মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা ‘ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না’ বলে যে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শনিবার (২১ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে এবং তার গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড এই বিষয়ে ভুল বলেছেন। এ মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলেন প্রেসিডেন্ট।

আরো পড়ুন:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

ইরান-ইসরায়েল ছেড়ে পালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা

শুক্রবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকরা ‘ইরান বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি অবস্থান’ সম্পর্কে জানতে চাইলে টাম্প বলেন, “তাহলে আমার গোয়েন্দা সংস্থা ভুল। কে বলেছে যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে না?” 

সাংবাদিকরা তখন উত্তর দেন, “আপনার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডই এই অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।” তখন ট্রাম্প পাল্টা জবাব দেন, “তিনি (গ্যাবার্ড) ভুল।”

এর আগে, ২৫ মার্চ কংগ্রেসে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে গ্যাবার্ড বলেন, “গোয়েন্দা তদন্তে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ কার্যক্রমের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং সর্বোচ্চ নেতা (আয়াতুল্লাহ আলি) খামেনি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি অনুমোদন করেননি।”

গোয়েন্দা প্রধান মার্কিন আইন প্রণেতাদের আরো বলেন, “তেহরান যদি তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পুনরায় অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আইসি (মার্কিন সংস্থা সংস্থাগুলোর কোড) নিবিড়ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করছে।”

তবে শুক্রবার ট্রাম্পের মন্তব্যের পর গ্যাবার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আমেরিকার কাছে তথ্য আছে যে, ইরান চাইলে কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত করতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেছেন, এটা হতে দেওয়া যাবে না, আর আমি এতে একমত।”

বিশ্লেষকদের মতে, গ্যাবার্ডের নতুন বক্তব্য আগের মূল্যায়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, কারণ তিনি এখনও দাবি করছেন না যে ইরান অস্ত্র তৈরি করছে।

গত ১৩ জুন থেকে আঞ্চলিক উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে, যার জবাবে তেহরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং কয়েশ শ’ আহত হয়েছে। ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত এবং ১,০০০ এরও বেশি আহত হয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তার মতে, ইসরায়েলের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেবল কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে। সিএনএন জানিয়েছে, হামলায় ইরানের নাতানজ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও, ফোরদোর ভারী সুরক্ষিত স্থাপনাটির তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি ইসরায়েল।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল য ক তর ষ ট র র ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ

প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের আলোর সমান শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার বা কৃষ্ণগহ্বর আলোকচ্ছটার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সবচেয়ে বড় আলোকচ্ছটা। নতুন পর্যবেক্ষণ করা ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারকে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বৃহৎ ও সবচেয়ে দূরবর্তী বলা হচ্ছে। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আলোকচ্ছটার শক্তি প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের সমান।

একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল বৃহৎ কোনো নক্ষত্রকে গিলে ফেলছে বলে এই আলোকচ্ছটা তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাথিউ গ্রাহাম বলেন, ‘এই ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে দূরবর্তী। আমাদের সূর্যের ভরের চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের একটি বিশাল নক্ষত্র অতিভারী ব্ল্যাকহোলের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলে এমন ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে বলে বিশাল পরিমাণ শক্তি নির্গত হচ্ছে।’ বিজ্ঞানী গ্রাহামের মতে, সেখানে বিশাল বিস্ফোরণের তীব্রতা ও স্থায়িত্বের কারণে এত বিশাল ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নিয়মিতভাবে নিকটবর্তী পদার্থকে গ্রাস করে থাকলেও এমন বিশাল মাত্রার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এমন বিশাল ফ্লেয়ার আগে যা দেখা গেছে, তার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। ফ্লেয়ারটি সর্বোচ্চ শিখরে থাকার সময় এখন পর্যন্ত দেখা যেকোনো ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। দুটি মহাজাগতিক বস্তুর বিশাল আকারের কারণে এমনটা হচ্ছে। সূর্য থেকে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রকে অতিভারী ব্ল্যাকহোল গ্রাস করেছে। ব্ল্যাকহোলের ভর সূর্যের ভরের ৫০০ মিলিয়ন গুণ বেশি বলা যায়। সাত বছরের বেশি আগে শুরু হওয়া এই বিস্ফোরণ সম্ভবত এখনো চলমান।

প্রাথমিকভাবে ২০১৮ সালে তিনটি স্থলভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জরিপের সময় ফ্লেয়ারের খোঁজ মেলে। তখন এটিকে ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল বস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২৩ সালে হাওয়াইয়ের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরি পর্যবেক্ষণ শুরু করে। বিজ্ঞানী গ্রাহাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার ব্ল্যাকহোলের আচরণ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে। প্রচলিত ধারণা অনুসারে মহাবিশ্বের বেশির ভাগ গ্যালাক্সির মাঝখানে একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এখন আমরা আরও গতিশীল পরিবেশ দেখছি। সুপারম্যাসিভ ধরনের ব্ল্যাকহোলকে অ্যাকটিভ গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস বলা হচ্ছে। এটিকে জে২২৪৫+৩৭৪৩ নামে নামকরণ করা হয়েছে।’

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ