আমাদের সৌরজগতে গ্রহের সংখ্যা আটটি। তবে আমাদের সৌরজগতে আর কোনো গ্রহ আছে কি না, তা জানতে প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সৌরজগতে নতুন গ্রহ থাকার বিষয়ে শক্তিশালী পরিসংখ্যানগত প্রমাণ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন তাঁরা।

সৌরজগতে থাকা নতুন গ্রহের বিষয়ে তাইওয়ানের ন্যাশনাল তসিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টেরি লং ফান বলেন, ‘আমি খুব উত্তেজিত বোধ করছি। বেশ অনুপ্রাণিত আমরা। নতুন গ্রহের তথ্য নিয়ে একটি গবেষণাপত্র পাবলিকেশনস অব দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অব অস্ট্রেলিয়া সাময়িকীতে প্রকাশ করা হবে।

বিজ্ঞানীরা দুটি ইনফ্রারেড স্পেস টেলিস্কোপে ধারণ করা মহাকাশের ছবি কাজে লাগিয়ে সম্ভাব্য নতুন গ্রহের দীর্ঘ কক্ষপথের অবস্থান বিশ্লেষণ করছেন। তাঁদের দাবি, ১৩ জোড়া বিন্দু খুঁজে পাওয়া গেছে যা প্ল্যানেট নাইনের মতো চলমান গ্রহের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। বিন্দুর একেকটি সেটের রং ও উজ্জ্বলতা পরস্পরের সঙ্গে মিলে যায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেকের বিজ্ঞানী মাইক ব্রাউন শনাক্ত করা ইনফ্রারেড বিন্দুটি নবম গ্রহ বলে নিশ্চিত নন। তাঁর গণনা অনুসারে, বস্তুটি সৌরজগতের সমতলের চেয়ে অনেক বেশি হেলে থাকবে ও পরিচিত গ্রহ থেকে ভিন্ন দিকে কক্ষপথে অবস্থান করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যারি বার্নস্টেইন বলেন, এটা ভাবা বেশ আশ্চর্যজনক যে নেপচুনের মতো বিশাল কিছু সেখানে বসে থাকতে পারে আর কেউ তা লক্ষই করেনি। যথেষ্ট দূরে বলে হয়তো দ্রুত হারিয়ে যায়।
সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন গ রহ র স রজগত

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি