কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবাসহ একই পরিবারের তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমিন এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন ইউনিয়নের ভাটিয়া জহিরকোনা গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর (৭৩), তাঁর ভাই খুর্শিদ মিয়া (৫২) ও ভাতিজা সাদেক মিয়া (৩৬)। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা আদালতে ছিলেন না।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, করিমগঞ্জের ভাটিয়া জহিরকোনা এলাকার আনোয়ারুল ইসলামের (আঙ্গুর) সঙ্গে জমিজমা নিয়ে একই এলাকার আবু বকর সিদ্দিকসহ কয়েকজনের বিরোধ ছিল। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট আনোয়ারুল ও তাঁর ভাই-ভাতিজা মিলে মেয়ে মীরা আক্তারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। পরে তার লাশ বাড়ির পেছনে জঙ্গলে ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় পরদিন আনোয়ারুল বাদী হয়ে আবু বকরসহ ১৬ জনের নামে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ হত্যার সঙ্গে আনোয়ারুল ইসলামসহ কয়েকজন স্বজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।

ওই হত্যা মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছিল, তাঁদের জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই দিন করিমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অলক কুমার দত্ত বাদী হয়ে নিহত মীরার বাবা আনোয়ারুল ইসলাম, তাঁর ভাই খুর্শিদ মিয়া, ভাতিজা সাদেক মিয়া ও আনোয়ারুলের  স্ত্রী মোছা.

নাজমুন্নাহারকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ চার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

কিশোরগঞ্জ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জালাল উদ্দিন বলেন, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় নিহতের বাবাসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড করা হয়েছে। তবে নিহতের মা আসামি নাজমুন্নাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। তিন আসামিই জামিনে গিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় কথিত বিএনপি নেতার হামলায় সাংবাদিকসহ আহত ৩

ফতুল্লায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে কথিত বিএনপি নেতার হামলায় আহত হয়েছে জাগো নিউজের প্রতিনিধি, ক্যামেরা ম্যানসহ ৩ জন। ওই সময়ে তারা ক্যামেরা ও মোবাইল ভাঙচুর করেছে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী বাহিনী তিনজনকে আটকে বেধড়ক মারধর করেছে। 

তাদের নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর)বিকেলে ফতুল্লার গিরিধারা বউবাজার এলাকাতে ওই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ হামলাকারী কথিত বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেনকে (৬০) আটক করেছে। সে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি আতা-ই-রাব্বির বাবা।

জাগো নিউজের সাংবাদিক মো. আকাশ জানান, গিরিধারা বউবাজার এলাকাতে এক নারীর অভিযোগ ছিল তাদের জমি দখল করে রেখেছিল বিএনপির নামধারী নেতা শাহাদাত ও তার ছেলে রাব্বি। ওই ঘটনায় নারী ফতুল্লা থানায় একাধিকবার জিডি করেছেন। বিষয়টি জানতে বুধবার বিকেল ৪টায় ঘটনাস্থলে যাই। 

সেখানে গিয়ে নারীর সঙ্গে কথার খবর পেয়ে শাহাদাত লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিত হামলা করে। আমার সঙ্গে থাকা ক্যামেরাম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন ও আয়াজকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।

এক পর্যায়ে টেনে হেচড়ে একটি রুমে আটকে লাঠিসোটা ও রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। তাদের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল ভেঙে ফেলে। পরে রুমে আটকে মোবাইল ভাঙচুর করে।

খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করা হয়। পুলিশ গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করেছে। তাদের খানপুরে ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, শাহাদাতকে আটক করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নরসিংদীতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার আরও ৩
  • ফতুল্লায় কথিত বিএনপি নেতার হামলায় সাংবাদিকসহ আহত ৩