বরগুনায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের যাত্রী বাবা–মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমতলী–পটুয়াখালী মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বলইবুনিয়া গ্রামের মাওলানা জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী মোসাদ্দেকা বেগম (২৪), শ্বশুর মৌলভি আজিজুল হক (৬৫) ও দাদি খালেদা বেগম (৫০)। আজিজুল হকের বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপার বলইবুনিয়া গ্রাম থেকে নিজের নবজাতক শিশুকন্যার চিকিৎসার জন্য স্বজনদের নিয়ে একটি ইজিবাইকে পটুয়াখালীতে যাচ্ছিলেন জাহিদুল ইসলাম। ইজিবাইকটি আমতলী–পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে গেলে কুয়াকাটাগামী ইকরা লাক্সারি পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। মুহূর্তেই ইজিবাইকটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই আজিজুল হক ও খালেদা বেগম নিহত হন। গুরুতর আহত হন মোসাদ্দেকা বেগম, জাহিদুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ও ইজিবাইকচালক ওহাব গাজী। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোসাদ্দেকাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল হাওলাদার ও মেহেদী হাসান বলেন, কুয়াকাটাগামী ইকরা লাক্সারি পরিবহনের গাড়িটি পটুয়াখালীর দিকে যাওয়া ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। এতে ইজিবাইকটি দুমড়েমুচড়ে সড়কের পাশে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। ইজিবাইকে থাকা শিশুকন্যাসহ আহত চারজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত জাহিদুল ইসলাম বলেন, নবজাতক শিশুকন্যাকে নিয়ে পটুয়াখালীতে চিকিৎসক দেখাতে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে স্ত্রীসহ কয়েকজন স্বজন ছিলেন। বেপরোয়া গতির গাড়িটি তাঁদের ইজিবাইকের ওপরে তুলে দেন চালক। এতে ঘটনাস্থলেই দাদি ও শ্বশুর মারা যান। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে তাঁর স্ত্রীও মারা যান। শিশুকন্যাও আহত। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আরিফুল ইসলাম বলেন, নিহত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। খবর পেয়েছেন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির মা মারা গেছেন। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ হ দ ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের পর রাকসু নির্বাচন চায় তিন প্যানেল

নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচন চান কয়েকটি প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আজ সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসের পরিবহন মার্কেটের আমতলায় সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাকসু ফর র‍্যাডিক্যাল চেঞ্জ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন হল ও সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

তাসিন খান বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন উপলক্ষে আমরা সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। কিন্তু পোষ্য কোটাকে সামনে এনে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, সেখানে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবাই মুখোমুখি অবস্থানে আছেন। এটা কারও কাম্য নয়। রাকসু দিতে হবে, তবে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

তাসিন খান বলেন, পোষ্য কোটা ইস্যুতে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে শিক্ষার্থীরা বাসায় চলে যাচ্ছেন। ধর্মীয় উৎসব ও শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণে প্রচারণা ব্যাহত হচ্ছে। ৩৫ বছর পর হতে যাওয়া রাকসু নির্বাচনকে এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

আরও পড়ুনশিক্ষকেরা ‘পিতৃতুল্য’, তাঁদের গায়ে হাত তোলা হয়নি, দাবি আম্মারের২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুনুজ্জামান স্নিগ্ধ বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। পরিবহন মার্কেটের আমতলা শিক্ষার্থীদের প্রাণ। এখানে প্রার্থী ছাড়া ভোটার নেই। এভাবে তো ৩৫ বছর পর একটা রাকসু হতে পারে না।

স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী শাহ পরাণ বলেন, ‘প্রচারণার কাজে হল ও মেসে গিয়েছি। সেখানে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী আছেন, বাকিরা চলে গেছেন।’

আরও পড়ুনছাত্রদল রাকসু নির্বাচন চায় পূজার পর, শিবির চায় নির্ধারিত সময়ে৪৯ মিনিট আগে

‘রাকসু ফর র‍্যাডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী মারুফ বলেন, ‘আমাদের ভোটাররা বাড়ি চলে গেছেন। অনেকেই যাবেন বলে চিন্তা করছেন। যদি এই শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে নির্বাচন কমিশন আনতে পারেন, তাহলে নির্বাচন হবে।’

গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস ছিল উৎসবমুখর। তবে সেদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাতিল হওয়া পোষ্য কোটা ১০ শর্তে পুনর্বহাল করে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। শনিবার জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষক-কর্মকর্তারা পোষ্য কোটা পুনর্বহাল ও শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবিতে রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। এখন তাঁরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে আছেন।

আরও পড়ুনরাতভর উত্তেজনার পর ক্যাম্পাস শান্ত, কর্মরিবতির মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আজ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের পর রাকসু নির্বাচন চায় তিন প্যানেল
  • নেত্রকোণায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির অর্ধশত কর্মী-সমর্থক