জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন আহত হয়েছে। তারা হলেন– এনসিপির ঢাকা মহানগরের নেতা আসিফ উদ্দিন সম্রাট, যুব শক্তির সংগঠক আবদুর রব ও এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের নেতা শফিকুল ইসলাম। তারা কান ও চোখে আঘাত পেয়েছে।

এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ রানা সমকালকে বলেন, রাজধানীর বাংলামোটর রূপায়ন টাওয়ার (দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়) থেকে আখতার হোসেন বের হয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়ে দুর্বৃত্তরা।

তিনি বলেন, সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকারে থেকে ককটেল ছুড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসছে। এর আগে রোববার রাতেও এনসিপি অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সু্ষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ রানা বলেন, আখতার হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবের দাবি, এনসিপির নিবন্ধন ইস্যুতে দলের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। এছাড়া মানুষ এনসিপি অফিসে আসা শুরু করেছেন। সেজন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে। 

ঢাকার রমনা থানার এসআই মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ঘটনা শোনার পরই পুলিশ ফোর্স এনসিপি কার্যালয়ের সামনে গেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রাইভেটকার থেকে একটি ককটেল ছোড়া হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প আখত র হ স ন আখত র হ স ন এনস প র ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

গোয়ালন্দে বেড়াতে আসা তরুণী ও কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেড়াতে এসে এক তরুণী (২০) ও এক কিশোরী (১৫) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা। আজ শুক্রবার গোয়ালন্দ থানায় হওয়া মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।

দুজনকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার বিল মামুদপুর গ্রামের ফয়সাল শেখ (২২), গোয়ালন্দ উপজেলার পূর্ব উজানচর দরাপের ডাঙ্গী গ্রামের রাকিব মোল্লা (২১) ও উজানচর গণি শেখের পাড়ার সজীব মোল্লা (২৪)। আজ বিকেলে তিন আসামিকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী তরুণী ফরিদপুরের একটি সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আগামী রোববার তাঁর পরীক্ষা রয়েছে। আর কিশোরী শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তাঁরা সম্পর্কে খালা ও ভাগ্নি।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তরুণী কলেজে যাতায়াতকালে ফয়সাল তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। কয়েক মাস আগে তরুণীর বাবা ফয়সালের বাবার কাছে বিচার দেন। এতে ফয়সাল আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময় ফয়সাল অন্যত্র বিয়ে করেন। বিয়ের পরও মাঝেমধ্যে তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। ফয়সাল গোয়ালন্দের গোধূলি পার্কসংলগ্ন একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ফয়সাল ওই তরুণীকে ফোন করে গোধূলি পার্কে বেড়াতে আসার প্রস্তাব দেন। ওই তরুণী তাঁর প্রতিবেশী ভাগ্নি ও এক বন্ধুকে নিয়ে বিকেলে গোধূলি পার্কে আসেন। সন্ধ্যার দিকে অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজন তরুণ এসে এই তিনজনকে পার্কের ভেতর স্থানীয় এক বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের দুটি মুঠোফোন এবং পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। সন্ধ্যার পর ফয়সাল তাঁদের এগিয়ে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে দেরি করাতে থাকেন। পরে রাত ৯টার দিকে উজানচর রিয়াজ উদ্দিনপাড়ার একটি কাঁচা রাস্তায় নিয়ে যান। সেখানে ফয়সালের সহযোগিতায় অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে ওই তরুণী ও কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এ কথা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তরুণীরা দৌড়ে স্থানীয় এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

আজ দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা রায়হান মোল্লার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্না করতে করতে দুটি মেয়ে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় দৌড়ে তাঁর বাড়িতে এসে আশ্রয় নেন। তাঁদের কাছ থেকে ঘটনা জানার পর ওই তরুণীর বাবাকে জানানো হয়। তিনি দিবাগত রাত ১২টার দিকে এসে তাঁদের নিয়ে যান।

এদিকে ঘটনার দুই দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে উজানচর আবুলের দোকান নামক এলাকায় ফয়সালের সহযোগিতায় স্থানীয় লোকজন ধর্ষণে অভিযুক্ত রাকিব ও সবুজকে ধরে মারপিট করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাকিব ও সবুজ এবং পাশে পালিয়ে থাকা ফয়সালকেও গ্রেপ্তার করে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, তরুণীর বাবা বাদী হয়ে আজ গ্রেপ্তার তিনজনসহ সাতজনকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। তিন আসামিকে বেলা তিনটার দিকে রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জবানবন্দি প্রদানের জন্য ভুক্তভোগী ব্যক্তিদেরও আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল শনিবার তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ