ইরান কীভাবে বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভাঙতে সক্ষম হচ্ছে
Published: 19th, June 2025 GMT
ইরানে গত শুক্রবার ইসরায়েলের বিমান হামলার পর পাল্টা জবাবে তেহরান দেশটিতে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছে। এর মধ্যে কিছু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় ইরানে এ পর্যন্ত ৭০ নারী–শিশুসহ ২৪০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এর জবাবে ইরান প্রায় ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও কয়েক শ ড্রোন নিক্ষেপ করে। এতে ইসরায়েলে অন্তত ২৪ জন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হন। দেশজুড়ে ইসরায়েলিরা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হন।
ইরানের কিছু হামলা ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের আবাসিক এলাকায় আঘাত হেনেছে, যাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি তেল আবিবে অবস্থিত সুরক্ষিত ইসরায়েলি সামরিক সদর দপ্তর কিরিয়াতেও হামলার ঘটনা ঘটে। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল সীমিত।
গতকাল মঙ্গলবার ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি পরিকল্পনা কেন্দ্রে আঘাত করেছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত ও বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে তারা।গতকাল মঙ্গলবার ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি পরিকল্পনা কেন্দ্রে আঘাত করেছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত ও বিশ্বের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে তারা।
সাম্প্রতিককালের ইতিহাস বলছে, ইসরায়েল আয়রন ডোমের মতো তার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে দেশটিতে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে।
তাহলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র কীভাবে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করছে, জানা যাক সেই প্রশ্নের উত্তর।
ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘আয়রন ডোম’। তবে এটি একটি বৃহত্তর বহুস্তর ও সমন্বিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নিচের স্তরমাত্র।অ্যালেক্স গ্যাটোপুলোস, আল–জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকআয়রন ডোম কী
ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘আয়রন ডোম’। তবে এটি একটি বৃহত্তর বহুস্তর ও সমন্বিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নিচের স্তরমাত্র বলে জানিয়েছেন আল–জাজিরার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যালেক্স গ্যাটোপুলোস।
আয়রন ডোম ধেয়ে আসা কোনো রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রকে শনাক্ত, এর গতিপথ নির্ধারণ ও ধ্বংস করে। ইসরায়েলের দাবি, এ ব্যবস্থা ৯০ শতাংশ সফল। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে মূলত ২০০৬ সালে সংঘটিত যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইসরায়েল ২০১১ সালে এ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। তখন হিজবুল্লাহর রকেট হামলা প্রতিহত করতেই আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।
গ্যাটোপুলোস জানান, আয়রন ডোম নিচু উচ্চতার রকেট থামানোর জন্য তৈরি, যেগুলো বৃহত্তর প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় ধরা পড়ে না।
ইসরায়েলের রেহোভত এলাকায় ইরানের হামলায় বিধ্বস্ত ভবন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চমক রেখে আর্জেন্টিনার নতুন স্কোয়াড ঘোষণা
নভেম্বর আন্তর্জাতিক উইন্ডোকে সামনে রেখে আর্জেন্টিনা ঘোষণা করেছে নতুন স্কোয়াড। যেখানে বড় চমক-দলে নেই বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তবে স্বস্তির খবর, আছেন দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। নতুন মুখ হিসেবে জায়গা পেয়েছেন তিন তরুণ প্রতিভা।
আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি এই উইন্ডোতে অভিজ্ঞদের বিশ্রাম দিয়ে তরুণদের সুযোগ দেবেন তিনি। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই মার্টিনেজসহ কয়েকজন তারকাকে বিশ্রাম দিয়েছেন তিনি। আসন্ন প্রীতি ম্যাচটি আফ্রিকান প্রতিপক্ষ অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে। যা অনুষ্ঠিত হবে ১৪ নভেম্বর। তার আগে স্পেনে হবে দলের সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি ক্যাম্প।
কম গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের কারণে স্থানীয় ক্লাবগুলোর খেলোয়াড়দের না ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। উদ্দেশ্য- দেশের ক্লাবগুলো যেন চলমান মৌসুমে খেলোয়াড় সংকটে না পড়ে। একই অবস্থান নিয়েছেন কোচ স্কালোনিও।
বাদ পড়েছেন যারা, ডাক পেয়েছেন নতুনরা:
গত উইন্ডোর দলে থাকা লিয়েন্দ্রো পারেদেস, গঞ্জালো মন্টিয়েল, লাউতারো রিভেরো ও মার্কোস আকুনা এবার জায়গা পাননি। তাদের জায়গায় প্রথমবারের মতো দলে জায়গা পেয়েছেন জোয়াকিন পানিচেল্লি, জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ানি ও ম্যাক্সিমো পেরোনে। এছাড়া ফিরে এসেছেন তরুণ ডিফেন্ডার ভ্যালেন্টিন বার্কো।
২৩ বছর বয়সী স্ট্রাইকার পানিচেল্লি এখন ফরাসি ক্লাব স্ট্রাসবুরের হয়ে খেলছেন। লিগ ওয়ানে এ মৌসুমে ১১ ম্যাচে ৯ গোল করে নজর কাড়েন তিনি। অন্যদিকে অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপে আলো ছড়ানো ১৯ বছর বয়সী প্রেস্টিয়ানি বর্তমানে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকায় খেলছেন। এখনো অভিজ্ঞতা অর্জনের পর্যায়ে থাকা এই উইঙ্গারের পায়ে ১৭ ম্যাচে ১ গোল ও ২টি অ্যাসিস্ট।
২২ বছর বয়সী মিডফিল্ডার ম্যাক্সিমো পেরোনে খেলছেন ইতালির ক্লাব কোমোতে। যেখানে তার সতীর্থ নিকো পাজ। মূলত রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হলেও আক্রমণ তৈরির দক্ষতায় স্কালোনির নজর কেড়েছেন তিনি।
২০২৪ সালের মার্চে এল সালভাদরের বিপক্ষে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া ভ্যালেন্টিন বার্কোও ফিরেছেন দলে। স্ট্রাসবুরের হয়ে এ মৌসুমে তার নামের পাশে আছে ১ গোল ও ৪ অ্যাসিস্ট।
অভিজ্ঞদের উপস্থিতি, মেসির খেলা অনিশ্চিত:
দলে আছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। যদিও তিনি খেলবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। অভিজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন রদ্রিগো ডি পল, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, হুলিয়ান আলভারেজ, লাউতারো মার্টিনেজ, নিকোলাস ওটামেন্ডি, নিকোলাস তালিয়াফিকো, নিকোলাস গঞ্জালেস ও জিওভান্নি লো সেলসো।
হলুদ কার্ডজনিত নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছেন মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজও। আর মার্টিনেজের অনুপস্থিতিতে গোলবার সামলাবেন জেরোনিমো রুলি ও ওয়াল্টার বেনিতেজ।
তরুণদের প্রতি স্কালোনির বিশ্বাস:
দলের এই পরিবর্তন নিয়ে আর্জেন্টিনার কোচ স্কালোনি বলেছেন, “এটা তরুণদের শেখার এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চের পরিবেশ বোঝার সুযোগ। অভিজ্ঞদের বিশ্রাম দরকার, আর ভবিষ্যতের জন্য নতুনদের প্রস্তুত করাই এখন লক্ষ্য।”
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা তাই নভেম্বর উইন্ডোকে ব্যবহার করছে একপ্রকার রিফ্রেশমেন্ট ক্যাম্প হিসেবে। যেখানে আগামী প্রজন্মের ফুটবলারদের প্রস্তুত করা হচ্ছে লিওনেল মেসিদের উত্তরসূরি হিসেবে।
আর্জেন্টিনার স্কোয়াড
গোলরক্ষক:
জেরোনিমো রুলি, ওয়াল্টার বেনিতেজ।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা, জুয়ান ফয়েথ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওটামেন্ডি, মার্কোস সেনেসি, নিকোলাস তালিয়াফিকো, ভ্যালেন্টিন বার্কো।
মিডফিল্ডার:
অ্যালেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার, এনজো ফার্নান্দেজ, রদ্রিগো ডি পল, জিওভান্নি লো সেলসো, থিয়াগো আলমাদা, ম্যাক্সিমো পেরোনে, নিকোলাস পাজ।
ফরোয়ার্ড:
লিওনেল মেসি, জুলিয়ান আলভারেজ, লাউতারো মার্টিনেজ, নিকোলাস গঞ্জালেস, জিওলিয়ানো সিমিওনে, হোসে ম্যানুয়েল লোপেজ, জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ানি, জোয়াকিন পানিচেল্লি।
ঢাকা/আমিনুল