খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তী উপাচার্য মো. হজরত আলীকে অপসারণ এবং একজন যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে দ্রুত অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে ‘শিক্ষক–শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কুয়েট শিক্ষক সমিতি গতকাল বুধবার এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বর্তমান অচলাবস্থার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আগের ভিসিকে (উপাচার্য) আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল যে আপনি তত দিন আমাদের ভিসি, যত দিন আমাদের কথা শুনবেন। আপনি আমাদের কথা শুনবেন না, আপনি আর আমাদের ভাইস চান্সেলর থাকবেন না। এই কথা না শোনার জন্য আন্দোলন হয়েছিল। আমরা শিক্ষকেরা তা শুরু থেকেই প্রতিবাদ করেছি। সরকার একজন নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার পর ক্যাম্পাসে আসার সঙ্গে সঙ্গে একই বার্তা দেওয়া হয়। তাঁরা কারা? তাঁরা কতজন? তাঁদের কথায় কি একটা প্রতিষ্ঠান চলবে? নাকি বিধিবিধান–শৃঙ্খলা মেনে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলবে? শুধু একটা জায়গাতেই শিক্ষকদের অবস্থান। একটা বিশ্ববিদ্যালয় কেউ কেউ, কোনো দল, কোনো গ্রুপ—কারও কথায় চলতে পারে না।’

শিক্ষকেরা মানববন্ধনে অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসছে না এবং স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁরা অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে একক সিদ্ধান্তে অচলাবস্থা তৈরির জন্য দায়ী করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত সবাই দ্রুত ক্লাসে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করে সরকারের কাছে যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানান।

গতকাল সাধারণ সভার মাধ্যমে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হজরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যকে দ্রুত পদত্যাগের দাবি জানায়।

১৯ থেকে ২২ মে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। তিন মাস আগের সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিল শিক্ষক সমিতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে প্রশাসন কিছু সিদ্ধান্ত নেয় এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়।

শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এটিকে প্রহসনমূলক আখ্যায়িত করেন। পরে একাডেমিক কার্যক্রম আবার চালু করা, একটি নতুন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং আগে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য শৃঙ্খলা কমিটির সভা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা আন্দোলনকারীদের জানান। উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তে শিক্ষক সমিতি ক্ষুব্ধ হয়ে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হজরত আলীর সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা শুরুতে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করলেও পরে তা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়। আন্দোলনের মুখে সরকার আগের উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ চ র য ন অবস থ ন র জন য আম দ র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ এলাকাবাসীর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়নের ইসলামপুর ভাঙ্গা ব্রীজ থেকে শশই সোনাই নদীরপাড় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

রবিবার (৬ জুলাই) সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন শশই উত্তর-মধ্যপাড়া ব্রিজ এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বুধন্তী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহবুব আলম সরদার, সমাজসেবক আব্দুল কায়ুম রাষ্টু মিয়া, আবুল খায়ের, মিয়া ইয়ার মোহাম্মদ, খালেদ রাসেল, মো. মুন্সী আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

অনুদান পায়নি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হাসিবের পরিবার

বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত, ৬ দিন পর মৃত্যু

বক্তারা বলেন, প্রায় ৭ মাস আগে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। কাজ শুরুর কিছুদিন পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়তে শুরু করেছে। স্থানীয়রা বারবার মান নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও তা আমলে নেননি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

তারা আরো বলেন, জনগণের করের টাকায় উন্নয়ন হলেও তার সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। বক্তারা প্রকল্পটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী দুর্নীতিমুক্ত ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির সাব-কন্ট্রাক্টর মনির হোসেন বলেন, “আমার কাজ এখনো শেষ হয়নি। কোথাও যদি নিম্নমানের কিছু হয়ে থাকে, তা অবশ্যই পরিবর্তন করা হবে। তবে রাস্তার দুই পাশে পাইপ বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কাজের মেয়াদ এখনো দুই মাস বাকি।”

এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, “কিছু নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ ছিল, যেগুলো ইতোমধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কাজ এখনো চলমান এবং কোনো ধরনের অনিয়মের সুযোগ নেই।”

ঢাকা/পলাশ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানিকগঞ্জে তাজিয়া মিছিল দেখতে সড়কের পাশে মানুষের ভিড়
  • মুকুলের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ২৩ ও ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপি মানববন্ধন 
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ এলাকাবাসীর
  • দোহারে বিএনপি নেতা শিক্ষক হারুনুর রশিদের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
  • কারবালা, আশুরা এবং সাহাবিদের দ্বিমত থেকে শিক্ষা
  • আ.লীগের দমন-পীড়ন ছিল ইয়াজিদ বাহিনীর পৈশাচিকতার সমতুল্য: তারেক রহমান
  • সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকলে ভোট বর্জনের হুঁশিয়ারি হিন্দু মহাজোটের
  • বন্দরে মুকুলের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন  
  • গাজীপুরে গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচারের দাবিতে কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন 
  • বিল্ডিংয়ের বাড়তি অংশ ভাঙার দাবিতে দক্ষিণখানে মানববন্ধন