বুলাওয়েতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনটি নিশ্চিতভাবেই ভুলে যেতে চাইবে জিম্বাবুয়ে। কেন চাইবে না? দক্ষিণ আফ্রিকা যা করলো…

ভিয়ান মুল্ডার অধিনায়কত্বের অভিষেকে ২৬৪ রান করলেন। অপরাজিত আছেন। তার ম‌্যারাথন ইনিংসে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম দিনের রান ৪ উইকেটে ৪৬৫। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একদিনের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছেন প্রোটিয়ারা। রান উৎসবের দিনে শেষ সেশনেই তারা তুলেছেন ২২২ রান। সব মিলিয়ে পুরো দিনে তাদের রান রেট ছিল, ৫.

২৮।

এ দিন যা করার মুল্ডার একাই করলেন। ২৫৯ বলে ২৬৪ রানের ইনিংসটি খেলেন। ৩৪ চার ও ৩ ছক্কায় বোলারদের স্রেফ এলোমেলো করে দেন। স্ট্রাইক রেট ১০১.৯৩। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে অধিনায়কত্বের অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি এর আগে ছিল দুইটি। আড়াইশ ছিল না একটিও। মুল্ডার নতুন কিছু করে দেখালেন। তার সুযোগ আছে ট্রিপল সেঞ্চুরি তুলে ইতিহাসের অক্ষয় কালিতে নিজের নাম তোলার। পারবেন কী?

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রথম দিনে ডাবল সেঞ্চুরি আছে আর তিন জনের- হার্শেল গিবস, গ্যারি কার্স্টেন ও গ্রায়েম স্মিথ। চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে মুল্ডার যোগ দিলেন এলিট ক্লাবে।  

প্রথম দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার আগের রেকর্ড ৪৪৫ রান, পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০৩ সালে। গতকাল বুলাওয়েতে প্রোটিয়াদের নতুন দল, প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটাররা নিজেদেরকে নিয়ে গিয়েছেন নতুন উচ্চতায়।

যদিও তাদের শুরুটা ভালো ছিল না। ২৪ রানে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। মনে হচ্ছিল জিম্বাবুয়ে চাপ তৈরি করবে। কিন্তু মুল্ডার ক্রিজে আসা মাত্রই সব ওলটপালট। প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান করলেন। বাজে বল কড়া শাসন করলেন। ৫৩ বলে ফিফটি, ১১৬ বলে সেঞ্চুরি, ১৬৭ বলে দেড়শ, ২১৪ বলে ডাবল সেঞ্চুরি এবং ২৪৩ বলে আড়াইশ রানের মাইলফলক ছাড়িয়ে যান।

প্রথম সেশনে তাদের রান ছিল ২ উইকেটে ১১৩। দ্বিতীয় সেশনে ৩ উইকেটে ২৪৩। আর দিন শেষে ৪ উইকেটে ৪৬৫। মুল্ডার বাদে রান পেয়েছেন ডেভিড বেডিংহ‌্যাম ও ডি প্রিটোরিয়াস। বেডিংহ‌্যাম ১০১ বলে ৭ চারে ৮২ এবং প্রিটোরিয়াস ৮৭ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৮ রান করেন। মুল্ডারের সঙ্গে ১৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন ডেয়াল্ড ব্রেভিডস (১৫)।

জিম্বাবুয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি হাত ঘুরিয়েছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। বাঁহাতি স্পিনার ২৮ ওভারে ১ উইকেটে সর্বোচ্চ ১৫২ রান দিয়েছেন। আজ দ্বিতীয় দিনে তাদের জন‌্য কী অপেক্ষা করছে সেটাই দেখার।

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম দ ন উইক ট করল ন

এছাড়াও পড়ুন:

জায়গা পাওয়ার চেয়ে ধরে রাখা কঠিন, বললেন সাইফউদ্দিন

১৩ মাসের অপেক্ষা শেষ হলো মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ২০২৪ সালের বিপিএলে ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে গত বছর বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই সিরিজে ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিলেও এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জায়গা হয়নি বিশ্বকাপের দলে।

এরপর সাইফউদ্দিনের ওপর দিয়ে ঝড়ই বয়ে গেছে। ‘এ’ দলে সুযোগ পেয়েও সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে ছুটি নেন, কানাডার গ্লোবাল টি–টোয়েন্টি লিগে সুযোগ পেয়েও যেতে পারেননি ভিসা জটিলতায়। এরপর মানসিক অবসাদের কারণে ক্রিকেট থেকে ছুটি নেন দুই মাসের জন্য।

এ বছরের বিপিএলে ফিরে অবশ্য আহামরি কিছু করতে পারেননি সাইফউদ্দিন। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১২ ইনিংসে ১২ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৮ ইনিংসে ১৫৮.৩১ স্ট্রাইক রেটে করেন ১১১ রান। সেই সাইফউদ্দিনকে শ্রীলঙ্কার সফরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের বাংলাদেশ দলে ফিরিয়েছে বিসিবি।

২৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার আজ শ্রীলঙ্কায় রওনা হওয়ার আগে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তাঁর ফেরার অনুভূতি, ‘যাত্রাটা অনেক লম্বা ছিল। ১৩ মাস পর আবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। সুযোগ পাওয়ার চেয়ে জায়গাটা ধরে রাখা অনেক কঠিন, সেই লক্ষ্যই থাকবে। যেহেতু কয়েকটা ক্যাম্প করেছি মিরপুরে এবং চট্টগ্রামে, চেষ্টা করেছি নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। কতটা পেরেছি জানি না, হয়তো নির্বাচকেরা আমার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন, যার কারণে এই সুযোগ পাওয়া।’

বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ৪২ উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন। ২১ ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে করেছেন ২০৬ রান। পরিসংখ্যানই বলছে, একসময়ের সম্ভাবনা জাগানো এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার দেশের হয়ে এখনো বড় কিছু করতে পারেননি।

এবার যখন ফিরছেন, নতুন কী অস্ত্র যোগ করেছেন বোলিং ভান্ডারে? শুরুতে এই প্রশ্নের উত্তরে ‘যদি ম্যাচে সুযোগ পাই দেখবেন’ বললেও পরে বলেছেন, ‘যেগুলো আমার আগের স্টক ছিল। সুইং, ইয়র্কার, লাইন-লেংথ ঠিক রাখা—এসব নিয়ে কাজ করেছি। ক্যাম্পে নাজমুল (হোসেন) ভাই ছিলেন। ওনার সঙ্গে কথা বলেছি। সব মিলিয়ে চেষ্টা করছি। দেখা যাক, কী হয়।’

সাইফউদ্দিনের কণ্ঠে এবার বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও ভালো করার প্রত্যয়, ‘তানজিম সাকিবের যদি গত ম্যাচ (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে) দেখেন...ওর ছোট একটা ক্যামিও বাংলাদেশের জয়ের জন্য বেশ কাজে লেগেছে। আপনি যদি ইংল্যান্ড দলটা দেখেন, দুই-তিনজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার খেলে। যত বেশি অলরাউন্ডার খেলবে, দল ও দেশের জন্য তত ভালো। আমিও চেষ্টা করব ভালো করার, সেটা ব্যাটিং হোক কিংবা বোলিং।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ