রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারী ২১ শিক্ষকের নাম ও ছবি প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে শাখা ছাত্রদল। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সমাবেশ শেষে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্যারিস রোড থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা এ সময় ‘ফ্যাসিস্টের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বছর গেল পেড়িয়ে, আওয়ামী লীগের দোসর কেন বাহিরে’, ‘সুপারিশ, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য এই ক্যাম্পাসে চলবে না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে প্রতারণা করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ ২১ জন ফ্যাসিবাদের দোসর শিক্ষকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছি; যাতে প্রশাসন দ্রুত তাঁদের প্রচলিত আইনের আওতায় আনতে পারে।’

আওয়ামীপন্থী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের বিচারের আগে রাকসু নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন শাখা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাকিলুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসন একটি একপাক্ষিক জামায়াতি সংগঠনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ এই প্রশাসনের প্রথম কাজ ছিল আওয়ামী দোসরদের বিচার।

ছাত্রদলের করা তালিকায় উল্লেখযোগ্য শিক্ষকেরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, সাবেক সহ–উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম একরামুল্লা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ, সাবেক সহ-উপাচার্য ও রসায়ন বিভাগের বর্তমান সভাপতি চৌধুরী জাকারিয়া, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক বোরাক আলী, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, আইন বিভাগের অধ্যাপক আবু নাসের ওয়াহেদ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট

সারা দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

প্রস্তাবে জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চ গঠনের বিষয়টিও প্রস্তাবে উঠে এসেছে। প্রস্তাবে মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে মামলা দায়েরের আগেই অনেক বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হবে এবং আদালতের ওপর মামলার ক্রমবর্ধমান চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোনো বাণিজ্যিক মামলা বা আবেদনের মূল্যমান ৫০ লাখ টাকা হলে তা বাণিজ্যিক আদালতে বিচার্য হবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার সময়ে সময়ে এই নির্ধারিত মূল্যমান সীমা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।

সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বণিকদের সাধারণ লেনদেন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ চুক্তি, বিতরণ ও লাইসেন্সিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা এবং অংশীদারত্ব চুক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পরিষেবা খাত এবং শেয়ারহোল্ডার বা যৌথ উদ্যোগ–সম্পর্কিত বিরোধকে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারভুক্ত করার কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এর ফলে আধুনিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সম্পর্কিত প্রায় সব ধরনের বিরোধ একটি বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।

বিচারপ্রক্রিয়াকে দ্রুত ও কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করার বিষয়ে প্রস্তাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চূড়ান্ত শুনানি অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব এড়াতে সংক্ষিপ্ত বিচারের সুযোগও প্রস্তাবে রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবে আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, বাণিজ্যিক আপিল আদালত ছয় মাসের মধ্যে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারক ও আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ