কুয়েটে ‘যোগ্য’ উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন
Published: 22nd, May 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তী উপাচার্য মো. হজরত আলীকে অপসারণ এবং একজন যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে দ্রুত অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে ‘শিক্ষক–শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কুয়েট শিক্ষক সমিতি গতকাল বুধবার এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বর্তমান অচলাবস্থার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আগের ভিসিকে (উপাচার্য) আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল যে আপনি তত দিন আমাদের ভিসি, যত দিন আমাদের কথা শুনবেন। আপনি আমাদের কথা শুনবেন না, আপনি আর আমাদের ভাইস চান্সেলর থাকবেন না। এই কথা না শোনার জন্য আন্দোলন হয়েছিল। আমরা শিক্ষকেরা তা শুরু থেকেই প্রতিবাদ করেছি। সরকার একজন নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার পর ক্যাম্পাসে আসার সঙ্গে সঙ্গে একই বার্তা দেওয়া হয়। তাঁরা কারা? তাঁরা কতজন? তাঁদের কথায় কি একটা প্রতিষ্ঠান চলবে? নাকি বিধিবিধান–শৃঙ্খলা মেনে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলবে? শুধু একটা জায়গাতেই শিক্ষকদের অবস্থান। একটা বিশ্ববিদ্যালয় কেউ কেউ, কোনো দল, কোনো গ্রুপ—কারও কথায় চলতে পারে না।’
শিক্ষকেরা মানববন্ধনে অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসছে না এবং স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁরা অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে একক সিদ্ধান্তে অচলাবস্থা তৈরির জন্য দায়ী করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই দ্রুত ক্লাসে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করে সরকারের কাছে যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানান।
গতকাল সাধারণ সভার মাধ্যমে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হজরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যকে দ্রুত পদত্যাগের দাবি জানায়।
১৯ থেকে ২২ মে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। তিন মাস আগের সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিল শিক্ষক সমিতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে প্রশাসন কিছু সিদ্ধান্ত নেয় এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়।
শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এটিকে প্রহসনমূলক আখ্যায়িত করেন। পরে একাডেমিক কার্যক্রম আবার চালু করা, একটি নতুন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং আগে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য শৃঙ্খলা কমিটির সভা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা আন্দোলনকারীদের জানান। উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তে শিক্ষক সমিতি ক্ষুব্ধ হয়ে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হজরত আলীর সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা শুরুতে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করলেও পরে তা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়। আন্দোলনের মুখে সরকার আগের উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য ন অবস থ ন র জন য আম দ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী পালিত
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী মানববন্ধন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্রের সামনে পাহাড় রক্ষা পরিবেশ, উন্নয়ন সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মৌলভীবাজার জেলা পাহাড় রক্ষা পরিবেশ ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি ময়নুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রভাষক সেলিম আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক হামিদা খাতুন, সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, নিছসা সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক রাসেল হাসান বক্ত, পরিবেশকর্মী সাজু আহমেদ, শাহারা ইসলাম রুহিন, শ্রমিক নেতা দুলাল মিয়া, ছাত্রনেতা লিটন গাজী, মিনহাজুল ইসলাম মুন্না, আব্দুল মতিন, মিসবাউর রহমান, আদিবাসী নেতা সুচিনগুল প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এখনও বাংলাদেশ সেই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারেনি। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় হলেও দেশের স্বার্থরক্ষায় আন্দোলনকারীরা সরব রয়েছেন। ২৮ বছর পার হয়ে গেলেও দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণ আদায়ে সচেতন হয়নি সরকার। বিষয়টি আমলে নেয়নি কোম্পানি।