সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে
Published: 3rd, July 2025 GMT
মানিকগঞ্জ–১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরের পর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক সাদবীর ইয়াছির।
নাঈমুর রহমানকে আদালতে আনার খবরে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। তাঁরা আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি তুলে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আরও পড়ুনসাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার১৮ ঘণ্টা আগেপুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন মানরা এলাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ছাত্র–জনতার ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন দলটির নেতা–কর্মীরা। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও মানুষ গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সাদিকুল ইসলাম নামের এক যুবক বাদী হয়ে নাঈমুর রহমানসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এতে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া নাঈমুর রহমানের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানায় আরও একটি মামলা আছে। সেখানে তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার পর গুরুতর আহত করার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আলম।
আরও পড়ুননাঈমুর রহমান দুর্জয় ও তাঁর স্ত্রীর ফ্ল্যাট, প্লট, গাড়ি জব্দের আদেশ২১ জানুয়ারি ২০২৫রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। কেউ কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। আসামি নাঈমুর রহমান অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিলেন।
গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে নাঈমুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। এরপর রাতেই তাঁকে মানিকগঞ্জে নিয়ে সদর থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন নাঈমুর রহমান। পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ–১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ–বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ অক্টোবর সাবেক এই সংসদ সদস্য ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ঢাকার একটি আদালত।
আরও পড়ুনসাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ০৩ অক্টোবর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ আমার বিষয়
lশৈশবের প্রিয় মুহূর্ত
আমার বাবা সরকারি চাকরির সুবাদে চন্দ্রঘোনায় থাকতেন। শৈশবের কিছু মুহূর্ত আছে; যা ভুলতে পারি না। এখন বয়স বেড়ে গেছে কিন্তু সেসব মুহূর্ত চোখের সামনে ভাসে। আমাদের বাসাটি ছিল একদম পাহাড়ের চূড়ায়। খুব সুন্দর। তখন আমি চন্দ্রঘোনায় কেপিএম হাইস্কুলে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করি। সেই সময়কার স্মৃতি খুব বেশি মনে পড়ে। পাহাড়ি এলাকায় আমরা স্কুলে যেতাম। খুব আনন্দ করেই যেতাম। সাম্পানওয়ালা দেখতাম। স্কুল থেকে নদীর ওপারে ঘুরতে যেতাম। আমাদের স্কুলটি ছিল বেশ আধুনিক। শিল্পচর্চা হতো। সেখান থেকেই আমার মনের ভেতরে প্রেরণা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ছবি আঁকা বা অনেক কাজ করতে উৎসাহ পেয়েছি। পাঁচ দশক ধরে চারুকলার অঙ্গনে কাজ করে আসছি। আমি পাস করার সাথে সাথেই লেকচারার হিসেবে যোগদান করেছি। সেই থেকে এখনও একটি কথাই বলি, আমি কিন্তু ক্যারিয়ার সচেতন ছিলাম না। অনেকেই ক্যারিয়ার ছাড়া কিছু বোঝে না। আমি সাংসারিক একজন মানুষ। আমার স্বামী চিত্রশিল্পী শওকাতুজজামান মাটির মানুষ ছিলেন। তিনি মারা গেছেন দুই দশক হয়। আমার বাচ্চাদের কোলেপিঠে নিয়ে কাজ করেছি। সারারাত কাজ করতাম, সারাদিন সংসার ও শিক্ষকতায় ব্যস্ত থাকতাম। আমার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের সঁচিয়াখালী। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ি যেতাম। নৌকায় করে একদম বাড়ির ভেতর পর্যন্ত যেত। তখন যা দেখেছি নিজের ভেতর তা আত্মস্থ করেছি। ‘জাল’ সিরিজের ছবি তারই প্রতিফল। বাংলাদেশকে আমি ধারণ করার চেষ্টা করি। এই ধারণ করাটা আমার ভেতর থেকে আসে। ইচ্ছে করলেও সরে যেতে পারি না। বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড পেতাম দেশের বাইরে থেকে। সেখান থেকে আমন্ত্রণ পেতাম। সরকারি ও বেসরকারি নিমন্ত্রণে দেশের বাইরে অনেকবার গিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন দেশের কাজ দেখেছি। কিন্তু আমার নিজের দেশের সংস্কৃতি, সোঁদা মাটির গন্ধ ভুলে যেতে পারিনি।
lআড্ডা-তর্কে সঙ্গী যারা
আমি কাজপ্রিয় মানুষ। অনেকেই মনে করে আমি কম কথা বলি। সংসার জীবন বা সামাজিক জীবন বলেন আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ; নিজের মতো করে চলি। সততা নিয়ে চলি। ছবি বিক্রির জন্য কখনও ক্রেজি হয়ে যাই না।
lপ্রথম চিত্র প্রদর্শনী
১৯৭৮ সালে চারুকলায় প্রদর্শিত হয়। সেটা ছিল অন্যরকম অনুভূতি।
lপ্রিয় চিত্রশিল্পী, যে কারণে প্রিয়
দেশে বা দেশের বাইরে অনেকেই প্রিয় চিত্রশিল্পী। ফিদা, মার্ক সেগোল। মনোজের কথা মনে পড়ে। তাঁর কালার আমার খুব পছন্দ। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে কে জি সুব্রামানিয়ান খুব প্রিয়। আধুনিক চিত্রকলার চোখ খুলে দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের মধ্যে জয়নুল আবেদিন, রফিকুন নবী, আনোয়ারুল হক, কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, মনিরুল ইসলামের কাজ ভালো লাগে।
lযা আঁকছি
আমি চিত্রে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বাংলাদেশ আমার বিষয়। সে হিসেবে এখন বিভিন্ন সিরিজ নিয়ে কাজ করছি।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
আমি সততা নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। সততা ও পরিশ্রম যার ঊর্ধ্বে কিছু নেই। v
lগ্রন্থনা: ফরিদুল ইসলাম নির্জন