেই ক্যামেরন গ্রিনকে বোল্ড! শেষ দুই ওভারে কিছু রান দিলেও আসল কাজটা করে ফেলেছিলেন আগেই। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে বাঁহাতি পেসারের হাতেই।
বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেটের ম্যাচে স্বীকৃতি।