মানিকগঞ্জ–১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরের পর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক সাদবীর ইয়াছির।

নাঈমুর রহমানকে আদালতে আনার খবরে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। তাঁরা আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি তুলে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

আরও পড়ুনসাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার১৮ ঘণ্টা আগে

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন মানরা এলাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ছাত্র–জনতার ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন দলটির নেতা–কর্মীরা। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও মানুষ গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সাদিকুল ইসলাম নামের এক যুবক বাদী হয়ে নাঈমুর রহমানসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এতে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া নাঈমুর রহমানের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানায় আরও একটি মামলা আছে। সেখানে তাঁকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার পর গুরুতর আহত করার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আলম।

আরও পড়ুননাঈমুর রহমান দুর্জয় ও তাঁর স্ত্রীর ফ্ল্যাট, প্লট, গাড়ি জব্দের আদেশ২১ জানুয়ারি ২০২৫

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। কেউ কেউ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। আসামি নাঈমুর রহমান অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিলেন।

গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে নাঈমুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। এরপর রাতেই তাঁকে মানিকগঞ্জে নিয়ে সদর থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন নাঈমুর রহমান। পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ–১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ–বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ অক্টোবর সাবেক এই সংসদ সদস্য ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ঢাকার একটি আদালত।

আরও পড়ুনসাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ০৩ অক্টোবর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ গত বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।

এর আগে গত ১০ আগস্ট রাতে খসড়া ভোটার তালিকা ও খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে যেসব শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় আসেনি তাঁদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়। যাচাই–বাছাই শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ করেছে কমিশন।

কোন হলে কত ভোটার

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী ২১টি আবাসিক হলে মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ৫ হাজার ৮৬০, আর ছাত্রী ভোটার ৬ হাজার ০৫৯।

ছাত্র হল

আলবেরুনী হলে ২১১, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৪১, শহীদ সালাম–বরকত হলে ২৯৯, মওলানা ভাসানী হলে ৫২১, ১০ নম্বর হলে ৫৪০, শহীদ রফিক–জব্বার হলে ৬৫৬, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫৭, ২১ নম্বর হলে ৭৫২, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯৪, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ৯৫৪, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৭৭ জন।

ছাত্রী হল

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৮২, জাহানারা ইমাম হলে ৪০০, প্রীতিলতা হলে ৪০২, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪১৭, সুফিয়া কামাল হলে ৪৬০, ১৩ নম্বর হলে ৫৩২, ১৫ নম্বর হলে ৫৭৬, রোকেয়া হলে ৯৫৭, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৮০৮, বীর প্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন।

আজ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং আগামীকাল মঙ্গলবার একই সময়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। তবে প্রার্থীকে নিজে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হবে।

মনোনয়নপত্রের নির্দেশনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সাত দফা নির্দেশনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে রয়েছে—

১. একজন প্রার্থী একাধিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

২. প্রতিটি মনোনয়নপত্রে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থকের স্বাক্ষর, শিক্ষাবর্ষ ও বিভাগ উল্লেখ করতে হবে।

৩. একই ব্যক্তি একাধিক প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থক হতে পারবেন না (কার্যকরী সদস্য পদ ছাড়া)। কার্যকরী সদস্য পদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয়জনের (তিন নারী, তিন পুরুষ) প্রস্তাবক বা সমর্থক হওয়া যাবে।

৪. মনোনয়ন জমার সময় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র বা ছবিযুক্ত লাইব্রেরি কার্ড/ইনডেক্স কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।

৫. প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে সব পাওনা পরিশোধের প্রমাণ দিতে হবে।

৬. মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে (দুই মাসের বেশি পুরোনো ছবি গ্রহণযোগ্য নয়)।

৭. প্রতিটি হলে মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের জন্য পৃথক রেজিস্ট্রার খাতা সংরক্ষণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ