লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে নৌকায় রান্নার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চার জেলে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এই দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের পাশে মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন আমজাদ হোসেন (৪০), ফারুক হাওলাদার (৪০), আবদুল গনি (৫০) ও আবুল খায়ের (৩০)। তাঁদের মধ্যে আমজাদ ও ফারুকের শরীর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পুড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাঁরা জেলার রায়পুর উপজেলার চর কাছিয়া এলাকার সৈয়দ আহমদ ও শরীয়তপুরের বাদশা হাওলাদারের ছেলে। দগ্ধ অন্য দুজনের শরীর সামান্য পুড়েছে।

জানতে চাইলে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামনাশিস মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘দগ্ধ চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের দ্রুত ঢাকা পাঠানো হয়েছে। অন্য দুজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

রামগতি বড়খেরী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারটি নিম্নমানের অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের ‘সন্ত্রাসী’ বললেন ম্যাজিস্ট্রেট

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহালয়ার সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সময় তিনি এই কথা বলেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে মহালয়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে মহালয়া উপলক্ষে শতাধিক যাত্রী বহনকারী নৌকা ডুবে যায়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় ৭১ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। রবিবার নৌকাডুবির তিন বছর পূর্তি ও বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। সে সময় করতোয়া নদীর ঘাটে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান সাংবাদিকদের নদী পার হতে বাধা দেন। ওই সময়ে নদীতে তিন থেকে চারটি নৌকা চলাচল করছিল এবং নৌকায় মোটরসাইকেলও পারাপার হচ্ছিল। কিন্তু সাংবাদিকরা নৌকায় উঠতে চাইলে তিনি বাধা দিয়ে বলেন, মোটরসাইকেল নেওয়া যাবে না।

তখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন– যখন অন্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছে, আমরা কেন নিউজের কাজে যেতে পারবো না? এতে তাহমিদুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনি আল জাজিরা, বিবিসি বাংলা আর আন্তর্জাতিক সাংবাদিক হন আর যেই সাংবাদিক হন, তাতে আমার যায় আসে না। যেতে পারবেন না।’’ তার এমন আচরণ সাংবাদিকরা ক্যামেরায় ধারণ করলে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরো অশালীনভাবে বলেন, ‘‘আপনারা সন্ত্রাসী।’’

শতাধিক লোকের সামনে সাংবাদিকদের এভাবে অপমানিত করার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান বলেন, ‘‘আমরা মহালয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে বাধা প্রদান করেন। ঘাট একবারে ফাঁকা ছিল এবং অন্য ব্যক্তিদেরও যেতে দেখা যায় মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকা পারাপার হতে। ইউএনও নিজেও নৌকায় করে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘাট পারাপার হচ্ছিলেন। তাহলে সাংবাদিকদের যেতে বাধা কেন?’’

বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিক পরিচয় শুনে রেগে গিয়ে বলেন, ‘আল জাজিরার সাংবাদিক হন, আর যেই সাংবাদিক হন, যেতে পারবেন না।’ অন্যরা যেতে পারলে আমরা কেন যেতে পারব না, এ কথা বললে তিনি আমাদের বলেন, ‘আপনারা তো সন্ত্রাসী।’’

এদিকে, ঘটনার পরে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সাংবাদিকরা তাকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দিতে রাজি হননি। উল্টো সাংবাদিকদের বলেন, “কি পারেন করেন।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘‘ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানকে ঘাটের কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’’

ঢাকা/নাঈম/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ