ইয়েমেনের তিনটি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
Published: 7th, July 2025 GMT
ইয়েমেনের তিনটি বন্দর এবং একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হুতি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আজ সোমবার ভোরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। এ হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
প্রায় এক মাস পর ইয়েমেনে হামলা চালাল ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, হোসেইন, রাস ইসা ও সালিফ বন্দর এবং রাস কান্তিব বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। কারণ, হুতিরা বারবার ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ করছিল।
হামলার পর হুতির এক মুখপাত্র বলেন, স্থানীয়ভাবে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরায়েলি হামলা প্রতিহত করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, লোহিত সাগরের তীরবর্তী বন্দরনগরী হোদেইদায় ইসরায়েলি হামলার ফলে প্রধান বিদ্যুৎকেন্দ্র অচল হয়ে গেছে। এতে পুরো শহর অন্ধকারে ডুবে গেছে।
হুতি নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরা টিভি জানিয়েছে, ইসরায়েল হোদেইদায় একের পর এক হামলা চালিয়েছে। এর ঠিক আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইয়েমেনের তিনটি বন্দর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ইয়েমেনের রাস ইসা বন্দরে গ্যালাক্সি লিডার নামের একটি জাহাজেও হামলা চালানো হয়েছে। ২০২৩ সালের শেষ দিকে হুতিরা এই জাহাজটি দখল করেছিল।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি ইসরায়েল এবং লোহিত সাগরের জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে। এর ফলে বিশ্ব বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটছে। হুতি বলছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতেই এসব হামলা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ‘ফ্রেন্ডলি ফায়ারে’ ৩১ ইসরায়েলি সেনা নিহত
গাজায় চলমান অভিযানে নিজেদের মধ্যে ভুলবশত ছোড়া গুলিতে (ফ্রেন্ডলি ফায়ার) ইসরায়েলের অন্তত ৩১ সেনা নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গাজায় ‘স্থল অভিযান’ শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি ৪৪০ সেনা নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭২ জন অভিযান পরিচালনাসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় নিহত হন, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ১৬ শতাংশ।
এ ছাড়া সেনাদের মধ্যে ৩১ জন নিজেদের মধ্যে ভুলবশত ছোড়া গুলিতে, ২৩ জন গোলাবারুদ–সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায়, ৭ জন সাঁজোয়া যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে ও ৬ জন অজ্ঞাত গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত হন।
ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর খবরে আরও বলা হয়, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান আবার শুরু করার পর এখন পর্যন্ত সেখানে ইসরায়েলি ৩২ সেনা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু দুজন ‘অভিযান পরিচালনা–সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায়’ নিহত হয়েছেন।
গাজায় ‘স্থল অভিযান’ চালাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি ৪৪০ সেনা নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭২ জন অভিযান পরিচালনাসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় নিহত হন, যা মোট সেনা মৃত্যুর প্রায় ১৬ শতাংশ।যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এ বছরের জানুয়ারিতে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, যা মার্চের শেষভাগে ভেঙে পড়ে।
ইসরায়েলের আরও পাঁচ সেনা কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। এর মধ্যে উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যাওয়া এবং প্রকৌশল সরঞ্জাম ব্যবহারে অসাবধানতার কারণও রয়েছে।
এ ধরনের একটি ঘটনা গত বৃহস্পতিবার রাতেও ঘটেছে। তবে খবরে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনগাজায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত০৬ জুন ২০২৫ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি ৮৮২ সেনা নিহত (স্থল অভিযানে নিহত ৪৪০ সেনাসহ) ও ৬ হাজার ৩২ সেনা আহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় তাদের গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত এই যুদ্ধে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গণহত্যার (জেনোসাইড) মামলা চলছে।
আরও পড়ুনগাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন ইসরায়েলি সেনারা, নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে০২ মে ২০২৫আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের ৭ সেনাসদস্য নিহত২৫ জুন ২০২৫