বিগত সরকারের মতো একই ধারায় জাতীয় বাজেট দিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাজেট ব্যবস্থায় কাঠামোগত দুর্বলতা ও স্বচ্ছতার অভাব দেখা যাচ্ছে। সরকার কী ধরনের বাজেট করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে জনগণ বা অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করেনি বা মতামত নেয়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও আমলাতন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক সংকট দেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে দিচ্ছে না।

জাতীয় বাজেট সামনে রেখে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক বহুপক্ষীয় অংশীজনের বৈঠকে অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক ও রাজনীতিবিদদের আলোচনায় এমন মত উঠে এসেছে। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গবেষণা সংস্থা সিপিডির সহযোগিতায় এ আলোচনার আয়োজন করে, যেখানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল সোমবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বৈঠকে বক্তারা অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও প্রত্যাশা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর যে ধরনের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল, তার প্রতিফলন সরকারের কার্যক্রমে নেই। বেকারত্বের তীব্র সমস্যা থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান হলেও কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোনো উদ্যোগ সরকার নেয়নি।

বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.

আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নই। আমাদের অর্থনীতি পরীক্ষার ধাপ থেকে শিক্ষার ধাপে উন্নীত হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো আছে। সামনে কিছু অনিশ্চয়তা আছে। তবে আমরা সেগুলো বুঝে কাজ করছি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যদি অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট পুরোনো ধারাতেই তৈরি হয়, তাহলে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা পূরণ হবে না। তিনি বর্তমান সরকারকে জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন ও দায়হীন আখ্যা দিয়ে বলেন, এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও গভীর হচ্ছে। যার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ছে।

তিনি বলেন, অনিশ্চয়তার মধ্যে কোনো অর্থনীতি এগোতে পারে না। সবাই একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় আছে। নির্বাচন না হওয়ায় আমলাতন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যারা ভুয়া জিডিপির তথ্য বানিয়েছিল, তারা এখনও পদে বসে আছে। সরকার কিছু ‘কসমেটিকস’ পরিবর্তন করেছে। প্রকৃত পরিবর্তন হয়নি।
সংস্কারের জন্য নির্বাচন আটকে রাখা ঠিক নয়– মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ‘এ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছি, ভবিষ্যতেও দেব। রাজনৈতিক দলগুলো সবাই অভিমত দিয়েছে। কোথায় কোথায় ঐকমত্য হলো, সেগুলো প্রকাশ করছে না সরকার। এতে সময় লাগার কথা নয়। যেগুলোতে ঐকমত্য হয়নি, জোর করলেও হবে না। রাজনৈতিক ইস্যুর সমাধান হবে রাজনৈতিকভাবে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো এবং নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকার কী পরিবর্তন আনছে, কীভাবে দেখাতে পারছে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি কীভাবে নিশ্চিত করছে– এটাই এখন বড় প্রশ্ন। তিনি বলেন, আগের সরকারের সময়ে তৈরি হওয়া আমলা-ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদ ত্রিভুজ এখনও অটুট। রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা দুর্বল হয়ে পড়লে আমলারা আরও প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার না এলে স্থিতিশীল অর্থনীতি সম্ভব নয়।

দেবপ্রিয় বলেন, সরকারের কার্যক্রমে সমন্বয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব দেখা যাচ্ছে। অর্থনীতিতে স্বস্তি না থাকলে অন্য কোনো ক্ষেত্রেই সরকার স্বস্তিতে থাকবে না। বিদ্যমান বৈষম্য প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, শহুরে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দিতে ‘ট্রাক সেল’ ৭ শতাংশ বাড়ালেও কাবিখা প্রকল্পে সরকার ৪০ শতাংশ কাটছাঁট করেছে। দরিদ্রদের সহায়তায় বৈষম্য হচ্ছে এই সরকারের সময়ে, যা প্রত্যাশিত নয়।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে একটা টাস্কফোর্স কাজ করছে। অর্থ উদ্ধারে দরকষাকষির ভালো দক্ষতা লাগবে। তবে আমরা এ নিয়ে যত কম কথা বলব, ততই ভালো হবে। তিনি বর্তমান সরকারের সময়কালের মধ্যে দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর নিষ্পত্তির সুপারিশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, যারা আগের সরকারের বাজেটের সমালোচনা করতেন, তারাই এখন বাজেট করছেন। তাই পরিবর্তনের আশা করা স্বাভাবিক। বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক কাজী ইকবাল বলেন, বেকারত্ব দেশের বড় সংকট। বিনিয়োগ মন্থর হওয়ায় কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শারমিন্দ নিলোর্মি বলেন, শুধু স্কুল নির্মাণ করলে হবে না; মানসম্পন্ন শিক্ষক না থাকলে মানবসম্পদ সৃষ্টি হবে না, কর্মসংস্থানও বাড়বে না।

রামরুর চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ লোক বিদেশে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের জন্য পরিকল্পনা নেই। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. এনামুল হক বলেন, বাজেটের মূল উদ্দেশ্য জনগণকে সেবা দেওয়া। কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তার নেই, শিক্ষায় মান নেই। ধনী বিদেশে চিকিৎসা নেয়; গরিব পড়ে থাকে রাস্তায়।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম. তামিম বলেন, পিডিবির হাতে নীতি তৈরি, দর নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের একচেটিয়া ক্ষমতার পরিবর্তন দরকার। সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, বাংলাদেশ নীতি পক্ষাঘাতগ্রস্ততায় ভুগছে। কৌশল নেওয়া হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশ থেকে পাচার হওয়া ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলারের এক-তৃতীয়াংশ ফিরিয়ে আনলে অর্থনীতিকে অনেক এগিয়ে নেওয়া যেত। বিল্ডের সিইও ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতেই হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক সরক র র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নীতি সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ, কী প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে

অবশেষে সুদের হার কমিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর এই প্রথম সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে দুর্বলতার লক্ষণ, আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে উচ্চ বেকারত্ব, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়া ও নতুন চাকরি সৃষ্টির গতি কমে যাওয়ায় ফেড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ৪ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়ার পর ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে সুদহার আরও কমতে পারে। তিনি বলেন, শ্রমবাজারের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এখন তাঁর ও সহকর্মী নীতিনির্ধারকদের প্রধান উদ্বেগ। খবর রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই ব্যাপক হারে সুদ কমানোর দাবি তুলছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এতে অর্থনীতি চাঙা হবে। তবে ফেডের এ সিদ্ধান্ত তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। ফেডের পর্ষদে নতুন গভর্নর স্টিফেন মিরান ছিলেন একমাত্র ভিন্নমতাবলম্বী। তিনি ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট হারে সুদহার কমানোর পক্ষে ছিলেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও বড় কাটছাঁটের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সুদের হার নির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন সব সময়ই তোলা হয়। ট্রাম্প সম্প্রতি ফেডের এক গভর্নর লিসা কুককে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও কুক আদালতের লড়াইয়ে আপাতত নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন এবং বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান মিরানকে ফেডের পর্ষদে বসান।

শ্রমবাজারে দুর্বলতা

পাওয়েল বলেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে, তরুণেরা আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছেন। সামগ্রিকভাবে চাকরি সৃষ্টির গতি খুবই কম। শ্রমবাজারকে আর দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না।

পাওয়েল আরও সতর্ক করেন, নতুন চাকরির সংখ্যা এখন বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে সামান্য ছাঁটাইও বেকারত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।

মূল্যস্ফীতি বনাম কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে বছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতির হার ৩ শতাংশে উঠবে, যেখানে ফেডের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ শতাংশ। কিন্তু ফেড মনে করছে, কর্মসংস্থানের ঝুঁকি এখন বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো বিষয়।

ফেডের নতুন পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়িয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ করা হতে পারে বলা হয়েছে। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশেই স্থির থাকবে বলে তারা অনুমান করছে।

রাজনৈতিক টানাপোড়েন

এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক নাটকও কম ছিল না। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ফেডের পর্ষদের অন্য দুই ট্রাম্প-মনোনীত গভর্নর মিশেল বোম্যান ও ক্রিস্টোফার ওয়ালার শেষ পর্যন্ত মূল সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ওয়ালার বরাবরই শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছেন।

পাওয়েল অবশ্য পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির মূল বিষয় হলো তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত। আজকের বৈঠকে সুদহার ব্যাপক হারে কমানোর বিষয়ে বিপুল সমর্থন ছিল না।’

বাজারের প্রতিক্রিয়া

সুদহার কমানোর ঘোষণার পর ওয়াল স্ট্রিটে প্রথমে শেয়ারের দাম বাড়লেও পরে ওঠানামা করে। শেষমেশ মিশ্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়। ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে ঠিক, কিন্তু ট্রেজারি বন্ডের সুদ প্রায় অপরিবর্তিত। বাজার এখন প্রায় নিশ্চিত, অক্টোবরের বৈঠকেও সুদ কমানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের মানে হলো তারা এখন ধীরে ধীরে ‘নিরপক্ষে’ অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে কিছুটা বাড়লেও ২০২৬ সালের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নীতিসুদ কী

কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে এটি পরিচিত। অর্থনীতিতে নগদ তারল্যের জোগান দিতে বা অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাংকগুলোর জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সরবরাহ করতে মুদ্রানীতির এ হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হাতিয়ার ব্যবহার করে।

কোভিডের পর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তখন ফেডারেল রিজার্ভ বাজারে মুদ্রার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। ফলে নীতি সুদহার গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহারের প্রভাব

বিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিসুদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফেডের নীতিসুদের হার বাড়লে ট্রেজারি বন্ডের দাম কমে এবং সুদহার কমলে ট্রেজারি বন্ডের দাম বাড়ে। এর কারণ হলো বাজারে নতুন ও অধিক সুদের বন্ড আসার পর পুরোনো বন্ডের কুপন (সুদ) কম মনে হয়, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম কমে যায়। আবার যখন সুদের হার কমে, তখন নতুন বন্ডের কুপন কম হওয়ায় পুরোনো বন্ডের উচ্চ কুপনযুক্ত সুদ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম বেড়ে যায়।

নীতিসুদ কমলেও একই প্রক্রিয়া ঘটে, তবে বিপরীতভাবে। সুদের হার কমলে নতুন বন্ডের কুপনও কমে যায়। এতে আগের উচ্চ সুদের কুপনযুক্ত বন্ডগুলো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিনিয়োগকারীরা এই পুরোনো বন্ডগুলো কিনতে আগ্রহী হন, ফলে সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা তখন তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বাজারেও বিনিয়োগ আগ্রহী হন। এতে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়ে এবং ডলারের চাপ কিছুটা কমে।

সে কারণে বাজার নীতি সুদহারের দিকে তাকিয়ে থাকে, সুদ কমলে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ