বিটিএস সদস্যরা সামরিক জীবনে কী করেছেন
Published: 20th, June 2025 GMT
বিটিএস সদস্যরা যখন বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণে যাওয়ার ঘোষণা দেন, তখন তা শুধু দক্ষিণ কোরিয়া নয়—বিশ্বজুড়ে তাঁদের ভক্তদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল। ২০২২ সালে ব্যান্ডের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রিয় ব্যান্ডের এমন সিদ্ধান্তে অনেকে কষ্ট পেয়েছিলেন, অনেকে আবার গর্বিত ছিলেন। তবে বিটিএস সদস্যরা সব সময় জানিয়ে এসেছেন, বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণে যোগ দেওয়া তাঁদের দায়িত্ব, তাঁরা সেটা গর্বের সঙ্গে পালন করবেন। বিটিএসের সাত সদস্যদের মধ্যে ছয়জনই বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা শেষে একে একে ফিরে এসেছেন বেসামরিক জীবনে। সামরিক শৃঙ্খলার ঘেরাটোপে থেকেও তাঁরা কখনো কখনো ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। চিঠি কিংবা লাইভে এসে নিজেদের গল্প শুনিয়ে তাঁরা জানান দিয়েছেন, কেমন আছেন। একে একে শোনা যাক তাঁদের গল্পগুলো।
‘ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো ভুলে গিয়েছি’
২০২২ সালের ডিসেম্বরে জিন সবার প্রথমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন ৫ম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের রিক্রুট ট্রেনিং সেন্টারের সহকারী ড্রিল প্রশিক্ষক। এই ইউনিটেই পরে জিমিন ও জংকুক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সেনা ইউনিটের ভেতরে জিনের দায়িত্বশীলতা ও নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়। ভক্তদের উদ্দেশে তিনি মাঝেমধ্যে হাতে লেখা চিঠি বা উইভার্সে বার্তা পাঠিয়েছেন। ২০২৪ সালের ১২ জুন দায়িত্ব থেকে ফেরার পর লাইভে এসে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে এখন খুব অদ্ভুত লাগছে। মনে হচ্ছে, প্রথমবারের মতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম।’ প্রশিক্ষণ থেকে ফেরার পরদিনই তিনি ‘বিটিএস ফিস্টা ২০২৪’–এর মঞ্চে এসে ভক্তদের সঙ্গে দেখা করেন, অনেককে জড়িয়ে ধরেন। এটি ছিল ভক্তদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত!
জে-হোপের আত্মশুদ্ধির যাত্রা
জে-হোপ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। তিনি ছিলেন ৩৬তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের সক্রিয় সৈনিক। যদিও তিনি প্রকাশ্যে খুব বেশি কিছু বলেননি। তবে মাঝেমধ্যে উইভার্সে পোস্ট করে বা ছুটিতে লাইভে এসে তাঁর দিনগুলো সম্পর্কে বলেছেন। তিনি জানান, সময়টা শারীরিক ও মানসিকভাবে কষ্টকর হলেও তিনি এটিকে দেখেছেন আত্মশুদ্ধি ও নিজেকে গঠনের সময় হিসেবে। জে-হোপ বলেন, ‘সহনশীলতা, ধৈর্য আর দায়িত্বশীলতা—এই তিন জিনিস আমি গভীরভাবে শিখেছি।’
আরএমের দীর্ঘ রাতগুলো
সেনাজীবন শেষ করে বের হওয়ার সময় আরএম যখন স্যাক্সোফোন বাজাচ্ছিলেন, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, তাঁর পথটা বোধ হয় খুব মসৃণ ছিল। তবে বিষয়টা মোটেও সে রকম নয়। আরএম দায়িত্ব পালন করেছেন ১৫তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের মিলিটারি ব্যান্ডে। সেখানেই তিনি স্যাক্সোফোন বাজানো শেখেন। সেনাজীবনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, আমি আবার সেই ১৭ বছর বয়সী শিক্ষানবিশ একজন হয়ে গেছি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ট এস
এছাড়াও পড়ুন:
ইউআইইউ মার্স রোভার টিমের অনন্য সাফল্য, শুনুন পেছনের গল্প
মমঙ্গল গ্রহের উপযোগী রোবট বানিয়ে ‘ইউআইইউ মার্স রোভার টিম’ ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বমঞ্চে টানা ছয়টি সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের পতাকাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। প্রতিটি সাফল্যের পেছনে রয়েছে অদম্য সংগ্রাম, অধ্যবসায় ও নিরলস পরিশ্রমের গল্প।
সাফল্য এসেছে আন্তর্জাতিক পরিসরেঢাকার ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ইউআইইউ মার্স রোভার টিম ২০২৫ সালের ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ (ইউআরসি) প্রতিযোগিতায় এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বব্যাপী ষষ্ঠ স্থান অর্জন করে। এ ছাড়া প্রতিযোগিতার সায়েন্স মিশনে বিশ্বে প্রথমবারের মতো ১০০-এর মধ্যে পূর্ণ ১০০ নম্বর পেয়ে এক বিরল রেকর্ড করে। তবে এই মঞ্চে এটি তাদের প্রথম অর্জন নয়। সাফল্যের ধারাবাহিকতা চলছে টানা পাঁচ বছর ধরে। একই বছরে অনুষ্ঠিত আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে (এআরসি) দলটি ১৮ ফাইনালিস্টের মধ্যে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় এবং এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
যেভাবে শুরু২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় গঠন করেন ইউআইইউ মার্স রোভার টিম। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে তাঁরা বিশ্বমঞ্চে প্রথমবার সাফল্য নিয়ে আসেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৯৯টি দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ৩৬টি ফাইনালিস্ট দলকে পেছনে ফেলে এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বব্যাপী ১৩তম স্থান অধিকার করে দলটি।
২০২৩ সালে ১০৪টি দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে, ৩৭টি ফাইনালিস্ট দলের মধ্য থেকে ইউআইইউ বিশ্বব্যাপী নবম ও এশিয়ায় আবারও ১ম স্থান অধিকার করে। এ ছাড়া ২০২৩ সালে তুরস্কে আয়োজিত আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় ১৯টি ফাইনালিস্ট দলের মধ্যে ইউআইইউ তৃতীয় এবং সিস্টেম বিভাগের ম্যাটেরিয়াল সিলেকশন চ্যালেঞ্জে বিশেষ পুরস্কার অর্জন করে।
২০২৪ সালে ১০২টি প্রাথমিক দল ও ৩৮ ফাইনালিস্টের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম ও এশিয়ায় আবারও চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। ছয়টি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রতিবারই এশীয় অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিরল রেকর্ড করেছে ইউআইইউ মার্স রোভার টিম।
ইউআইইউ মার্স রোভার টিমের বানানো রোবট