বন্দরে অটোস্ট্যান্ডের দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে আবদুল কুদ্দুস (৬০) ও মেহেদী (৩৮) নামে দুইজনকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত আব্দুল কুদ্দুস (৬০) বন্দর উপজেলার হাফেজীবাগ এলাকার মৃত সাদেক আলীর ছেলে ও রনি-জাফর গ্রুপের সমর্থক, মেহেদী (৩৮) সালেহ নগর এলাকার জলিল মুন্সির ছেলে ও বাবু-মেহেদী গ্রুপের সদস্য।

এ ঘটনায় রোববার (২২ জুন) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার।  এর আগে শনিবার (২১ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকায় ও গভীর রাতে সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের সামনে এ হত্যাকাণ্ড দুটি ঘটে।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানে শান্ত (২৫) ও রবিন (২৮) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- বন্দর উপজেলার হাফেজীবাগ এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে শান্ত (২৬), আলমচানের ছেলে রবিন (২৬) ও সেলিম চৌধুরীর ছেলে সোহেল চৌধুরী (২৮)।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি হত্যার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রোববার দুপুরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বন্দর রেললাইন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখা যায়।

জানা গেছে, বন্দর রেললাইন অটোস্ট্যান্ড নিয়ে কিছু দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাওসার আশার অনুসারী রনি-জাফর গ্রুপের সাথে ২১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির নেতা হান্নান সরকারের অনুসারী বাবু-মেহেদীর বিরোধ চলছিল।

এ নিয়ে গত শুক্রবার দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৮ জন আহত হন।

সেই বিরোধের জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাবু-মেহেদী গ্রুপের লোকজন রনি-জাফর গ্রুপের সমর্থক আব্দুল কুদ্দুসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই খবর পেয়ে নিহতের স্বজন ও রনি-জাফর গ্রুপের লোকজন রেললাইন সংলগ্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। 

এদিকে রাত ৩টার দিকে বন্দর সিরাজুদ্দৌলার ক্লাব মাঠ দিয়ে মেহেদী ও তার লোকজন যাওয়ার পথে তাদেরকে দেখে রনি-জাফর গ্রুপের লোকজন ধাওয়া দিয়ে মেহেদীকে ধরে গণপিটুনি দেয় ও ছুরিকাঘাতে আহত করে।

পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত মেহেদীর বোনের স্বামী মাহফুজুল সৌরভ বলেন, বন্দরে যখন মার্ডারটা হয় তখন মেহেদী ছিল বাড়িতে। ও থাকতো অন্তত এক কিলোমিটার দূরে আমিন আবাসিক এলাকায়। মার্ডারের পর প্রতিপক্ষের লোকজনকে খুঁজতে গেলে রাস্তায় মেহেদীরে পেয়ে যায়।

তারা মেহেদীকে তুলে সিরাজউদ্দোল্লা ক্লাবে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে বুক, মাথা আর মুখ একেবারে থেতলে দেয়। আমরা হাসপাতালে তার লাশ পাই।

এ বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির আবুল কাউসার আশা বলেন, রনি আর মেহেদীরা সব একই গ্রুপের লোক ছিল। ছাত্রদলের রাজনীতির সময় থেকেই দেখছি, তারা ছিল আপন দুই ভাইয়ের মতো।

আওয়ামী লীগের আমলে দুইজনে একসঙ্গে জেলও খাটছে।“কিন্তু গত ছয়মাস ধরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

তবে, এই দ্বন্দ্বে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে সাবেক এ কাউন্সিলর বলেন, দুইজনই হান্নান সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিল। স্থানীয় কারণে দুইজনের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এইটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মেহেদী ও রনি দু’জনই আমার ভাইয়ের মতো।

আমার সঙ্গে হান্নান কাকারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কিশোর গ্যাং ও মাদকের দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক কারণে আমাকে জড়ানো হচ্ছে। এটি পলিটিক্যাল কোনো ব্যাপার না।

তবে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে হান্নান সরকারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও তার সংযোগ পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড দুটি ঘটেছে। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে এবং যারা নেপথ্যে আছেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য সন ত র স স ঘর ষ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ জ ফর গ র প র দ বন দ ব ব এনপ র র ল কজন এল ক য় এল ক র উপজ ল হ নগর

এছাড়াও পড়ুন:

১৫নং ওয়ার্ডে নগর ভাবনার পরিচ্ছন্নতা অভিযান

“আমাদের নগর আমরাই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবো” এই স্লোগানকে সামনে রেখে নগর ভাবনা নামক সংগঠন এর পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা  করা হয়েছে।  শনিবার (২১ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের জিমখানা-জল্লার পার অংশের লেকে এ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন করেন বাসদ নারাণয়গঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য নগর ভাবনার আহ¦ায়ক এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, ১৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস। 

এতে অংশ গ্রহন করেন সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের সদস্য বৃন্দের মধ্যে এড. মাজেদুল হক রাজন, কাজী মাহবুবুল আলম জয়, মো. শাহাদাত হোসেন সিমন, নিগার সুলতানা পলি, ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, মো. ওমর ফারুক, মো. লিলু মিয়া, গোপাল ঘোষ, আবুল কালাম সাদিকা, রমেন্দ্র সরকার, অজয় বিশ^াস রিপন, তুলসী কুন্ডু, মুন্নি সরদার, মো. শাজাহান সহ বিভিন্ন এলাকার সদস্য বৃন্দ। 

এ সময় অসিত বরন বিশ^াস বলেন, এই নগর আমাদের সবার, নগরের লেক, পার্ক আমাদের, তাই নগরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে এবং জন সচেনতা তৈরী করে একটি সুন্দর ও স¦াস্থ্যসম্মত নগরী গড়ে তোলা সম্ভব। 

তিনি আরও বলেন, সরকারি সম্পত্তি মানে সরকারি কর্মচারি কর্মকর্তারা মালিক এটা ঠিক নয়। সরকারি সকল সম্পত্তির মালিক হচ্ছেন জনগন। তিনি লেকের পানিতে বালিশ ও তোষক ভেসে থাকতে দেখে বলেন, একজন মানুষ চরম দায়িত্বহীন হলেই লেকের মধ্যে বালিশ ও তোষক ফেলতে পারে। 

তাই জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎বন্দরে জোড়া খুন : নেপথ্যে আবুল কাউসার আশা? 
  • বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ, দুই ঘণ্টা ব্যবধানে নিহত ২
  • এমপি হতে চাইলে উদার মনের অধিকারী হতে হবে : গিয়াস উদ্দিন
  • না’গঞ্জকে আরও সুপরিচিত করতে সাইনবোর্ডে স্থাপন করবো গেইট অফ ড্যান্ডি : ডিসি
  • মহাসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে শ্রমিক আন্দোলনের প্রস্তুতি সভা
  • নারায়ণগঞ্জে চার ঘণ্টার ব্যবধানে জোড়া খুন
  • ১৪নং ওয়ার্ড জুড়ে ফ্যাসিস্টের দোসর জানে আলমের পোস্টার, ক্ষোভ 
  • ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র জরুরি সভা অনুষ্ঠিত 
  • ১৫নং ওয়ার্ডে নগর ভাবনার পরিচ্ছন্নতা অভিযান