কে হবে চ্যাম্পিয়ন? চলছে ‘দ্য কেইজ’-এর ফাইনাল
Published: 4th, July 2025 GMT
তরুণ রক মিউজিশিয়ানদের নিয়ে শুরু হওয়া রিয়েলিটি শো ‘দ্য কেইজ’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে চলছে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে (কেআইবি)। বিকেল চারটায় শুরু হওয়া এ আয়োজনে রাত আটটা নাগাদ পারফরম্যান্স করেছে ফাইনালিস্ট ছয়টি ব্যান্ড। এখন শুধু অপেক্ষা, কে হতে যাচ্ছে এবারের চ্যাম্পিয়ন।
আরও পড়ুনরক তারকাদের চূড়ান্ত লড়াই আজ১৩ ঘণ্টা আগেগ্র্যান্ড ফিনালেতে শেষবারের মতো নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরেছে ব্যান্ডগুলো। প্রতিটি ব্যান্ড পেয়েছে ৩০ মিনিট সময়। বিকেল চারটায় নাইন ব্যান্ডের পারফরম্যান্স দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। এরপর পর্যায়ক্রমে পারফরম্যান্স করেছে এডেন’স গার্ডেন, কারনেশন, ডোপামিন, ডাস্ক এন ডন ও রকসল্ট।
বিকেল থেকেই ভেন্যুতে ছিল দর্শকের চাপ। কেআইবি মিলনায়তনের সব আসন পূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়ে অনেক দর্শক উপভোগ করেছেন এই আয়োজন। প্রতিযোগী ব্যান্ডগুলোর পর এখন পারফর্ম করছে অ্যাভয়েড রাফা, এরপর পারফর্ম করবে একে রাহুল এ ওয়ারফেজ।
সারা দেশ থেকে বাছাই করা শতাধিক প্রতিযোগীর মধ্যে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয় ৮০ জনকে। তাঁরা গঠন করেন ১৭টি ব্যান্ড। গ্রুমিং শেষে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ছয়টি ব্যান্ড পৌঁছায় ফাইনালে। আজ তারা লড়ছে চ্যাম্পিয়ন খেতাবের জন্য। ফাইনালের বিচারক হিসেবে আছেন অ্যাভয়েড রাফা ব্যান্ডের ভোকাল রাফা, ওয়ারফেজের পলাশ নূর, আরবোভাইরাসের গিটারিস্ট রঞ্জন এবং সংগীতশিল্পী তাসফি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসির পর একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন বাবা–মেয়ে, ফলে এগিয়ে বাবা
নাটোরের লালপুরে মেয়ে হালিমা খাতুনের (১৮) সঙ্গে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন বাবা আবদুল হান্নান (৪৩)। ফলাফলে মেয়েকে ছাড়িয়ে গেছেন বাবা। জিপিএ-৪.৩ নিয়ে পাশ করেছেন আবদুল হান্নান। অন্যদিকে তাঁর মেয়ে হালিমা পেয়েছেন ৩.৭১।
আবদুল হান্নান ও হালিমা লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। হান্নান রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কাকড়ামারি কলেজ থেকে এবং তাঁর মেয়ে হালিমা লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা অংশ নেন। এর আগে ২০২৩ সালে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেন তাঁরা।
হালিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জন্মের আগেই আমার বাবা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাস করতে পারেননি। পরে ঘটনাটি জানার পর ধরেই নিয়েছিলাম, বাবা পড়ালেখায় ইতি টেনেছেন। কিন্তু ২০২৩ সালে বাবা কাউকে না জানিয়ে আবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে বসলে ঘটনাটি আমাদের পরিবারে তো বটেই, দেশে আলোচিত হয়। এরপর বাবা পড়ালেখায় আরও সিরিয়াস (সচেতন) হন। সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি আমার সঙ্গেই পড়ালেখা করেছেন। পরীক্ষা দিয়ে আমার চেয়েও ভালো ফল করেছেন। আমি এতে মন খারাপ করিনি। বরং বাবার ফল আমাকে আরও ভালো করার উৎসাহ জুগিয়েছে।’
পড়ালেখার প্রতি নিজের আগ্রহের কথা প্রকাশ করে আবদুল হান্নান জানান, ছোটবেলা থেকে তিনি পড়ালেখায় ভালো ছিলেন। কিন্তু অভাবের সংসারে পড়ালেখার জন্য তেমন পরিবেশ পাননি। ১৯৯৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিশেষ কারণে অকৃতকার্য হন। পরিবারের প্রয়োজনে পড়ালেখা ছেড়ে গোপালপুর রেলগেটে চায়ের দোকান দিয়ে বসেন। এরপর বিয়ে করে সংসারী হন। কিন্তু মনের মধ্যে শিক্ষিত হওয়ার আগ্রহ দমে যায়নি। মেয়ের এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করার সময় হঠাৎ নিজেরও পরীক্ষায় বসার ভাবনা আসে। কাউকে না জানিয়ে তাই নিজেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পরীক্ষার সময় হঠাৎ বিষয়টি জানাজানি হয়। তখন আবারও অকৃতকার্য হওয়ার দুঃস্বপ্ন ভর করে।
একটু থেমে আবদুল হান্নান বলেন, তবে সৃষ্টিকর্তা নিরাশ করেননি। এসএসসি পাস করেন। এরপর প্রকাশ্যে পড়ালেখা শুরু করেন। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কাকড়ামারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেন। মেয়ের সঙ্গে বসে পড়ালেখা করতে থাকেন এবং শেষে কাঙ্ক্ষিত ফলও পান। ফলাফলে মেয়েকে টপকে যাওয়ার ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও তিনি বিস্মিত হননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পড়ালেখা যখন নতুন করে শুরু করেছি, তখন শেষ পর্যন্ত (মাস্টার্স) পড়বই। চাকরি করার বয়স হয়তো থাকবে না। তাতে কিছুই আসে–যায় না। আমি এই সমাজের একজন উচ্চশিক্ষিত নাগরিক হয়ে বেঁচে থাকতে চাই।’
আবদুল হান্নানের ভাবনা ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন নাটোরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোস্তম আলী হেলালী। তিনি বলেন, শিক্ষালাভের কোনো বয়স নেই। আবদুল হান্নান তাঁর মেয়ে হালিমা খাতুনের সঙ্গে এইচএসসি পাস করে এ কথা প্রমাণ করেছেন। তিনি চাকরির জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য পড়ছেন। এটা সমাজের জন্য একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তাঁদের উভয়কেই অভিনন্দন।