হাতকড়া খুলে আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি গ্রেপ্তার
Published: 5th, August 2025 GMT
বরগুনার আদালত চত্বর থেকে হাতকড়া খুলে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে সদর উপজেলার ক্রোক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে রবিবার বিকালে আদালত থেকে জেলহাজতে পাঠানোর সময় হাতকড়া খুলে পালিয়ে যায় এ আসামি।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াকুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আল আমিন উপজেলার লেমুয়া পাঠাকাটা গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে।
সদর থানা পুলিশ জানায়, আল আমিনের বিরুদ্ধে তার প্রথম স্ত্রী ২০১৮ সালে বরগুনা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি পারিবারিক মামলা করেন। মামলায় আল আমিনের বিরুদ্ধে ডিক্রি জারি করা হয়। এমনকি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত শনিবার বরগুনা থানার পুলিশ আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার আদালতে হাজির করলে সিনিয়র সহকারী জজ তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিকালে আসামিদের কারাগারে নেওয়ার পথে জেলা ও জজ আদালতের দক্ষিণ পাশের প্রধান ফটকের সামনে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় আল আমিন হাতকড়া খুলে পালিয়ে যায়।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াকুব হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, “এই ঘটনায় অপরাধীকে পুনরায় গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তবে, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এক পুলিশ অফিসারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর বরগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দায়বদ্ধতা থেকে সাজিদের ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত নেওয়ার চেষ্টা করেছি;
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যর রহস্য উদঘাটনে ভিসেরা রিপোর্ট প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন পুলিশের এআইজি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ড. আশরাফুর রহমান। বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, সাজিদ হত্যার রহস্য উদঘাটনে সবচেয়ে বেশি জরুরি ও প্রয়োজন হয়ে পড়ে সাজিদের মৃত্যুর ভিসেরা রিপোর্ট। এতে সাজিদ হত্যার ইস্যুতে নিজের দায়বদ্ধতা থেকে ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানান এআইজি আশরাফ।
থানা পুলিশের মাধ্যমে জানা গেছে, ভিসেরা রিপোর্ট আসতে সাধারণত এক থেকে দুই মাস সময় লাগে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি সময়ও লেগে যায়।
আরো পড়ুন:
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ অনুষ্ঠান ঘিরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির নির্দেশনা
দুদকের মামলায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক কারাগারে
ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞের মতে, ভিসেরা রিপোর্ট সাধারণত ময়নাতদন্তের পর পরীক্ষাগারে পাঠানো হয় এবং ফলাফল আসতে সাধারণত ৪ থেকে ৮ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। এটি নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ফরেনসিক ল্যাবরেটরির কাজের গতি এবং মামলার গুরুত্বের উপর।
গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুর ১৭ দিনের মাথায় ভিসেরা রিপোর্ট প্রকাশের মাধ্যমে সাজিদের হত্যার কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। এক্ষেত্রে ডিআইজি আশরাফের ভূমিকা নিয়ে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করছেন।
গত রবিবার (৩ আগস্ট) সাজিদের মৃত্যুর প্রকাশিত ভিসেরা রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সাজিদের শরীরে কোনো বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের সময় থেকে আনুমানিক ৩০ ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি মহাখালীর রাসায়নিক পরীক্ষাগারের প্রধান নজরুল ইসলাম ও খুলনা বিভাগীয় পরীক্ষক জনি কুমার ঘোষ।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “ভিসেরা রিপোর্টে যেটা এসেছে, সেটা থেকে বোঝা যাচ্ছে এটা হত্যাকাণ্ড।”
দ্রুত ভিসেরা রিপোর্ট প্রকাশের বিষয়ে এআইজি ড. আশরাফ বলেন, “যেহেতু আমি এ বিভাগে আছি, আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি, আবার আমার বিশ্ববিদ্যালয়েই একজন শিক্ষার্থী মারা গেছে; যেভাবেই হোক মারা গিয়েছে। তার প্রতি আমাদের দায় আছে না? তো সেই দায়বদ্ধতা থেকে চেষ্টা করেছি, যাতে ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত দিয়ে দেওয়া হয়। বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন হিসেবে আমি সুপারিশ করেছি, ওইভাবে তারা বিবেচনা করেছে।”
তিনি বলেন, “মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। আর সোমবার (৪ আগস্ট) সিন্ডিকেট সভা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তায় যে সিদ্ধান্ত হবে, সে অনুযায়ী কাজ করা উচিত।”
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “আশরাফ ভাই পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কৃতী শিক্ষার্থী ও সিনিয়র হিসেবে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, “কারো সহায়তা ছাড়া এত দ্রুত ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব হয় না। সারা দেশের ভিসেরা এক জায়গায় হয়। তো এসব রিপোর্ট পেতে মিনিমান দুইমাস, অনেক ক্ষেত্রে ১ বছরও লেগে যেতে পারে। এই রিপোর্ট খুব দ্রুত হয়েছে, যা অকল্পনীয়।”
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় আমি রুটিন দায়িত্বে উপাচার্য হিসেবে ছিলাম। আমি যখন দেখলাম সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ বোধ করছে না। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসকে শান্ত রাখতে এবং ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে চলার জন্য কাজ করেছি। এজন্য নিজের দায়িত্বের জায়গা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে এআইজি আশরাফকে তাগাদা দিয়েছি এবং আমি জোরালোভাবে তাকে অনুরোধ করেছি, যাতে সাজিদের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়।”
গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। সাজিদের হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আবার উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। সর্বশেষ সাজিদের পরিবার সোমবার (৪ আগস্ট) অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী