ঘুষ নি‌য়ে কর ফাঁকির সু‌যোগ ক‌রে দেওয়া, ঘুষ না দি‌লে মামলা দি‌য়ে হয়রা‌নির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কমিশনারসহ আরো পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুদ‌কের ডেপু‌টি ডিরেক্টর (জনসং‌যোগ) আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তি‌নি ব‌লেন, “এ‌নবিআ‌রের ঢাকা পূর্বের কমিশনার (কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট) কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বেনাপোল স্থলবন্দরের কমিশনার মো.

কামরুজ্জামান, উপ কর-কমিশনার মো. মামুন মিয়া, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আয়কর গোয়েন্দা ইউনিট) সেহেলা সিদ্দিকা ও কর অঞ্চল-২ এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদের বিরু‌দ্ধে কর ফা‌কিসহ নানা অভিযোগে এই অনুসন্ধান চালা‌নো হ‌চ্ছে।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান

এস আলম ও পিকে হালদারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা

দুদক জানায়, কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করেন বলেও অভিযোগ আছে।

এর আগে একই অভিযোগে গতকাল আরো ৫ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, সদস্য লুতফুল আজীম, সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম ও যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাছান।

এর আগে গত ২৯ জুন এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানায় দুদক।  যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন-এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক ও অতিরিক্ত কমিশনার ও সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য সাধন কুমার কুন্ডু।

গত মাসে এনবিআরে সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আন্দোলন হয়।

দুদ‌কের অনুসন্ধা‌নে এ পর্যন্ত তা‌লিকায় যা‌দের নাম র‌য়ে‌ছে তা‌দের অধিকাংশ অন্দোলনে জ‌ড়িত ছিল।
বৃহস্প‌তিবার যে অনুসন্ধা‌নের তা‌লিকায় যে পাচজ‌নের নাম এসেছে সেহেলা সিদ্দিকা আন্দোলনের সময় ঐক্য পরিষদের মুখপাত্র ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনব আর কর মকর ত র ম হ ম মদ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সীমিত আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়বে

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য কোনো সুসংবাদ দেননি। দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি দাপট দেখালেও আয়করের সীমা না বাড়ানোয় তঁাদের কপালে ভাঁজ থেকেই গেছে। ফলে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি যাঁদের বার্ষিক আয়, তাঁদের আয়কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু অর্থবছরের পয়লা দিন প্রবীণ, অবসরভোগী ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য নতুন দুঃসংবাদ হলো সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমে যাওয়া।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে আগামী ছয় মাসের জন্য সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানো হয়েছে। ১ জুলাই থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। নতুন হার অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

পৃথিবীর সব কল্যাণকামী রাষ্ট্রেই প্রবীণ, অসমর্থ ও অবসরভোগী মানুষের জন্য আর্থিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। সেটি কোথাও নগদ অর্থ বা কম দামে পণ্য কেনার সুযোগের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এতটাই ভঙ্গুর যে খুব কম মানুষ এর থেকে সুবিধা পান। বিগত সরকারের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে সেই নিরাপত্তা কর্মসূচির সুফল যাঁদের পাওয়ার কথা, তাঁরা পাননি। সে ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের একাংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লভ্যাংশের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং এখনো আছেন। ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোয় তাঁরা বিপদে পড়বেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যে দেখা গেছে।

তবে সরকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার তুলনামূলকভাবে বেশি দেওয়ায় অপেক্ষাকৃত সীমিত আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন, যদিও তা আগের মতো নয়। কম বিনিয়োগে বেশি সুদের হার এবং বেশি বিনিয়োগে কম সুদের হার—সরকারের এই নীতি সঠিক বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে সীমা সাড়ে ৭ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ করা যেতে পারে। কেননা সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে একজন মানুষ মাসে যে লভ্যাংশ পাবেন, তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয় কোনোভাবেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই কমিশনারসহ এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
  • সীমিত আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়বে
  • আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার শর্ত কী, আসিফ মাহমুদ কীভাবে লাইসেন্স পেলেন
  • অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন ১৭ লক্ষাধিক করদাতা
  • অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল ১৭ লাখ ছাড়াল