পারিবারিক বিবাদের জেরে বড় ভাই সাহেদের সঙ্গে ঝগড়া হয় ছোট ভাই জাহেদ আর তাঁর স্ত্রী তাসনিমের। ঝগড়ার এক পর্যায়ে ভাঙচুর করা হয় ঘরের আসবাব। পরে সাহেদ ঘুমাতে গেলে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন জাহেদ ও তাসনিম। পরে লাশ গুম করতে অ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়ার চেষ্টা করেন দুজনে। তবে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরে কাপ্তাই রাস্তা মাথা থেকে মো.

জাহেদ (২৭) ও তাঁর স্ত্রী তাসমিন বিনতে আসলামকে (২৬) গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা-পুলিশ। এর আগে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের দুই নম্বর সড়কের এক বাসায় বড় ভাই সাহেদকে (৩৫) তাঁরা দুজন হত্যা করেন বলে দাবি পুলিশের।

পুলিশ জানায়, স্বামী-স্ত্রী দুজনই মাদকাসক্ত। বুধবার রাতে বড় ভাইয়ের সঙ্গে তাঁদের ঝগড়া হয়। এর জেরেই তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁরা। এরপর লাশ গুম করতে চট্টগ্রাম নগর থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন দুজন। খবর পেয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাহেদ ও জাহেদ রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের হাজি মীর হোসেন সওদাগর বাড়ির মৃত জালাল আহমেদের ছেলে। দুই ভাই-ই প্রবাসী।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন জানান, বড় ভাইকে হত্যার পর রাতের আঁধারে লাশ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর বড় ভ ই

এছাড়াও পড়ুন:

পারমিট জটিলতা কাটিয়ে আখাউড়া দিয়ে মাছ রপ্তানি শুরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় মাছ রপ্তানি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) জটিলতা কাটিয়ে মাছ রপ্তানি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১০টি গাড়িতে করে প্রায় ৭০ টন মাছ গেছে।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) হাতে না পাওয়ায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মাছ রপ্তানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১০ গাড়িতে প্রায় ৭০ টন হিমায়িত মাছ আগরতলায় রপ্তানি হয়েছে। এর আগে সকাল থেকে ৩টি ট্রাকে ৯০ টন পাথর ও ৬টি ট্রাকে ১০৬ টন ভোজ্যতেল ত্রিপুরার আগরতলায় পাঠানো হয়েছে। গত বুধবার এক্সপোর্ট পারমিট (ইএক্সপি) জটিলতায় মাছ ব্যতীত সিমেন্ট ও ভোজ্যতেল রপ্তানি হয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইএক্সপির প্রয়োজন হয়। ওই কাগজপত্র মাছ ব্যবসায়ীদের হাতে না পৌঁছানোয় তাঁরা গতকাল বুধবার ভারতে মাছ রপ্তানি করতে পারেননি। আজ বৃহস্পতিবার এক্সপোর্ট পারমিট হাতে পাওয়ায় জটিলতা দূর হয়েছে‌। তাই সকাল থেকে মাছ রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।

এদিকে ভারত সরকার হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে ৬টি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভারতের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, সুতা ও সুতার উপজাত এবং আসবাবপত্র। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ও কাঠের আসবাব ব্যতীত বাকি সব পণ্যই নিয়মিতভাবে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হতো। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে ৪২৭ কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ৪৩০ টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস জুলাই–এপ্রিলে রপ্তানি হয়েছে ৪৫৩ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৯৩ টাকার পণ্য। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্যতেল, তুলা, প্রক্রিয়াজাত খাবার, মেলামাইন সামগ্রী ও শুঁটকি।

আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, হিমায়িত মাছের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হতো প্লাস্টিক পণ্য, পিভিসি সামগ্রী, চিপস, বিস্কুট, ফলের স্বাদযুক্ত জুস ও তুলা। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৪৫ লাখ টাকা মূল্যের এসব পণ্য রপ্তানি হতো। ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞার কারণে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ