টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮, নিখোঁজ আরও ৪১
Published: 7th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে হঠাৎ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮ জনে পৌঁছেছে। আরও ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গত শুক্রবার অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে তুমুল বৃষ্টির কারণে গুয়াদালুপ নদীর পানি বেড়ে এ বন্যা হয়।
বন্যায় কের কাউন্টির নদীতীরবর্তী গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প মিস্টিক প্লাবিত হয়। ওই কাউন্টিতে ২৮ শিশুসহ ৬৮ জন মারা গেছেন। ওই ক্যাম্পের ১০টি মেয়ে ও ১ জন তত্ত্বাবধায়ক এখনো নিখোঁজ।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় আরও ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে। কাদা ও ধ্বংসাবশেষের মধ্যে উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে বিষধর সাপের কবলে পড়ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কের কাউন্টিতে যাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১০টি শিশুর এখনো আনুষ্ঠানিক পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
গতকাল রোববার টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেন, ‘প্রত্যেক নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে কর্তৃপক্ষ কোনো প্রচেষ্টাই বাদ রাখবে না।’
শুক্রবার ভোর হওয়ার আগেই এ বিপর্যয় দেখা দেয়। তখন মাত্র ৪৫ মিনিটে নদীর পানি ২৬ ফুট (৮ মিটার) বেড়ে যায়। এ সময় ক্যাম্প মিস্টিকের বেশির ভাগ শিশু ঘুমিয়ে ছিল। বন্যা আঘাত হানার সময় ক্যাম্পটিতে আনুমানিক ৭৫০ জন মেয়ে ছিল, যাদের অধিকাংশকেই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
বন্যার পানির তোড়ে গাছপালা ভেঙে গেছে, গাড়ি উল্টে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা হেঁটে, ট্রাক চালিয়ে, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে কেউ বেঁচে আছেন কি না, তাঁর খোঁজ করেছেন।
এদিকে গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কের কাউন্টির জন্য ‘বড় দুর্যোগ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেন। ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিকে (এফইএমএ) সেখানে সক্রিয় করেন। তিনি জানান, সম্ভবত আগামী শুক্রবার তিনি নিজেই টেক্সাস সফরে যাবেন।
এ দুর্যোগে দুর্গত মানুষের পাশে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। কেউ খাবার রান্না করছেন, কেউ আশ্রয় দিচ্ছেন, কেউবা ত্রাণসামগ্রী জোগাড় করছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক উন ট
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫